বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৩

রাখি এবং পল্লবীর কিছু কথা

valobasar golpoপুকুরের ধারে নারিকেল গাছের কিছু গুঁড়ি পড়ে আছে । উপরের কিছু বালু আর ট্যাপ খাওয়া অবস্থা দেখে বুঝা যাচ্ছে গুঁড়িগুলো অনেকটা শুকিয়ে গেছে । পুকুরটা জাফর চাচার । সে হিসেবে গুঁড়িগুলোও তারই হওয়ার কথা । জাফর চাচা অনেক কিপটা মানুষ । প্রাইমারি স্কুলে বই পত্র সরকার থেকেই ফ্রি দেয়া হয় । কিন্তু খাতা আর কলম কেনার খরচের কথা চিন্তা করে সে তার একমাত্র ছেলেটিকে স্কুলে পড়ায় না । গাছের গুঁড়িগুলো দিয়ে হয়তো খড়ি বানাবে তাই এগুলো শুকাতে দিয়েছে , পাশে নারিকেল গাছের কিছু খড়ি দেখে এটাই বুঝা যাচ্ছে । তাহলে জাফর চাচার কিপটামিকে স্মরণ করে তার কিপটামিতে একটু পানি ঢেলে দেয়া যাক !!

ভাবতে একটু সময় লাগলেও কাজ করতে কখনো সময় নেয় না রাখি ।
বেস্ , গুঁড়িগুলোকে ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দিল । যাও চাচা , এখন তুমি গুড়িগুলো পুকুর থেকে তুলে আবার কয়েকদিন একটু শুকিয়ে তারপর খড়ি বানিও । মনে মনে খুশী হয়ে ভাবতে থাকলো রাখি ।
এই কে রে ওখানে !!

এর আগে মুন্না একবার জাফর চাচার গাছের ডাব পাড়তে গিয়ে ধরা পড়েছিল । বেচারাকে পুরো এক বেলা বাঁশের বাগানে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছিল সে । তাই কথাটি শুনেই ভেঙে চূড়ে দৌড় শুরু করলো রাখি ।
রাখির বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় প্রাইমারির পড়াশুনা শেষ করেছিল সে । বাবা মারা যাওয়ার পর হাই স্কুলের বারান্দা স্পর্শের সৌভাগ্য হয়নি তার । তবে রাখি বাংলা এত সুন্দর করে গুছিয়ে লিখতে পারতো যে , কেউ ওর লিখা দেখলে বিশ্বাসই করবেনা যে ওর পড়াশুনার তরীটি প্রাইমারীর নদীতে ডুবে গেছে । গ্রামের অন্য মেয়েদের তুলনায় অনেক চঞ্চল রাখি । কখনো বিলের ধারে শাক কুড়াতে গিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের সাথে কাদাতে ঢিলা ঢিলি করে , কখনো ছাগল ছানা গুলোর সাথে দৌড়িয়ে , কখনো জাফর চাচার গাছের গুঁড়ি পানিতে ফেলে দেয়ার মত কাজ করেই ওর দিন শেষ হতো । গ্রামের এমন কোন মাটি নেই যেখানে ওর পায়ের স্পর্শ না পরেছে ।

অন্যান্য গ্রামের তুলনায় এই গ্রামটি সব দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে আছে । প্রায় সবগুলো বাড়িই মাটির আর ছনের । গ্রাম বাংলার সত্যিকারের গ্রামের উদাহরন এই গ্রামটি । আর গ্রামের মানুষগুলোও অনেক সরল মনের । সবার মাঝে আন্তরিকতা প্রবল । শহরের মানুষগুলো যেমন একজনের বুকে পারা দিয়ে অন্যজন উপরে উঠতে একটুও দ্বিধা করেনা , এখানে ঠিক তার উল্টো । একবার রাখি হঠাত্‍ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে । গ্রাম অঞ্চলে সাধারণত হাতের কাছে সচরাচর ডাক্তার পাওয়া যায়না । রাখির মা তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে অনেক চিন্তায় পড়ে যায় । কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে একটি ব্যবস্থা হয়ে যায় । শিমুল পাশের গ্রাম থেকে এক ডাক্তারকে নিয়ে আসে ভ্যানে করে । ডাক্তার দেখলে নাকি রোগী অর্ধেক সুস্থ হয়ে যায় । তাই হয়তো ডাক্তারকে ঘরে ঢুকতে দেখেই রাখি শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে ওঠে বসে পড়ে । ডাক্তার ওকে দেখে মৌসুম পরিবর্তনের জ্বর বলে কিছু ঔষধ দিয়ে দেয় । রাখির মা যেন একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে । ডাক্তার সাহেব বিদায় নেয়ার আগে রাখির মায়ের সাথে একটু কথা বলে নেয় ,,
- মাইয়া তো অনেক বড় হইয়া গেছে । ওর মুখে তাকাইয়া এইডা ভাবছিলা কোনদিন ?
~ না ডাক্তার সাব । বাপ মরা মাইয়া তো , দূরে দিলে আমিও একা হইয়া যামু তাই এমন কিছু অহনো ভাবি নাই ।
- মাইয়া তো সারাজীবন কাছে রাইখা দিবার পারবানা । ওরে নিয়া ভাইবা দেইখো ।
~ জে আইচ্ছা , আপনের কথা মনে থাকবো ।
ডাক্তার চলে যাবার পর রাখির মা রাখির পাশে গিয়ে বসে । রাখির বাবা মারা গিয়েছে প্রায় তিন বছর তিন বছর চলছে । দিনগুলো কিভাবে যে এত তাড়াতাড়ি যায় ভাবাই যায়না । রাখির মা রাখির দিকে খেয়াল করে দেখে , হালকা কোকড়ানো চুল , শ্যাম বর্ণের মুখ আর হালকা ভাড়ি দৈহিক গড়নের মেয়েটি সত্যিই বড় হয়ে গেছে । নিজেকে একা থাকতে হবে বলে মেয়েকে নিয়ে কখনো ভেবে দেখেনি সে । রাখির সমবয়সী সব মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে । অথচ রাখির বিয়ে নিয়ে সে কখনো ভেবেই দেখেনি । ভাবতে ভাবতেই রাখি ওর মাকে বলে ওঠে ,,
- মা , তুই কি ভাবতাছস ?
~ কিছু না মা । তোর অহন কেমুন লাগে ?
- তুই আমারে নিয়া ভাবিস না মা , আমি মেলা ভালা আছি ।
মায়ের দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য শরীরে জ্বর রেখেই নির্দ্বিধায় বলে ফেলে সে ভাল আছে । কিন্তু সন্তানের কোন কিছুই মায়ের চোখকে ফাঁকি দিতে পারেনা । রাখির মা তার কথার চালাকি ধরে ফেলে রাখির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে ।

মাস খানেক পর রাখির মা সবদিক ভেবে রাখিকে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । যুবতী মেয়ে , কখন কোন অঘটন যদি ঘটে যায় সেই বিপদের চিন্তা সে আর করতে চাচ্ছেনা । তাই সে পাশের গ্রামের ডাক্তারের সাথে তার মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলে । ডাক্তার তার নিজের ভাইয়ের ছেলের সাথে রাখির বিয়ের প্রস্তাব দেয় ।

ছেলেটির নাম মনির । পড়াশুনা প্রাইমারি পর্যন্ত । বয়সে রাখির থেকে বড়জোর চার বছরের বড় হবে । এই বয়সের ছেলেরা খুব সঙ্গ প্রিয় হয় । মনিরও তাই বন্ধুদের সঙ্গ নিয়ে পড়ে থাকতো । সঙ্গ দোষেই প্রাইমারির পর পড়াশুনা আর এগুতে পারেনি । আর এই সঙ্গ দূর করার জন্যই মনিরের বাবা মা মনিরকে বিয়ে করিয়ে দিতে চাইছে । বিয়ে করলে নাকি সব ছেলের মধ্যেই একটা দায়িত্ব বোধ আসে । আর তখন ছেলেরা সংসারি হয়ে যায় । তাই সঙ্গ দূর করার জন্য এটাই উওম পথ ।

দিনটি ছিল শুক্রবার । রাখিদের বাড়িতে কোন আয়োজন করা হয়নি । আর আয়োজন করার মত কোন মানুষ নেই ওদের । পাড়া প্রতিবেশীরা মিলে যা আয়োজন করতে চেয়েছিল তা বর পক্ষ থেকেই নিষেধ করা হয়েছে । শুধু বরের বাড়িতে আয়োজন হবে । বর পক্ষ থেকে কয়েকজন মুরুব্বী এসে রাখিকে উঠিয়ে নিয়ে যায় । আর বিয়েটা হয় বরের বাড়িতেই । মুসলমানদের বিয়েতে সাধারণত এমনটা হয়না । কিন্তু রাখিদের অবস্থার কথা ভেবেই বর পক্ষের এই ব্যবস্থা ।

রাখিকে বিয়ে দেয়া হয়েছে আজ প্রায় পাঁচ মাস হতে চললো । রাখির মা একা বাড়িতে মন বসেনা । মেয়ের কথা মনে করে শুধু কাঁদে । শুনেছে রাখি নাকি জামাই বাড়িতে অনেক ভাল আছে , এটা শুনেই রাখির মা নিজেই নিজেকে স্বান্তনা দেয় । কিন্তু উঠানে রাখা ঐ ছোট জালটি যে এখন আর কেউ বিলে নামায় না , ঘরের সামনে লাগানো গাঁদা ফুল গাছগুলো যে জঙ্গলের মত হয়ে গেছে , এগুলো ভাবতেই রাখির মা আবার কেঁদে ওঠে । রাখির মায়ের প্রতিটা দিনই এভাবে কান্না আর স্বান্তনার মধ্যে দিয়ে পার হয় । এই দিকে রাখির অবস্থাও ওর মায়ের মতই । এমন চঞ্চল আর মুক্ত মনের মেয়েটি আজ নিয়তির এক বাস্তব নিয়মে বন্দী হয়ে গেছে । গ্রামের চারপাশের মাটিগুলো এখন আর ওর স্পর্শ পায়না । মা কে এর মধ্যে একবার দেখেছিল । ওর মা অনেক ভেঙ্গে পড়েছে । রাখি তার বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সংসারী হতে চেষ্টা করছে । বাজারে মনিরদের একটি টিনের দোকান ছিল । গ্রামে যেমন কয়েকজন মানুষ থাকে যাদেরকে গ্রামের সবাই মানে , মনিরের বাবা তাদের মতই একজন । শুধু সঙ্গ দোষের কারনেই মনির আজ সবার কাছে হালকা ছেলে হয়ে আছে । বিয়ের পর ওদের দোকানেই ওর বাবা ওকে হিসাব নিকাশ দেখার দায়িত্ব দেয় । বিয়ের পর মনিরও অনেক সংসারি হয়ে গেছে । বন্ধুদের আড্ডায় গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করেনা । হয়তো উপর ওয়ালার ইশারায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলেই ওর এই পরিবর্তন ।

এতদিনে মনির আর রাখির সংসার পুরোপুরি গুছিয়ে ওঠেছে । প্রায় দুই বছর চলছে ওদের দাম্পত্য জীবনের । একটা সাধারন গ্রামের সংসারে যা যা দরকার তার কোন কিছুর যেন অভাব নেই ওদের সংসারে । শুধু একটাই অপূর্ণতা , ওদের কোন সন্তান হচ্ছিল না । আর এর জন্য ওদের মনে অনেক কষ্ট ছিল । মনিরের বাবা , মা সহ আশে পাশের অনেক মানুষজন কানাকানি করতো এটা নিয়ে । আর এ ব্যাপারে সব দোষ দেয়া হতো রাখিকে । রাখি সব বুঝতে পারলেও ওর কিছু করার ছিলনা । স্বামীর কাছে থেকে কোনদিন এ ব্যাপারে কোন বিরক্তিবোধক কোন কথা শুনেনি । স্বামী তার পক্ষে আছে , এটা ভেবেই রাখি চারপাশের মানুষজনের কানাকানিকে গুরুত্ব দিতো না ।
কিন্তু রাখিদের মত অসহায় মেয়েদের কপালের সহায় কি সব সময় উপর ওয়ালা হয় ? সন্তানের অপূর্ণতা হঠাত্‍ মনিরের মনকেও নাড়া দেয় । সে আবার বন্ধুদের আড্ডায় মেতে ওঠতে থাকে । দোকানে ঠিকভাবে যেত না । রাতে বাসায়ও ফিরতো না মাঝে মাঝে । কেউ হয়তো মাথায় কোন কুবুদ্ধি চাপিয়ে দিয়েছে মনিরের । এক রাতে নেশা করে এসে রাখিকে অনেক মারধোর করে মনির । রাতে কান্নাটির আওয়াজ পেয়ে মনিরের বাবা মা ওঠে আসে । রাখিকে মারতে দেখে মনিরকে বকা ঝকা দেয় । মনিরও ওর বাবা মা কে অনেক বকা ঝকা করে । বকা ঝকা করতে করতে একসময় মনির ঘুমিয়ে যায় । এদিকে রাখির মা কে খুব মনে পড়ে । পরের বাড়ি না আসলে কি হতো ? যেভাবে ছিলাম ঐভাবে কি দিনগুলো পার করে দিতে পারতাম না ? এগুলো ভেবে ভেবে নিজের বাবার উপর অনেক রাগ করে রাখি । এত আগেই তার মারা যেতে হবে কেন ? সে থাকলে হয়তো তাকে পরের বাড়ি আসতে দিতো না , গ্রামের এদিক ওদিক ঘুরে ঘুরে নিজের বাড়িতেই সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারতো । বিছানায় শুয়ে এগুলো ভেবে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতেই সারা রাত পার হয়ে যায় রাখির ।

এখন মনির অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে । এভাবে মাঝে মাঝেই রাতে নেশা করে এসে যৌতুকের কথা বলে রাখিকে মারধোর করে । একরাতে মনির যৌতুকের কথা বলে বাঁশের ফাল্টা দিয়ে অনেক মারে রাখিকে । মনিরের বাবা গিয়ে না ফেরালে হয়তো মেয়েটাকে ঐদিন আধ মরা করে ছেড়ে দিত । ঐ রাতের মার খেয়ে রাখি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে । আর এই খবরটা রাখির মা পেয়ে যায় । রাখিদের বাড়ি থেকে মনিরদের বাড়ি পর্যন্ত পুরো রাস্তা কাঁদতে কাঁদতে আসে রাখির মা । মেয়ের এই অবস্থা দেখে রাখির শ্বশুর বাড়ির মানুষদের কাছে অনেক লজ্জিত হয় রাখির মা । কান্না ভেজা চোখে মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে জিজ্ঞেস করে ,,
- তরে মেলা মারছে মা ? তর মেলা কষ্ট অইছে না মা ?
রাখির মায়ের চোখের অসহায় আর কষ্টের পানিগুলো রাখির কপালে পড়ছিল । রাখি একটু একটু হেসে উওর দিল ,,
~ তুই আমারে নিয়া ভাবিস না মা , আমি মেলা ভালা আছি ।
বিয়ের আগে যখন রাখি অসুস্থ হয়েছিল তখন মায়ের দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য ঠিক একই কথা বলেছিল রাখি । কিন্তু মায়ের চোখ কি কখনো সন্তানের অনুভূতিকে এড়িয়ে যেতে পারে ? রাখির মা ঠিকই বুঝতে পেরেছিল যে রাখি তাকে মিথ্যা স্বান্তনা দেয়ার জন্য এগুলো বলছে । বাবা হারা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে অনেক কান্না কাটি করে রাখির মা ।

মনির এখন শহরে একটা দোকান নিয়েছে । মা মারা যাওয়ার পর নিজের গ্রাম ছেড়ে একটু শহরের দিকে এসে দোকান দিয়েছে । মনিরকে এখন অনেকটা সাহেব সাহেব দেখা যায় । প্যান্ট , শার্ট পড়ে পরিপাটি হয়ে থাকে । ইনকামও ভাল করে । এখানে একটি বাসা নিয়েছে । গ্রামের বাড়িতে মনিরের অন্য ভাইদের সাথে থাকে মনিরের বাবা । ভাল ব্যবসা করার জন্য শরীকদের ছেড়ে শহরের দিকে এসেছে সে ।

গ্রামে বাবার থাকার ঘরটি ভাঙ্গা ভাঙ্গা অবস্থা । পল্লবী বেশ কিছুদিন যাবত জোরাজুরি করছে ঘরটি মেরামত করে দেয়ার জন্য । কিন্তু পল্লবীর কথা এক কানে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দেয় মনির । কিন্তু গতকালের ঝড়ে নাকি ঘরটির এক পাশ পড়ে গিয়েছে । অন্য ছেলেদের মধ্যে খায় বলে বাবার ভাঙ্গা ঘর নিয়ে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই । তাই বাধ্য হয়েই ঘরটি ঠিক করতে যেতে হচ্ছে ।

ঘরটির সবকিছু বাইরে বের করা হচ্ছে । পল্লবীও সাথে সাথে কাজ করছে । ঘরটি যে পাশে ভেঙ্গে পড়েছে সে পাশে সিলিংটাও পড়ে গেছে । হঠাত্ সিলিং এর এক পাশে পল্লবী ছোট একটি প্লাস্টিকের বক্স দেখতে পায় । ভেতরে কিছু একটা আছে বুঝা যাচ্ছে । বক্সটি খুলতেই উপরে মলাট লাগানো একটি ছোট বাংলা খাতা দেখতে পায় সে । খাতাটা খুলতেই ভিতরে এক গাদা লিখা দেখতে পায় । লিখাগুলো মোটামুটি সুন্দর কিন্তু অগোছালো । লিখাগুলোতে কোন যত্নের স্পর্শ ছিলনা । বুঝা যাচ্ছে , অনেক গাদা গাদি করে এক বসাতে কেউ লিখাগুলো লিখেছে ।

বাইরে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে । আর বৃষ্টি হলেই আকাশে বিদ্যুত্‍ চমকিয়ে বাজ পড়ে । টিনের চালের বৃষ্টির ঝুম ঝুম শব্দ বেশ ভাল লাগে পল্লবীর । কিন্তু বাজ পড়ার শব্দকে অনেক ভয় পায় সে । তাই বৃষ্টির সময় সে মনিরের পাশে গিয়ে বসে থাকে । কিন্তু আজ রাতে মনির পাশে নেই । বৃষ্টিও হচ্ছে তুমুল বেগে । আকাশের বাজও পড়ছে বিকট শব্দে । কিন্তু পল্লবীর সেদিকে কোন খেয়ালই নেই । বক্সে পাওয়া খাতাটি পড়ে সে কোথায় হারিয়ে গেছে তা সে নিজেও জানেনা । লিখাগুলো কোথাও কোথাও বুঝতে কষ্ট হলেও একজন মেয়ে হিসেবে রাখির অনুভূতিগুলোকে সে ঠিকই অনুধাবন করতে পেরেছিল । লিখাগুলোর মাঝে হারিয়ে চারপাশের পরিবেশের প্রতি তার কোন খেয়ালই নেই ।
আম্মু ! আম্মু !!
মেয়ের ডাকে যেন নিজের ঘরে নতুন করে জ্ঞান ফিরে পায় সে । চোখের পানিগুলো মুছে মেয়েকে ঘুম পাড়াতে চলে যায় । মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে মনিরের চেহারাকে মনে করে সে । সুন্দর চেহারা আর সাহেবী ভাবের ভিতরে এত কিছু লুকিয়ে আছে ? পল্লবীর সাথেও মাঝে মাঝে ঝগড়া করে মনির । তবে রাখির সাথে যেমন সন্তান আর যৌতুকের জন্য ঝগড়া করতো আর মারধোর করতো তার কোনটাই সে পল্লবীর সাথে পারেনা । পারার কথাও না , কারন বিয়ের সময় পল্লবীর পরিবার থেকে বেশ কিছু টাকা আর আসবাব পত্র দেয়া হয়েছে । পল্লবীর পারিবারিক অবস্থা ভাল না হলেও রাখির পারিবারিক অবস্থার তুলনায় বেশ ভাল ছিল । পল্লবী এস এস সি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে । ওদের বাড়ি দূরে হওয়াতে মনিরের এই মুখোশ সম্পর্কে আগে অবগত হতে পারেনি । মূলত গ্রামে মনিরের বাবার মোটামুটি নাম ডাক শুনেই পল্লবীর বাবা মা এখানে ওকে বিয়ে দেয় । এখন ওর চার বছর বয়সী একটি মেয়েও আছে । যৌতুক না দিতে পারলে আর মেয়েটি না থাকলে হয়তো একই অবস্থার সম্মুখীন হতে হতো পল্লবীরও ।

খাতার লিখাগুলোর কথা মনিরকে কোনদিন বলেনি পল্লবী । খাতায় হয়তো আরো কিছু লিখার কথা ছিল , কিন্তু সুযোগের অভাবে হয়তো রাখি সেগুলো লিখতে পারেনি । রাখির অসমাপ্ত লিখা রাখির শেষ পরিণতিকেও অসমাপ্ত রেখে গেছে । তাই সবার আড়ালে পল্লবী রাখিদের গ্রামে গিয়েছিল রাখি আর রাখির মায়ের খোঁজ করার জন্য । কিন্তু সেখানে বেশ কয়েকজনের কাছে থেকে জানতে পারে , রাখি আর রাখির মা প্রায় সাত বছর আগে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে । কোথায় গেছে সেটা কেউ বলতে পারেনি । পল্লবীকে গ্রামের প্রায় সবাই চিনতো । তাই সে ইচ্ছা করেই মনির আর রাখির সম্পর্কে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করেনি ।

" জীবনে সঙ্গীর প্রয়োজন অপরিসীম , কিন্তু এমন সঙ্গী চাই না যে জীবনকে দুর্বিষহ করে দিবে । " " উইলিয়াম মরিস " এর এই লিখাটি কোথাও পড়েছিল পল্লবী । হয়তো রাখিও পড়েছিল । আর তাই হয়তো মনিরের মত ছেলের জীবন থেকে নিজেই বিদায় নিয়ে চলে গেছে , নয়তো মনিরের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে সব ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে । পল্লবী মোটামুটি শিক্ষিত মেয়ে । জ্ঞানের পরিধিও ভাল । তাই মনের ভেতর অসংখ্য ঘৃণা আর চাপা কষ্ট নিয়েও , মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আর সংসারের মায়ার টানে , মনিরের লুকানো মুখোশকে নিজের ভেতর মুখোশ করে রেখেই মনিরের মত ছেলের সাথে সংসার করে যাচ্ছে পল্লবী ।

কিছু কথা : মনিরের মত ছেলেদের বিভিন্ন রুপ আমাদের আশেপাশে বিদ্যমান । তাদের এসব রুপের কারনে অনেক সহজ সরল মেয়েদের জীবন অতি সহজেই দুবির্ষহ হয়ে ওঠে । এদের মত ছেলেদের হাত থেকে রক্ষার জন্য অনেকে জীবন থেকে পালিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করে , আবার অনেকে নিজের স্বপ্নকে উপড়ে ফেলে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সংসার জীবন চালিয়ে যায় । এদের মধ্যে একটি রুপ আমার আনাড়ি হাতে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি গল্পটিতে ।

না দেখা ভালোবাসা

ভালোবাসাসময় সকাল নয়টা। অর্কের ফোনে বেজে উঠল পাইরেটস অব দ্যা ক্যারিবিয়ান মুভির রিংটোন। ঘুম ভেঙে গেল তার। রিংটোন টা তার খুব পছন্দের হলেও এই মুহুর্তে অসহ্য লাগছে। বালিশের আশেপাশে হাতিয়ে ফোনটা খুঁজে বের করে চোখের সামনে ধরল। রাতুল ফোন দিয়েছে। কোন রকমে রিসিভ করে ঘুম জড়িত কন্ঠে বলল,
- হ্যালো
- কি রে ক্লাস করবি না?
- না।
- কেন?
- কারন ক্লাসের চেয়েও ঘুমটা আমার কাছে বেশি ইম্পোর্টেন্ট।
- ঠিক আছে। ঘুমা।
এই বলে ফোনটা কেটে দিল রাতুল। অর্ক আরো কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করতে লাগল। তারপর ভাবল ফেসবুকে ঢুকা যাক। ফেসবুকে ঢুকার পর দেখতে পেল একটি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। কত রিকোয়েস্টই তো আসে। এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল অর্ক। কিন্তু নামটায় চোখ আটকে গেল। অর্পা। অর্পা!!! নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না। তাড়াতাড়ি প্রোফাইল পিকচারে ক্লিক করল। হ্যাঁ। এটা তো অর্পাই। সেই অর্পা যাকে সে পাঁচ বছর আগে শেষ দেখেছিল স্কুল জীবনে। সেই অর্পা যাকে সে ক্লাস নাইন থেকে ভালোবাসে কিন্তু কথনোই মুখ ফোঁটে বলা হয় নি। পাঁচ বছরে বেশ ভালো একটা পরিবর্তন এসেছে ওর মাঝে। খুকি খুকি ভাবটা আর নেই চেহারায়। অনেকক্ষন ধরে ছবিটার দিকে তাকিয়ে রইল অর্ক। তারপর মিউচুয়াল ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করল। স্কুল লাইফের পুরোনো কিছু বন্ধু বান্ধবী। তার মানে আইডি এটা ফেক না। রিয়েল। কেমন যেন লাগছে তার। অদ্ভুত এক অনুভূতি। এই কয়েক বছরে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল অর্পাকে। কিন্তু এত দিনের লুকিয়ে থাকা অনুভূতি গুলো যেন আজ হঠাত্‍ করেই এক লাফে বেরিয়ে এসেছে। কি করবে বুঝতে পারছে না ও। রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করবে নাকি ঝুলিয়ে রাখবে? অর্পা তার ফ্রেন্ড হতে চাচ্ছে এটা দেখতেও ভালো লাগছে। একসেপ্ট করলে তো আর দেখা যাবে না এটা। Snigdha Orpa wants to be your friend লেখাটা দেখতেই ভালো লাগছে। কিছুক্ষণ ভাবনা চিন্তার পর শেষ পর্যন্ত একসেপ্ট করে ফেলল।

একটা মেসেজ দিবো কি? মনে মনে ভাবল অর্ক। তারপরই আবার বলল, না থাক। এত তাড়াতাড়ি দেয়ার দরকার নেই। কি না কি মনে করবে।
হাত মুখ ধুয়ে নাস্তা করে বাইরে বের হয়ে এল অর্ক। মেজাজটাই আজ অন্যরকম ভালো। দেরীতে হলেও পরের ক্লাসগুলো করে ফেলল। আজ এই বোরিং ক্লাসগুলোকেও বোরিং মনে হচ্ছে না। একসময় ছুটি হল। তারপর বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরল।

রাত সাড়ে নয়টা। ফেসবুকে লগ ইন করল অর্ক। অর্পার টাইমলাইনটা একবার চেক করল। কয়েকটা স্ট্যাটাস আর ছবি দেখতে পেল। ইচ্ছা করছে ওর সবগুলো ছবিতে একহাজারটা লাইক দিতে। কিন্তু তা তো আর সম্ভব না।একটা মেসেজ না দিলে মনটা শান্ত হচ্ছে না। কি মেসেজ দেয়া যায়? ইচ্ছা করছে প্রথমেই বলে দিতে, 'আই লাভ ইউ। কিন্তু এটা করা আর নিজেকে বলদ প্রমানিত করা একই কথা। অনেক ভাবনা চিন্তার পর ছোট্ট একটা মেসেজ দিল, 'কেমন আছ?' দেয়ার পরই মাথায় চিন্তা এল, ও রিপ্লাই দেবে তো? যদি না দেয়? কিন্তু তার ধারণাকে ভুল প্রমানিত করে আধঘন্টা পরই অনলাইনে অর্পাকে দেখা গেল এবং রিপ্লাই আসল, ভালো। তুমি কেমন আছ? এভাবেই কনভার্সেশনটা শুরু হল। প্রতিদিনই চ্যাট হতো ওদের।একফাঁকে ও জেনেও নিল অর্পা এখনো সিঙ্গেল। অর্ক ওকে প্রপোজ করার চিন্তাটা একাধিক বার মাথায় এনেও আবার সরিয়ে দিয়েছে। যদি রাজি না হয়? যদি ব্লক মেরে দেয়! তারচেয়ে যেমন আছে তেমনি চলতে থাক। অনেক বিষয় নিয়ে কথা হত ওদের। নিজেদের প্রিয় বিষয়, কাজ, কবিতা, গান, লেখক, রাজনীতি, ধর্ম কোনটাই বাদ না। অর্ক অবাক হয়ে লক্ষ্য করল এই মেয়েটি স্কুলে থাকতে বেশ লাজুক ছিল। কিন্তু এখন তার সাথে বেশ সাবলীল ভাবেই ফেসবুকে আলাপচারিতা করে। দুজনের বন্ধুত্বটা বেশ গাঢ় হচ্ছিল।
অনেক রাত পর্যন্ত চ্যাট করায় ঘুমটা বেশ দেরিতে ভাঙলো ওর। প্রতিদিনের মত আজকেও ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে ঢ়ুকল অর্ক। গুড মর্নিং দিতে হবে অর্পাকে। কিন্ত মেসেজ দিত গিয়ে অবাক হয়ে লক্ষ করল, অর্পার আগের মেসেজগুলো একটিও দেখা যাচ্ছে না এবং নামটিও কালো হয়ে গেছে। মেসেজও দেয়া যাচ্ছে না। যার অর্থ খুবই পরিষ্কার। ফেসবুক থেকে অর্পার আইডি ব্লক করে দেয়া হয়েছে। ক্ষনিকের জন্য হতভম্ব হয়ে গেল অর্ক। কি করবে বুঝতে পারছে না। মার্ক জোকারবার্গকে ইচ্ছা মত কিছুক্ষণ গালিগালাজ করল। অর্পার মোবাইল নাম্বারটাও রাখে নি যে যোগাযোগ করবে। নিজেকে খুবই একা মনে হতে লাগল। এতদিন শুন্যস্থানটা অনেকটাই পূরণ হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার একা হয়ে গেল। সারাটা দিন মনমরা হয়েই পার করল। রাতে খেতেও পারল না ঠিক মত। চুপচাপ বিছানায় শুয়ে ভাবতে লাগল, আচ্ছা অর্পা তো চেষ্টা করলে এই আইডি টা ঠিক করতে পারে। না পারলে আরেকটা নতুন আইডি খুলতে পারে। তাহলে খুলছে না কেন? নাকি আইডি ব্লকের সাথে সাথে অর্পাও এই ফেসবুক দুনিয়া থেকে একেবার চলে গেল? এসব ভাবতে ভাবতেই একসময় ঘুমিয়ে পড়ল। তারপর দিন অনেকবার ফেসবুকে ঢ়ুকল অর্ক। অর্পার আইডি ঠিক হল কি না অথবা নতুন আইডি খুললো কিনা। কিন্তু তাকে হতাশ করে দিয়ে সেরকম কিছুই হল না। এখন ফেসবুকে থাকতেও তার ভালো লাগেনা।

আজ শুক্রবার। অর্পার আইডি ব্লক হয়েছে আজ সাত দিন হয়। এই সাত দিনে তার সাথে একবারও যোগাযোগ হয়নি অর্পার। মনে মনে নিজের ভাগ্যকে দোষ দিল অর্ক। তার কপালটাই এমন। কিছু পাওয়ার আগেই হারিয়ে যায়। ধ্যাত। মোবাইলটা হাতে নিল। ফেসবুকে ঢুকতে ইচ্ছা করছে না। তাও একবার ঢুঁ মেরে আসা যাক। অবশেষে ঢুকলো এবং ঢুকার সাথে সাথেই মুখে আনন্দের একটা হাসি ফুটে উঠল। হ্যাঁ। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টই এসেছে নতুন আইডি থেকে। একই নাম, একই ব্যাক্তি। সাথে একটা মেসেজও আছে, I am soo sorry. আগের বারের থেকেও আরো বেশি ভালো লাগছে অর্কের। এবার আর একসেপ্ট করতে দেরি করল না। মনে মনে সিন্ধান্তটা নিয়েই ফেলল সে। এবার আর হারিয়ে যেতে দেবে না অর্পাকে। হারিয়ে যাতে না যায় সে ব্যবস্থাই করবে। মনের কথাটা বলেই ফেলবে এবার। যা হয় হোক। রাজি হোক বা না হোক তাতে কিছু যায় আসে না। ঝুঁকিটা সে নিবেই। কে যেন বলেছিলেন, ঝুকি না নিলে কোন কিছুতেই সফল হওয়া যায় না। লোকটার নামটা ঠিক মনে পড়ছে না। তবে তাতে অর্কের কিছু যায় আসে না। নিজের ভাগ্যটাকে আরেকবার পরীক্ষা করার সুযোগটা হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। যা থাক কপালে।

ট্যুইটিং ব্রা, খুললেই হবে জমা

বাজার আসছে উচ্চ প্রযুক্তির ট্যুইটিং ব্রা। নিয়ে আসছে নির্মাতা সংস্থা নেসলে ফিটনেস। ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে এই নয়া বক্ষ বন্ধনী সম্বন্ধে পরিচিতি করাচ্ছে নেসলের বিজ্ঞাপন নির্মাতা সংস্থা অগিলভি আথেন্স। গোলাপি রঙের এই অভিনব ব্রা-এর এই অদ্ভুত নামকরণ কেন? নির্মাতা সংস্থা জানাচ্ছে, যিনি এই বক্ষ বন্ধনী ব্যবহার করবেন তিনি এটি খোলামাত্র অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্যুইট হয়ে যাবে।  অর্থাৎ অন্তর্বাসটি খুললেই ট্যুইট করা যাবে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই বিশেষ বক্ষ বন্ধনীর হুকের নিচে থাকবে খুবই ছোট্ট একটি অত্যাধুনিক স্যুইচ বা সেন্সর। কোনও মহিলা যতবার বক্ষ বন্ধনীটি খুলবেন ততবার হুকটি খোলা মাত্র একটি সঙ্কেত পৌঁছে যাবে ব্যবহারকারীর মোবাইল ফোনে। মোবাইল থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সঙ্কেত চলে যাবে সার্ভারে। সার্ভার তখন ওই মহিলার হয়ে ট্যুইট করে দেবে। ট্যুইটে কোনও কথা বা বাক্য না থাকলেও থাকবে সবার বোঝার মতো বিশেষ সঙ্কেত। এজন্য বক্ষ বন্ধনীর হুকের নিচে সেন্সরটি সব সময় সক্রিয় থাকবে। মোবাইল সুইচ অন রাখতে হবে। একইসঙ্গে ট্যুইটারের অ্যাকাউন্টটিও অন রাখতে হবে। তবেই সব সময় সুষ্ঠুভাবে অটোমেটিক ট্যুইট হবে। অবশ্য তিনটি জিনিসকে অন রাখা অভ্যেসের ব্যাপার। এটা কঠিন কোনও কাজ নয়।
কিন্তু কেন এই অভিনব উদ্যোগ? সংস্থাটি জানিয়েছে, বিশ্বের সব বয়সের মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানার বেড়েই চলেছে। কয়েক বছর পরে এই রোগ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে মহামারীর আকার নিতে চলেছে। তাই ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের জনবহুল দেশে মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতেই এই ট্যুইটিং ব্রা নিয়ে আসা হচ্ছে। কারণ বেশিরভাগ মহিলাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিজেদের স্তনের চেক আপ করান না। ফলে স্তনের মধ্যে রক্ত সংবহন, লাম্প, ব্যথা ইত্যাদি নিয়ে তাঁদের কোনও হেলদোল থাকে না। সমস্য জটিল হলে তখন টনক নড়ে। কারণ কেউ তাঁদের চেক আপ করানোর ব্যাপারে স্মরণ করান না। নিজেদেরও মনে থাকে না।
এক্ষেত্রে যখনই এই বক্ষ বন্ধনী ব্যবহারকারী নিজের অন্তর্বাসটি খুলবেন তখনই ট্যুইট হয়ে যাবে। ফলে ট্যুইট হওয়া মাত্র ওই ভদ্রমহিলার মনে পড়বে তাঁকে এবার ব্রেস্ট চেক আপ করাতে হবে। এভাবে বার বার ট্যুইট হলে বার বার রিমাইন্ডার যাবে তাঁর কাছে। ফলে তিনি চেক আপের ব্যাপারটি অবহেলা করে ফেলে রাখতে পারবেন না।  নেসলে ফিটনেস ও অগলভি আরও জানিয়েছে, বিশ্বে এই ধরনের অন্তর্বাস এই প্রথম যেটি আপনাকে বার বার মনে করাবে মাসে একবার করে অন্তত আপনার স্তন পরীক্ষার সময় এসে গিয়েছে। স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করার জন্যই এই দাওয়াই। এতে ক্রেতারা ভালই সাড়া দেবে বলে মনে করছেন হাই টেক ব্রা-এর নির্মাতারা।

শরীরের জন্য পুরুষ খুঁজি না

মেয়েদের সেক্সআমি বহুগামিতায় বিশ্বাস করি। মানুষ মাত্রেই তাই, তবে এভাবে কেউ বলে তো না-ই, ভাবেও না। এমনটা ভাবলে সমাজ নাকি রসাতলে যাবে! আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই বড় হয়েছি আমি। শিক্ষিত বাঙালি পরিবার। তবে ছোট থেকেই খুব রোম্যান্টিক ছিলাম আমি। আমার মাসির মেয়ের সঙ্গে ছুটিতে দেখা হলেই দুপুরের গোপনীয়তায় আমরা বর-বউ খেলতাম, আর আমি কোনও দিন বর হতে চাইনি। কতই বা বয়স তখন আমার? লেখাপড়া একটু যখন বাড়তে থাকল তখন লুকিয়ে ‘রাত ভোর বৃষ্টি’ পড়েছিলাম। নিজে কতটুকুই বা বুঝি তখন? কিছুই না। কিন্তু লুকিয়ে যৌন দৃশ্য দেখা, পড়া সবই চলত। আজকের স্কুলের ছেলেমেয়েদের কাছে যৌনতার শিরশিরানি, দৃশ্য যত সহজ ব্যাপার, আমাদের সময় তা ছিল না। ইন্টারনেট বস্তুটি তখনও আমাদের শৈশবকে মাতিয়ে রাখেনি।

বড় হলাম। আমার বড় হওয়া মানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা ফেলা। এর মাঝে যে সব প্রেম এল সেগুলো সবই চিঠি লেখা, সঙ্গে থাকা, লুকিয়ে দেখার মধ্যে দিয়ে পেরিয়ে গেল। সেখানে অদ্ভুতভাবে যৌনতা ছিল না। এটা আজ আমার কাছেও খুব বিস্ময়কর! আমার প্রথম প্রেমিক উচ্চমাধ্যমিকের সময় আমার বুক ছুঁতে চাইলে আমি এড়িয়ে যেতাম। খুব যে ছোট ছিলাম, এমনটাও তো নয়। আসলে তখন বড়সড় চেহারার আমি আমার শরীরটাকেই ভালবাসতে শিখিনি। উল্টে ফিজিক্যাল এডুকেশন ক্লাসে টি-শার্ট পড়লে নিজের বুক নিয়ে আমি বেজায় লজ্জা পেতাম।

বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিল আমার প্রান্তর। প্রথম গালি দিতে শিখলাম। আমার উচ্ছল শরীরের রক্তিম নেশার সঙ্গে বাইরের নেশার আবেশি টান মন মজাল। ওড়না দিয়ে আর আড়াল করলাম না নিজের অপার ঐশ্বর্য। তখনও কিন্তু নিজের চাওয়াগুলোকে বুঝতে পারিনি আমি, আজ যেমন পারি। তাই ভাল রেজাল্ট, ভাল চাকরির পর, ভাল প্রেমের কমিটমেন্টে বিয়ে করলাম। এই বিয়েই আমায় নিজেকে চিনিয়ে দিল।

বিয়ের পরেও দেখলাম অন্য, বন্ধু পুরুষ নিয়ে ভাবছি আমি। এসএমএস, দেখা, মন, শরীর। আমার দিকে চোখ থামাল সুপর্ণা। বলল ‘তোমার একটু বিদঘুটে লাগবে আমায় জানো। শিক্ষা আর রুচির আড়ালে তুমি হয়তো আমায় নষ্ট মেয়ে ভাববে না, তবুও’- আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে ওর খালি গ্লাসে ওর পছন্দের পানীয় ঢালতে ঢালতে বললাম-‘যা ইচ্ছে করছে তাই বলো, আগে পরে নিয়ে ভাবার মেয়ে তো তুমি নও’।

‘বিয়ের পর পর-ই জানো আমার পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে প্রথম আমি শরীর খেলি। আর সবচেয়ে অদ্ভুত কী জান? সেই রাতেই আমি আমার স্বামীর সঙ্গেও মিলিত হই। দু’ ক্ষেত্রের রমণ-ই আমার রমণীয়। যদি বলো, বিয়ের পর পুরনো প্রেম তীব্র হয়, তাই এমন, আসলে তা কিন্তু নয়। আমার পুরুষ বন্ধুর সংখ্যাই বেশি, খুব সহজেই বন্ধুতাও এসে যায়। সেই পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে কেবল মনের মেশা থাকবে, এটা আমি কখনও মানতে পারি না। পছন্দের মানুষ, অথচ তাকে ছোঁওয়া যাবে না! এ আমার হবে না, এটা ক্রমশ বুঝতে পারি। আর খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রথাগত বিয়েটাও এরপর-ই আমার ভেঙে যায়। কারণ আমার স্বামীকে কোনওদিন কোনও মিথ্যা বলতে চাইনি আমি।

আমার চেহারা, ব্যক্তিত্বের টানে বেশিরভাগ পুরুষ-ই আমার কাছে চলে আসে এটা জানি আমি। কিন্তু যে কোনও পুরুষকেই তো আমার ভাললাগে না। অল্প কয়েকজন কাছের বন্ধুদের সঙ্গেই কেবল আমার মন-শরীর, দুয়েরই আলিঙ্গন। বেশ কয়েকবছর হল কর্মসূত্রেই আমার শৌনকের সঙ্গে আলাপ হয়। খুব মেলে ওর সঙ্গে আমার, প্রচুর আড্ডা বসাই আমরা নিজেদের খেয়ালখুশি। খেলা থেকে বই, কত কী চলে আসে। তো এরকম একটা ভাললাগার, আনন্দের সঙ্গ-এ শরীরকে কি আলাদা করা যায়? কিন্তু শৌনক-ই আমার একমাত্র বন্ধু তাও তো নয়! শৌনকের সঙ্গে আদর খেলার সময় যদি অয়ন এসএমএস-এ আমার সঙ্গে আমাদের রাতনেশার রূপকথা শোনায়, সেখানে ক্ষতি কোথায়? আমার ভাবনা-তো দুটোকে ঘিরেই আছে! এর চেয়ে বড় সত্যি আর কিছু হয় না। কাউকে ঠকিয়ে, লুকিয়ে, আঘাত দিয়ে তো আমি কিছু করছি না। আর আমি একইসঙ্গে দুটো মানুষের এই ভাললাগা, ভালবাসাকে ভালবাসছি। তাতে আমি এবং তারাও সকলেই ভাল থাকছি। কোথাও তো বলছি না ‘আমি কেবল তোমার। সেইরকম মানসিকতার পুরুষ আমার বন্ধুই হতে পারে না। আমি কখনই মনে করি না একজনকে ভালবাসা মানে সারাটাজীবন কেবল একজনকেই ভালবাসা বা হঠাৎ আমার জীবনে নতুন কোনও ভালবাসা আসা মানেই আমার এক্সিসটিং ভালবাসার মৃত্যু।

লোকে ভাবে শরীরের জন্যে আমি পুরুষ বন্ধু খুঁজে ফিরি, কী অসম্ভব হতাশা থেকে তারা এমন বলে! রসিয়ে রসিয়ে চর্চা করে, আমি জানি। আমি যা, আমি তাই-ই বলি। ‘আমার পায়ের আঙুলে রেগে নুড়ি বাজলে আমি শুনি ঝর্ণা/ সে-আওয়াজ কি আর কারো কাছে পৌঁছয়। যারা পায় তারাই জানে আমায়। এতেই খুশি আমি।
এমনও বলছি না যে এর মধ্যে দিয়ে খুব মহান কিছু হওয়ার দাবি আমি করছি বা সকলের-ই এমনটাই করা উচিত। আমি কেবল এটাই বলতে চাই এক জীবনে ভাললাগার, ভালবাসার চাওয়া এক মানুষে কখনই মেটে না। আর শরীরটাকে বিয়ের শিকল পরিয়ে, বেঁধে রাখার কোনও কারণ নেই। এখন তো বাচ্চা নেওয়ার সুযোগ-ও অনেক সহজ হয়েছে।

সমাজ মানবে না। মানেও নি। নেহাত ভাল চাকরি করি বলে একা থাকতে পারি। তবে বহু লোকের সঙ্গে মেশা, সর্বদা লোকের উপকার করা আমিকে, হয়তো আমার স্বভাবের জন্যেই একঘরে হতে হয়নি। আর আমার নিজের ভরসা, ভালবাসা আর বিশ্বাস আমাকে কোনওদিন একা, অসহায়, অবাঞ্ছিত ভাবতে শেখায় নি। ‘আমি যে সময়ের চকচকে ধারের উপর পা রেখে হাঁটছি/ আমি যে এগিয়ে যাচ্ছি প্রকাণ্ড পাথরচাঙের ফাঁকে’- এটাই আমার জীবন।

কবিতা : অরুণ মিত্র।

লেখক : স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৩

বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক

sex girls photoদেখতে দেখতেই পার হয়ে গেলো এতোগুলো বছর। এইতো সেইদিনই মাত্র আপনার মেয়েটি জন্মেছিলো, আর এখন সে বড় হয়ে গিয়েছে। মেয়েটি যত বড় হচ্ছে আপনার চিন্তাও বেড়ে চলেছে। এখনকার সময়ের ছেলে মেয়েরা তো বেশ আগেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়ে কত রকমের ভুল করে বসে। আপনার আদরের মেয়েটিও যদি এমন কোনো ভুল করে?আমাদের সমাজের মায়েরা মেয়েদের সাথে প্রেম, ভালোবাসা এসব নিয়ে সাধারণত আলাপ করেননা। এসব বিষয় নিয়ে সন্তানের সাথে আলাপ করাটা তাদের জন্য বেশ লজ্জার বিষয় এবং অনুচিত একটি ব্যাপার। কিন্তু এর ফলাফল হয় হিতে বিপরীত। না জেনে না শুনে কম বয়সেই অনেক রকম ভুল করে বসে কিশোরীরা। তাই আগে থেকেই প্রেম-ভালোবাসা সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক ধারণা ও সাবধানতা জানিয়ে দেয়া উচিত। আগে থেকে জানা থাকলে কিশোরী বয়সের বিভিন্ন ভুল থেকে দূরে থাকতে পারবে আপনার সন্তান। আসুন জেনে নেয়া যাক ভালোবাসা সম্পর্কে সন্তানকে জানানো উচিত এমন ৭ টি বিষয়।

তুমি যেমন আছো ঠিক আছো

মায়েরা যখন মেয়েকে বলে যে তুমি যেমন আছো, যা আছো সেটাই যথেষ্ট ভালো; তখন মেয়ের আত্মবিশ্বাস এবং আত্মমর্যাদা বাড়ে। মেয়েটির তখন নিজের উপর বিশ্বাস তৈরী হয় এবং সে বুঝতে পারে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তার কোনো কিছু বদলানোর প্রয়োজন নেই। সে যে রকম আছে, সেটাই যথেষ্ট ভালোবাসা পাওয়ার জন্য। আপনার কন্যাকে বলে দিন যে কেউ যদি ভালোবাসার দোহাই দিয়ে আপনার পরিবর্তন করতে চায় তাহলে সে আপনার ভালোবাসার যোগ্য নয়।

সম্মান পেতে হলে সম্মান দিতে হবে
সম্পর্কের ক্ষেত্রে মেয়েরা সাধারণত সবচেয়ে প্রথমে যা চায় তা হলো সম্মান। মা-এর উচিত মেয়েকে বুঝিয়ে বলা যে সম্মান পেতে হলে সঙ্গীকেও সম্মান করতে হবে। সঙ্গীর মতামত এর গুরুত্ব দেয়া, তাকে কষ্ট না দেয়া, তার সাথে ভালো ব্যবহার করা এবং তার পরিবার সম্পর্কে কটুক্তি না করা ইত্যাদি ব্যাপার গুলো মাথায় রাখতে হবে। তাহলেই তার সঙ্গীটিও তাকে সম্মান করবে।

নিজেকে হারিয়ে ফেলো না
প্রেমে পড়লে সাধারণত মেয়েরা নিজের অস্তিত্বকে হারিয়ে ফেলে। প্রেমিক ছাড়া নিজেকে কল্পনা করাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে তাদের কাছে। প্রেমিকের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পরলে নিজের বন্ধু-বান্ধব, শখ, ইচ্ছা সব কিছুর চাইতে প্রেমকে প্রাধান্য দেয় বেশি। তাই কন্যাকে মায়ের বোঝাতে হবে যে সম্পর্কে জড়ালেও যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলে। প্রেমের সম্পর্কের বাইরেও আপনার মেয়ের আরো অনেক ধরণের সম্পর্ক আছে এবং সেগুলোও গুরুত্বপূর্ন।

বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক নয়
আপনার কন্যাকে আপনারই বোঝাতে হবে যে কোনো প্রলোভনেই যেন সে প্রেমিকের সাথে শারীরিক সম্পর্কে রাজী না হয়। হয়তো অনেক কিছু বুঝিয়ে, বিয়ের কথা বলে কিংবা বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মেয়েকে শারীরিক সম্পর্কের জন্য চেষ্টা করবে। কিন্তু কন্যাকে বুঝিয়ে বলুন যেন এপথে ভুলেও এগোয়। তাকে বুঝিয়ে বলুন যে প্রেম পর্যন্ত ঠিক আছে, কিন্তু ভুলেও যেন কাউকে পুরোপুরি বিশ্বাস না করে বিয়ের আগ পর্যন্ত। তাকে বুঝিয়ে বলুন কেউ যদি মন থেকে কাউকে ভালোবাসে তাহলে সে শারীরিক সম্পর্কের জন্য জোর করবে না। বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের সামাজিক ও ধর্মীয় ক্ষতি গুলো তাকে বুঝিয়ে দিন ভালো করে।

সম্পর্কে সততা বজিয়ে রাখতে বলুন

আপনার কন্যাকে বলুন কোনো সম্পর্কে যদি জড়িয়েই যায় তাহলে সে যেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে সব সময় সততা বজআয়ে রাখে। একই সঙ্গে একাধিক সম্পর্কে জড়ানো একটি অনৈতিক কাজ এটা তাকে বুঝিয়ে দিন। এছাড়াও কারো সাথে প্রতারণা করলে যদি সে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয় তাহলে বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে এটাও তাকে বুঝিয়ে বলুন।

সম্পর্ক ভাঙ্গতেই পারে
আপনার মেয়েকে বুঝিয়ে বলুন যে সম্পর্কের ভাঙ্গা গড়া আছেই। সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে মন থেকে বিপর্যস্ত না হয়ে জীবনের চলার পথে এগিয়ে যেতে হবে। তাছাড়াও কোনো ক্ষতিকর বা ভুল সম্পর্কে থাকার চাইতে সময় থাকতে সেটা ভেঙ্গে ফেলাই ভালো। নাহলে পুরো জীবন সেই ভুলের মাশুল দিতে হবে।

জীবন রূপকথা নয়
ছোট বেলা থেকেই রূপকথার গল্প পড়ে মেয়েরা নিজেদের জীবনটাকে সিন্ডারেলার জীবনের মত কল্পনা করে নেয়। তাঁরা ধরেই নেয় যে তার স্বপ্নের রাজপুত্র তাকে একসময় নিয়ে যাবে স্বপ্নপুরীতে। যেখানে কোনো দুঃখ থাকবে না কিংবা অভাব থাকবে না। কিন্তু পরবর্তিতে মেয়েরা জীবনের নানান জটিলতায় সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় এবং মনকষ্টে ভুগে। রূপকথার গল্প তো মানুষেরই মন গড়া লেখা। তাই আপনার মেয়েকে বুঝিয়ে বলুন যে জীবনটা গল্পের মত সুন্দর নয়। তাই জীবনের ধাপগুলোকে যেনও সে রূপকথার গল্পের সাথে মিলিয়ে না ফেলে।

সেকেন্ড ইনিংস

মেয়েদের জীবনে অন্যতম মাইলফলক মেনোপজ। যে সময় থেকে রিপ্রোডাকটিভ কাজকর্ম বন্ধ হয়ে আসে। ধীরে ধীরে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে এসে তার পর একদম বন্ধ হয়ে যায়। সেটাই মেনোপজ।
meyeder sex

শেষ পিরিয়ডকে সূচক ধরে মনে করা হয়, ওভারি বা ডিম্বাশয় কর্মক্ষমতা হারল। এর পর থেকে আর ওভ্যুলেশন হবে না। সেক্স হরমোন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের উৎপাদনও কমবে। অনেকরই মেনোপজের আগে থেকেই শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রার হেরফের হয়। তবে মেনোপজে পৌঁছনোর আগেই ১৫-২০% মহিলার হিস্টেকটমি বা জরায়ু বাদ দেওয়ার অপারেশন হয়ে যায়। তাঁরা জীবনে কবে মেনোপজ এল তা টের পান না। তবে মেনোপজের উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্য অন্য কথা।

মেনোপজের উপসর্গ
ক্লান্ত লাগা, হঠাৎ গরম লাগা বা রাতে ঘেমে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়া এ সবই মেনোপজের উপসর্গ। অনেকে মেনোপজের কথা না ভেবে এগুলোকে শারীরিক বা মানসিক অসুখের লক্ষণ হিসেবেই দেখেন। এ জন্য হিস্টেকটমির পর বছরে এক বার এফএসএইচ হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা উচিৎ। মেনোপজের আগে এই হরমোনটির মাত্রা খুব বেড়ে যায়। হরমোনের মাত্রা দেখে বোঝা যায় মেনোপজ এগিয়ে আসছে কি না।

মেনোপজ আদৌ হল কি
এটি বুঝতে পরবর্তী ১২ মাস পিরিয়ড হল কি না তার দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে হয়। পঞ্চাশ পেরনো মহিলার যদি তিন মাস ব্লিডিং না হয় তবে মেনোপজ হওয়ার সম্ভাবনা ৫০%। তবে ছয় মাস বন্ধ থাকার পরও পিরিয়ড ও প্রিম্যানস্ট্রুয়াল সিম্পটম ফিরে আসতেও দেখেছি। আসলে ওভারির কাজ কমার পর পিট্যুইটারি আপ্রাণ চেষ্টা করে ওভারিকে জাগানোর। রক্তের এফএসএইচ হরমোনের মাত্রা বাড়তে বাড়তে ৪০ মিলি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট ছাড়িয়ে যায়। মেনোপজে পৌঁছনোর গড় বয়স ৫০-৫১ বছর। যদিও বর্তমানে জীবনযাত্রার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অনেক মহিলাই ৫৫-তে গিয়ে মেনোপজ হয়। মাত্র ১ শতাংশ মহিলার ৪০-এর আগেই মেনোপজ হয়ে যায়। যাকে আমরা মনে করি প্রিম্যাচাওরড ওভারিয়ান ফেলিওরড।

কবে হবে মেনোপজ
অনেক ক্ষেত্রেই এটি পারিবারিক ধারার ওপর নির্ভরশীল। মা বা দিদির কম বয়সে মেনোপজ হলে আপনারও কম বয়সে হতে পারে। কত বার গর্ভধারণ করেছেন, বিবাহিত না অবিবাহিত, ওজন বা উচ্চতা এগুলি ঠিক করে না মেনোপজ কবে হবে। তবে ধূমপান, ওভারিতে অস্ত্রোপাচার বা ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি বা রেডিয়োথেরাপির দিলে ওভারি তাড়াতাড়ি কাজকম্ম গুটিয়ে ফেলে। মেনোপজ তরান্বিত হয়।

মেনোপজ ও আপনি
পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটাকে এক এক জন এক এক ভাবে দেখেন। সেটা নির্ভর করে কে কোন সমাজে বাস করেন তার ওপর। এর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটি হল মহিলার ব্যক্তিত্ব, জীবন সম্বন্ধে ধারণা ইত্যদি। আমাদের দেশে মেনোপজকে বেশ ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়। ভাবটা এ রকম, যাক বাবা ঝক্কি-ঝামেলার অবসান হল। অবাঞ্ছিত প্রেগন্যান্সির ভয় আর থাকল না। পিরিয়ড থাকায় যে কোনও আচার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারার ঝামেলা থেকেও মুক্ত হলাম।

সবার ক্ষেত্রে ছবিটা কিন্তু এ রকম নয়। যাঁরা পশ্চিমী ধ্যান ধারণায় বিশ্বাসী, তাঁরা পিরিয়ড বন্ধ হওয়াকে সহজ ভাবে নিতে পারেন না। তাঁদের কাছে মেনোপজ মানেই সৌন্দর্যের দফারফা। নারীত্ব কমল। সব থেকে বড় কথা হল বিপরীত লিঙ্গের মানুষের কাছে আকর্ষণ কমল। অনেকে এমনও ভাবেন যে প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে গেল চিরতরে।

এই ভাবনা থেকে আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকে। অবসাদ ঘিরে ধরে। এক জন মহিলার মেনোপজ সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গী গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর পরও তাঁর জীবনের এক-তৃতীয়াংশ সময় পড়ে আছে। পোস্ট মেনোপজাল সিম্পটম সামলে বাকি দিনগুলি কীভাবে যাপন করবেন, তার ওপরও এই ভাবনার প্রভাব রয়েছে।

মেনোপজই শেষ কথা নয়
মেনোপজ মানেই সম্পূর্ণ শাট ডাউন নয়। মেনোপজের পর ওভারি থেকে ডিম্বাণু নিঃসরণ বন্ধ হলেও হুট করে সব হরমোন নিঃসরণ থেমে যায় না। স্বল্প মাত্রায় হলেও ইস্ট্রোজেন এর পর বহু বছর তৈরি হতে থাকে। তাছাড়া টেস্টোস্টেরন নারীর শরীরে ফ্যাটের সান্নিধ্যে টেস্টেস্টেরন ইস্ট্রোজেনে রূপান্তরিত হতে থাকে। খুব মোটাসোটা মহিলাদের ইস্ট্রোজেন লেভেল বেশি থাকায় হঠাৎ করে মেনোপজ হয়ে যাওয়ার পরও ব্লিডিং হতে পারে। মেনোপজ হওয়ার পর সব মহিলাই কিন্তু সমস্যায় ভোগেন না। ১০০ জনের মধ্যে ১৫ জনের হট ফ্লাশ, গরমলাগা, নাইট সোয়েট, খিটখিটে মেজাজ দেখা যায়। বুক ধড়ফড়, উদ্বিগ্নতা, ব্রেস্টে ব্যথা, তলপেটে ব্যথা, কোমরে ও পায়ে ব্যথা, ইউরিনের ইনফেকশন, ভ্যাজাইনা শুকিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়। তা ছাড়া বহু বছর হরমোন বন্ধ থাকলে অস্টিয়োপোরেসিসের সম্ভাবনা বাড়ে।

তবে আগে দেখে নিতে হয় অন্য কোনও কারণে এই সব হচ্ছে কি না। যদি হরমোন ঘাটতিই এক মাত্র কারণ হয়, তবে হরমোন দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করতে হয়।

দাম্পত্য সম্পর্কে অশান্তির কারণ

সুন্দরী গার্ল ফটোসব দাম্পত্য সম্পর্ক এক রকমের হয় না। দাম্পত্য সম্পর্ক ভাল না গেলে পৃথিবীর সব সুখ মাটি হয়ে যায়। একসময় ভেঙ্গে যায় অতি সাধের সম্পর্কও। দাম্পত্য সম্পর্কে অশান্তির অন্যতম ৫ কারণ হল:ঈর্ষা: ঈর্ষা সকল অশান্তির কারণ। ঈর্ষা থেকে সম্পর্কে ভাঙন শুরু হতে পারে। তাই দাম্পত্য সম্পর্কে ঈর্ষা যত দূরে ঠেলে রাখা যায় ততই মঙ্গল।

যৌন সমস্যা: যৌনসম্পর্ক সুখের না হলেও দাম্পত্য সম্পর্কে ভাঙন আসে। এক্ষেত্রে সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলে সমস্যার সমাধান আনা সম্ভব।

মাদকাসক্তি: মাদকাসক্তি থেকে হরহামেশা দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। মাদকে আসক্ত স্বামীকে কোন নারীই মেনে নিতে পারেন না। মেনে নেওয়া উচিতও নয়। তাই বিয়ের আগেই এই সমস্যা দূর করা উচিত।

আর্থিক সংকট: আর্থিক সমস্যা বেশিরভাগ দাম্পত্য সম্পর্কে ভাঙনের মূল কারণ। এ সমস্যাও দূর করা যায় যৌথ প্রয়াসে। এক্ষেত্রে স্ত্রীদের উচিত হবে স্বামীর ওপর আস্থা রাখার। এছাড়াও ধৈর্য ধরার বিকল্প নেই।

পুরানো সম্পর্ক: পুরনো সম্পর্কও অনেক সময় দাম্পত্য কলহের কারণ হয়। তাই পুরনো প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী না করায় ভাল। বন্ধু হিসেবেও পুরনো প্রেমিক/প্রেমিকার সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা ভাল। এতে অবিশ্বাস তৈরি হবে না।

শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৩

দুই নায়িকার চুলোচুলি

বিনোদনরোদনভরা এ বসন্ত’-এ টলিপাড়ার কোন কন্যে চোট পেয়ে মনে মনে মরলেন, বলুন তো? তাও আবার রিল লাইফে নয়, খোদ রিয়েল লাইফেই চোট! এখন টলিপাড়ায় তো আর কন্যে কম পড়েনি, কাজেই যে কোনও একজনের কথা ভাবলে উচিত হবে না! আসলে ঘা-টা যেমন একটু বেশি, তেমন কন্যের সংখ্যাও একের বদলে দুই। আর তাঁরা হলেন শুভশ্রী আর নুসরত। দুজনেই জ্বলে-পুড়ে মরছেন একই নায়কের প্রেমে; আর তাতেই ইন্ডাস্ট্রিতে শুরু হয়েছে জোর চুলোচুলি! আসলে ‘খোকা ৪২০’-এর শ্যুটিং করতে গিয়েই দেখা দিয়েছে এই বিপত্তি। হবে নাই বা কেন; যেমন দুই নায়িকাকে একসঙ্গে কাস্ট করা! এখন পরিচালক রাজীবই বা কী করে ঠাওরাবেন যে দেব-শুভশ্রীর প্রেমটা মাঝপথে ভো-কাট্টা হয়ে যাবে! আর সেটাই কাল হল। শুভশ্রী যতই ট্যুইটারে ‘ভেঙে পড়ো না, উঠে দাঁড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাও’ গোছের গাল-ভরা বুলি আওরান, ভেতরে ভেতরে তো আবেগ-অনুভূতিরা সুনামি হয়ে আছড়ে-পিছড়ে মেয়ের সব কিছু দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে! তাও কন্যে এগিয়ে চলেছিলেন নিজের মতো করে; কত কাঠ-খড় পুড়িয়ে শেষমেশ ‘বস’-এ জিৎ-এর নায়িকাও হলেন! তার সঙ্গেই ঠিক করে ফেললেন যে, পুরনো সব কিছু ধুয়েমুছে নয়া গেট-আপ-এ জীবনটা শুরু করবেন। নায়িকার একটু সাজুগুজু না করলে চলে! এসব সাত-পাঁচ ভেবে শুভশ্রী এক গোছা চুল লালও করে ফেললেন। জিতের সঙ্গে নাচা-কোঁদাও করলেন লালি চুলে। আর সেখানেই দেখা দিল ফ্যাকড়া!

যেই না শুভশ্রীর চুলে লাল পোঁচ পড়েছে, অমনি নাকি দেবও চুপি চুপি নুসরতকে ‘খোকা ৪২০’-এ চুল লাল করানোর বায়না জুড়েছেন। এখন নায়কের বায়না বলে কথা! নায়িকা কি তা ফেলতে পারেন! নুসরতও তাই দেখ-না-দেখ চুল লাল করে সেটে হাজির। আর তারপরেই পড়বি তো পড় একেবারে শুভশ্রীর মুখোমুখি! ব্যস! আর যায় কোথায়! দুয়ে দুয়ে চারের হিসেব মিলিয়ে নিতেই শুভশ্রীর মনটা গেল চুর-চুর হয়ে ভেঙে! এই ছিল দেব-এর মনে!

তারপর তো শুভশ্রীর চোখে জল, মনে ঝড়! এইভাবেই কয়েক দিন চলল। কিন্তু ওই যে কথায় বলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে! একদিন নুসরতের হেয়ার ড্রেসার কী কারণে যেন আসতে পারবে না। তা বলে তো আর শ্যুটিং আটকে থাকবে না। এদিকে নায়িকার চুল ঠিক করাটাও দরকার। এদিকে এই কথা শুভশ্রীর কানে যেই পৌঁছাল, নায়িকা নাকচ করে দিলেন নিজের হেয়ার-ড্রেসারকে নুসরতের কাছে পাঠানোর প্রস্তাব! আর কী, সেদিনের মতো শ্যুটিং রইল পড়ে!

এখন টলিপাড়া এই নিয়ে যাই বলুক না কেন, এ ব্যথা কী যে ব্যথা, বোঝে যে খালি একলা মনে!

রোজ শরীরের পেছনে দীপিকার ব্যয় ৩৫ হাজার রুপি

চেন্নাই এক্সপ্রেস’ তারকা দীপিকা পাড়ুকোন সম্পর্কে চমকপ্রদ এক তথ্যই পাওয়া গেল। সম্প্রতি ওয়ান ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়েছে, শরীরচর্চার পেছনে প্রচুর অর্থ ও সময় ব্যয় করেন তিনি। শরীর ফিট রাখতে প্রতিদিন শরীরচর্চা প্রশিক্ষককে গুনে গুনে ৩৫ হাজার রুপি দেন বলিউডের জনপ্রিয় এ তারকা
dipika
অভিনেত্রী। ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবির শুটিং চলার সময়ও প্রতিদিন তাঁর এই খরচ হচ্ছে। এ জন্য এরই মধ্যে ছবিটির নির্মাতাদের পকেট থেকে নাকি প্রায় ১০ লাখ রুপি বের হয়ে গেছে। বরাবরই দীপিকার ছিপছিপে ও হালকা গড়নের অবয়ব দেখে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শকেরা। তবে ভোজনরসিক দীপিকার হাঁড়ির খবর আগেই ফাঁস করেছিলেন ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ ছবিতে তাঁর সহ-অভিনেতা শাহরুখ খান। ‘বলিউড বাদশাহ’ জানিয়েছিলেন, একটু পরপরই নাকি খিদে পেয়ে যায় দীপিকার। শুটিংয়ের সময় নিজের খাবার তো খেতেনই, ছবির দলের সবার খাবারেও ভাগ বসাতেন। ভোজনরসিক হওয়ার পরও দীপিকার শরীর ফিট রাখার বিষয়টি বেশ রহস্যজনকই বটে। তবে এবার সেই রহস্যের পেছনের কারণ জানা গেল। শরীরচর্চার পেছনে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় করেই নিজেকে ফিট রাখেন তিনি। একটু বেশি খাওয়ার বাতিক থাকায় মাঝেমধ্যেই দীপিকার শরীরে বাড়তি মেদ জমে যায়। তবে নিয়ম করে শরীরের ঘাম ঝরিয়ে বাড়তি ক্যালরি কীভাবে পোড়াতে হয়, তা খুব ভালো করেই জানা আছে তাঁর। শরীরের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে আকর্ষণীয় অবয়ব ধরে রাখার জন্য তিনি শরীরচর্চা প্রশিক্ষকের সাহায্যও নেন। ‘সাইজ জিরো’খ্যাত বলিউডের আরেক অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খানের সাবেক শরীরচর্চা প্রশিক্ষক ইয়াসমিন করাচিওয়ালার তত্ত্বাবধানে নিয়মিত শরীরচর্চা করেন দীপিকা। বিনিময়ে ইয়াসমিনকে প্রতিদিন ৩৫ হাজার রুপি দেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই ফারাহ খান পরিচালিত ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবির শুটিং করছেন দীপিকা। ছবিটিতে আবার শাহরুখ খানের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন তিনি। শুটিংয়ের প্রচণ্ড ব্যস্ততা সত্ত্বেও ঠিকই সময় বের করে নিয়মিত শরীরচর্চার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দীপিকা। আর যত দিন শুটিং চলবে, তত দিন দীপিকার শরীরচর্চার ব্যয় বহনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবির নির্মাতারা। এ জন্য এরই মধ্যে নাকি তাঁরা দীপিকার পেছনে প্রায় ১০ লাখ রুপি খরচ করে ফেলেছেন। দীপিকার পারিশ্রমিক থেকে বাড়তি এই খরচ কেটে রাখা হবে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।

শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৩

মর্ত্যে স্বর্গ - ভালবাসায়

premer golpoএকটা মেয়ে যখন ভর দুপুর বেলায় রাস্তার একপাশে একা একা দাঁড়িয়ে থাকে , কোন একটা কারণে দৃশ্যটা চলতি পথের মানুষদের মনে ব্যপক কৌতূহল জাগায় । তারা খুব আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকে , তাড়িয়ে তাড়িয়ে মেয়েটার অসহায় বিরক্তি উপভোগ করার চেষ্টা করে । যে কোন মেয়ের জন্যে ব্যাপারটা অনেক বেশি অসস্তির । আর ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি রকমের অস্বস্তির যখন ঘটনাটা আমাদের গল্পের জয়িতার সাথে ঘটে । ব্যাপারটা মোটামুটি অবিচারের পর্যায়ে চলে যায় যখন ওর দাঁড়িয়ে থাকার কারণে যে ব্যক্তি , সেই ব্যক্তি সবে মাত্র ঘুম থেকে উঠে হাই তুলতে তুলতে ফোন রিসিভ করে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বলে , " তুই আর আধঘণ্টা মোড়ের দোকানগুলার সামনে দাঁড়া । আমি গোসল করে আসতেছি । "
এবং এই চরিত্র দুইটির সবচেয়ে আশ্চর্যের জায়গা হচ্ছে , জয়িতা আসলেই দাঁড়িয়ে থাকে ।
ঘড়ি ধরে আধা ঘণ্টার একটু কম সময় দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পায়ের জোড়া গুলো যখন খুলে আসতে চাইছে , ঠিক তখনই বাইক নিয়ে ফিল্মি স্টাইলে ছেলেটার আগমন , আপাতত আমাদের গল্পের নায়ক এই ছেলেটাই , দিব্য ।

জয়িতাঃ দিব্য ...
দিব্যঃ কথা পড়ে । আগে রিকশা ডাক ।
জয়িতাঃ রিকশা কেন ?
দিব্যঃ হাঁটতে পারবো না । রিকশা ডাক ।
জয়িতা জানে বাইকটা দিব্যের না । তাড়াহুড়া করার জন্যে কাজিনের বাইক নিয়ে টান দিয়ে চলে এসেছে । জয়িতা এটাও জানে , ও এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলো , ও এখন হাঁটতে পারবে না শুধু এই কারণেই এখন দিব্য রিকশা ডাকতে বলছে । নাহলে সাইন্স ল্যাব থেকে নীলক্ষেত হেঁটেই যাওয়া যায় ।
আমাদের গল্পে দিব্য এবং জয়িতা অনেক বড় একটা জায়গা জুড়ে আছে । ওদের পরিচয় হয়েছিল কলেজ লাইফে । এখন ভার্সিটি লাইফের প্রায় শেষ দিকেও ওরা অনেক ভাল বন্ধু । বন্ধুত্বের (!) নমুনা উপরেই পাওয়া যায় ! জয়িতা , দিব্যের একমাত্র কাছের বন্ধু । আর দিব্য , জয়িতার বন্ধুদের মাঝে সবচেয়ে কাছের ।
দিব্য থাকে ঢাকায় ওর কাজিনের বাসায় । বাবার সাথে সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় মা মারা যাওয়ার পর থেকে হোস্টেলে অথবা যাতায়াতের সুবিধার অজুহাতে কাজিনের বাসায় থেকেছে ও কলেজ লাইফ থেকেই । অন্যদিকে জয়িতা , কলেজের ভার্সিটির অনেক ছেলের দীর্ঘশ্বাসের কারণ হয়েছিল স্টুডেন্ট লাইফটাতে । বাবা নেই , মা ভার্সিটি লেকচারার । প্রতাপশালী উচ্চবিত্ত নানাভাইয়ের কারণে খুব একটা খারাপ অবস্থায় থাকতে হয় নি ওদেরকে । এই হচ্ছে মোটামুটি দিব্য আর জয়িতা ।

সেইদিন দুপুরের পর আজকে দুই দিন ধরে জয়িতার সাথে কথা হয়নি দিব্যের । বিকালে ওকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে এসে ও গিয়েছিল স্টুডেন্ট পড়াতে । রাতে এসে জয়িতাকে ফোন করে পায়নি । ভেবেছিলো হয়তো টায়ার্ড হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে । ফেসবুকেও অনলাইন পায়নি ওকে সেদিন রাতে । পরদিন সারাদিন খুব দৌড়াদৌড়িতে ছিল দিব্য । তারপরেও গুনে গুনে তিনবার ফোন করেছে জয়িতাকে । ধরেনি । দিব্যের কিছু সমস্যা আছে জয়িতা জানে । ও একবার চেয়ে যা পায়নি , ও সেটা দ্বিতীয়বার চাইবে না । দিব্য জানে , জয়িতা ওর তিনটা মিসড কল পেলে বুঝতে পারবে মন খারাপ হয়েছে ওর । ভীষণ মন খারাপ । সেইদিন সারাদিন জয়িতা ফোন দেয়নি ওকে । আজকে সন্ধ্যা বেলায় আটচল্লিশ ঘণ্টা হয়ে যাচ্ছে কথা হয়নি ওর জয়িতার সাথে । কেমন দম বন্ধ হয়ে আসছে দিব্যের । অসহায় , বিপর্যস্ত মুখ নিয়ে ছাদের এ মাথা থেকে ও মাথা পায়চারি করছে ও । একটু পরে ভীষণ মেজাজ খারাপ হওয়া শুরু হলো ওর । নিজের উপরে , জয়িতার উপরেও । মুখের ভেতরটা কেমন তেতো তেতো লাগছে ওর । তাকিয়ে দেখলো ওর কফির মগটার মাঝে একটা পোকা ভাসছে । মেজাজ খারাপের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেলো ওর । জয়িতার নিষেধে গত ছয় মাসে একটা সিগারেটও খায়নি দিব্য । আজকে কেন যেন হঠাত্‍ সিগারেটের নেশাটা জাকিয়ে বসেছে ওর । মন খারাপের সাথে সিগারেটের একটা মিল খুঁজে পায় ও । সিগারেট একটু একটু করে পোড়ে , ছাই হয় , তারপর হারিয়ে যায় । মন খারাপ আস্তে আস্তে একটা মানুষের ভেতরটাকে পুড়িয়ে ফেলে , তারপর একসময় মন খারাপের অনুভূতিটা হারিয়ে যায় । কিন্তু সিগারেট শেষ করার পর একটা জিনিস হয় না যেটা মন খারাপ থাকলে হয় । মন খারাপের অনুভূতিটা যখন চলে যায় তখন একটা ভয়ংকর শূন্যতা কাজ করে ।
'আউ !!' হাতে জ্বলতে থাকা সিগারেটটা পুড়ে শেষ হয়ে কখন ফিল্টার পর্যন্ত চলে এসেছে খেয়ালই করেনি ও । মেজাজ খারাপ করে আরেকটা সিগারেট ধরালো ও । ' শাআআলা !! ' মুখ থেকে থুতু ফেললো ও ছাদ থেকে ।
"তোরে না বলছি , যেখানে সেখানে থুতু ফেলবি না ?" কণ্ঠটা শোনার সাথে সাথে এতো চমকে উঠলো দিব্য যে হাত থেকে সিগারেটটা পড়ে গেলো রেলিং দিয়ে বাইরে । ঘুরে তাকিয়ে দেখে জয়িতা দাঁড়িয়ে আছে । দিব্য একবার চিন্তা করলো , ঘটনাটা কি ঘটছে । " আর সিগারেট খাইতে পারবি না এইটা জানার পরেও কেন সিগারেট কিনতে গেছিস ?" দিব্য এক মুহূর্ত চিন্তা করার পরেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করলো । ও জানে যে চোখ খোলার পরে দেখবে ওর সামনে কেউ নেই । পুরোটাই ওর কল্পনা । 'হুহ ! জয়িতা বাসার ছাদে চলে আসছে আমার !! সাধ তো কম না আমার !!! ' ভাবতে ভাবতেই চোখ খুলে তাকালো ও ।

একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো খুব গোপনে । কেউ নেই ওর সামনে ।
অথচ দিব্য খুব খুব করে চাইছিলো ওর এই চিন্তাটা মিথ্যে হোক , ওর সামনে সত্যি সত্যিই জয়িতা দাঁড়িয়ে থাকুক ।
"অই ! ভ্যাবদার মত চোখ বন্ধ করে মুখ কান্না কান্না বানায়ে রাখছিস কেন ? " জয়িতার কণ্ঠ শুনতে পায় এবার পাশ থেকে । দিব্যের মাথায় এখন পুরাপুরি উল্টাপাল্টা সিক্সটি নাইন অবস্থা ! ও এখনো বোঝার চেষ্টা করছে জয়িতা আসলেই আছে নাকি নেই । মাথায় চাটি খেয়ে বুঝতে পারলো আসলেই জয়িতা ওর পাশে দাড়িয়েছে । ও চোখ বন্ধ করে ছিল দেখে টের পায়নি ।
জয়িতাঃ এই নে । ধর বক্সটা ।
দিব্যঃ কিসের বক্স ?
জয়িতাঃ আমার গিফট ।
দিব্যঃ মানে কি ? আমারে দিলি ?
জয়িতাঃ না । গিফটটা তুই এখন আমারে দিবি ।
দিব্যঃ তোর মাথা খারাপ ।
জয়িতাঃ না । তোর মেমরি খারাপ ।
দিব্যঃ ঠিক ঠাক মত কথা বল ।
জয়িতাঃ মিস্টার , আমার জন্মদিন আজকে । আমি জানি আপনি ভুলে গেছেন । তাই আমিই সাধাসাধি করে উইশ নিতে আসছি , সাথে গিফট নিতে আসছি ।
দিব্য জয়িতার দিকে তাকাতে পারে না , জয়িতার হাসিটা শুনতে অসহ্য লাগছিলো ওর । নিজের মাথার চুল নিজে টেনে ছিড়তে ইচ্ছা করছিলো ওর । চোখ ঘুরিয়ে প্রায় লাল হয়ে যাওয়া সূর্যের দিকে তাকায় দিব্য । সূর্যের লাল রং ওর চোখ রাঙায় , উড়ে যাওয়া মেঘ তরল হয়ে আশ্রয় খুঁজে নেয় চোখের পাতায় । জয়িতা অবাক হয়ে যায় দিব্যের এই প্রতিক্রিয়াতে । ধরে আসা গলায় দিব্য একমনে বলে যায় , " তুই ফোন ধরিস নাই , ফোন করিস নাই । আটচল্লিশ ঘণ্টা বাইশ মিনিট পর তোর সাথে কথা হইতেছে আমার । আমি একটা মিনিটের জন্যে পরিষ্কার করে কিছু চিন্তা করতে পারি নাই । আর তোর জন্মদিনটাও ভুলে গেছিলাম আমি ... হ্যাহ ! এই আমি বলি , তুই আমার একমাত্র কাছের বন্ধু ? আমি নয় খারাপ , ভুলে যাই । তুই কেন ফোন করলিনা একবার ? "

জয়িতা আক্ষরিক অর্থেই বোবা হয়ে যায় । ওর বলা হয় না , সেদিন রোদের মাঝে দাঁড়িয়ে থেকে জ্বর উঠে গিয়েছিল ওর । বলা হয় না , জন্মদিনে শুধু ওর সাথে দেখা করার জন্যে ও খুঁজে খুঁজে চলে এসেছে এখানে ।
"আচ্ছা , ঠিক আছে তো । সমস্যা নাই । প্লিজ , তুই এখন কান্নাকাটি করিস না । জয়িতা জানে , দিব্য মানুষটা অনেক বেশি শক্ত মনের । শুধু জয়িতার ব্যাপারেই ওর সব কিছু আলাদা । সব কিছু ।
পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক হওয়ার পর দিব্য জিজ্ঞাসা করে বাক্সের ভেতর কি আছে । জয়িতা হাসতে হাসতে বলে , ' একটা কলম । লিখার একটু পরেই কালি হাওয়ায় মিলায়ে যাবে । কোনদিন খুঁজে পাবি না ! হিহিহি ! ' দিব্য হাসতে হাসতে বলে , 'খুঁজে না পাইলে আবার লিখে দিবি ! '
হাসিতে ভাঙে বিষণ্ন সন্ধ্যার নীরবতা । স্নিগ্ধ উচ্ছ্বাসে বোঝার উপায় থাকে না , একটু আগেই এখানে চিত্রায়িত হয়েছে এমন এক দৃশ্য , যে দৃশ্যটা নায়ক নায়িকা কারোর জীবনের সাথেই মেলে না ।
ঘটনা মোটামুটি একই ভাবে চলতে থাকে ততদিন পর্যন্ত যতদিন না আমাদের গল্পের মাঝে কয়েকটা ছোট্ট ঘটনার মোড় দেখা না দেয় ।
চিরাচরিত নিয়মে প্রায় আধঘণ্টা দেরি করে আসার পরে , আইসক্রিম পার্লারের সামনে এসে একটা দৃশ্য দেখে দিব্যের কপালে ভাঁজ পড়ে । দিব্য স্পষ্ট দেখতে পায় বাইকের ওপরে বসে থাকা একটা ছেলে জয়িতার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে । জয়িতার চেহারা দেখে বোঝাই যাচ্ছে , জয়িতার কথা বলতে আড়ষ্টতা কাজ করছে । একটু জোরে পা ফেলে দিব্য এগিয়ে যায়।

ছেলেটার দিকে জিজ্ঞাসা সূচক দৃষ্টি নিয়ে দিব্য জয়িতাকে জিজ্ঞাসা করে , 'কাহিনী কি ? ঝামেলা কোন ?'
"না । তেমন কিছু না ।"
দিব্য কিছু না বলে একটু দূরে সরে দাঁড়ায় । কথাগুলো আবছা আবছা কানে আসে ।
ছেলেটাঃ আপনি চাইলে আপনাকে বাসায় ড্রপ করে যেতে পারি । আমি ঐদিক দিয়েই যাবো ।
জয়িতাঃ না মানে ...
ছেলেটাঃ বাইকে তিনজন বসা যায় । আপনি না হয় মাঝের জনের জায়গা খালি রেখে পেছনের জনের জায়গাতেই বসবেন ... বিরাট এক রসিকতা করে ফেলেছে এভাবে হাহা করে হাসতে থাকে ছেলেটা ।
জয়িতা দিব্যের দিকে তাকানোর সাথে সাথে দেখতে পায় ওর চোখ মুখ শক্ত হয়ে আছে । যা বোঝার বুঝে নিয়ে ছেলেটাকে কিছু একটা বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিয়ে দিব্যকে নিয়ে পার্লারের ভেতরে একটা কোণায় গিয়ে বসে ।
দিব্যঃ শালা কি চায় ?
জয়িতাঃ কি আর চাবে ? সুন্দরী মেয়েকে বাইকের পেছনে নিয়ে ঘুরতে চায় ।
দিব্যঃ তুই যাইতি ?
জয়িতাঃ যাওয়াই তো যায় , না ? তুই তো আর আমারে বাইকের পিছনে উঠাবি না ।
দিব্যঃ আমার সাথে বাইকে ঘুরবি তুই ?
জয়িতাঃ যদি তোর বাইক হয় । ধার দেনা করা বাইকে জয়িতা ওঠে না । হুহ!

ঠাট্টা ছলে কথাটা বলার সময় জয়িতা চিন্তাও করেনি সেইদিন সন্ধ্যা বেলা কি ঘটতে যাচ্ছে । দিব্য যখন ওকে ফোন করে পার্লারের সামনে আসতে বললো , জয়িতা চিন্তা করার চেষ্টা করছিলো আসলে ঘটনাটা কি হতে পারে । কোন কূল কিনারা করতে না পেরে তাড়াহুড়া করে পার্লারে গেল । পার্লারের সামনে গিয়ে দেখে দিব্য বসে আছে গেটের বাইরে সিঁড়িতে ।
জয়িতাঃ কি ব্যাপার ? জনাবের জরুরি তলব ?
দিব্যঃ তোরে ঘুরতে নিয়ে যাবো ।
জয়িতাঃ রিকশা ডাকবো ?
দিব্যঃ না । বাইকে ।
জয়িতাঃ কার বাইকে ? আমি তো তোর ধার দে....
জয়িতা অবাক হয়ে দেখে ওর সামনে জা চকচকে একটা বাইক দাড়িয়ে আছে । জয়িতা যতটা অবাক হয়ে গেছিলো , তারচেয়ে বেশি মেজাজ খারাপ হয় ওর । দিব্যকে ঝাড়ি দেওয়া শুরু করে । ' তোরে কে বলছে টাকা খরচ করতে ? আমি ফাজলামি করে একটা কথা বললাম আর তুই কেন সিরিয়াসলি নিলি ...'
দিব্য বাইকে উঠে স্টার্ট দিয়ে জয়িতাকে উঠতে বলে । জয়িতা গজগজ করতে করতে বাইকে ওঠার পরে গিয়ার চেঞ্জ করার ঠিক আগ মুহুর্তে জয়িতাকে বলে , 'তুই আমি ছাড়া আর কারো বাইকে উঠবি না ।'
বাইকের ইগনিশনের আড়ালে চাপা পড়ে যায় জয়িতার অবাক বিস্ময় , দিব্যের ঘাড়ের উপর আঁকড়ে থাকা জয়িতার হাতের আঁকড়ে ধরার তীব্রতায় লীন হয়ে লাজুক উচ্ছ্বাস ।

এলোমেলো ভাবনা

indian girl photoগভীর রাত,চারিদিকে সুনসান নীরবতা। কানে হেডফোন সাটিয়ে উচ্চশব্দে গান শুনছে রোমন। সর্বোচ্চ লেভেলে গান বাজছে তবুও আর একটু বাড়ানোর ব্যার্থ চেষ্টা করলো। মানুষের চাহিদা একটা গণ্ডীর মধ্যে আটকে থাকলে সে স্বাধীনতা চাই, সীমা নির্ধারণ করে দিলে তা অতিক্রম করতে চাই।রোমন তাই করার চেষ্টা করলো,কিন্তু সম্ভব হলোনা।
হঠাৎ গুমোট ভাব লাগার কারন বুঝতে, গান বন্ধ করে ফ্যানের শব্দ শুনার চেষ্টা করে রোমন। না ফ্যান চলছে, শব্দ শুনার পর গুমোট ভাবটাও চলে গেছে খেয়াল করলো রোমন। তাহলে হঠাৎ করে এমন গরম লাগলো কেন?
হতে পারে ব্যাপারটা স্নায়ুবিক, কিন্তু শব্দ শোনার সাথে গুমোট ভাব চলে যাওয়া বা আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে যাবার কারন বুঝতে পারছেনা রোমন।
আজকাল কি ইন্দ্রিয়গুলোও ফাকি দিচ্ছে ভাবতে থকে রোমন। নাহ, এটা নিয়ে ভাবা যাবেনা।কার্যকরণ না পেলে হয়তো আজ রাতটা অনিন্দ্রায় কেটে যাবে। কি লাভ ভেবে, কার্যকরণ নিয়ে চিন্তা করে।

পৃথিবীতে যার কৌতূহল যত কম, সে ততো বেশি সুখী। রাস্তার বদ্ধপাগলদের কৌতূহল মোটেও নেই বলেই তারা এতো সুখী,এতোটা নিশ্চন্ত।
চিত্র প্রদর্শনীতে কৌতূহলহীন কোন হকার,পথশিশু কিংবা কৃষককে সদা হাস্যজ্জল দেখায়। কিন্তু কোন বিজ্ঞানী বা চিন্তাবিদকে কখনো হাসি মুখে দেখা যায়না। ক্যারিকেচার এঁকে হাসি ফুটিয়ে তুলতে হয়।অধিক কৌতূহল মানুষকে অনুভূতিহীন করে দেয়।
কৌতূহল না থাকার কারনে কি তাহলে ওরা পাগল হয়ে যায়? রোমনও
কি তাহলে পাগল হয়ে যাবে, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে? এমন হাজারো প্রশ্ন এসে ভীড় করে রোমনের মাথায়।ভাবতে ভাবতে সিদ্ধান্ত নেয়, আজ সে ঘুমাবেনা।
এখন ভাবতে বসবে কার্যকরণ নিয়ে। তানিয়ার ব্যাপারটা কেন স্নায়ুবিক হয়না? হঠাৎ করে তানিয়ার উপস্থিতি টের পাবে, তার স্পর্শ অনুভব করবে, কিংবা সিনেমা, নাটকে হ্যালুসিনেট হয় অন্যের সাথে কথা বলে। বাস্তবে এমন হয়না কেন।বাস্তবে কিছু দেখলে কেন সেটাকে অদ্ভুত দেখায়, ভুতুরে মনে হয়। ভাবতে ভাবতে পরক্ষনেই ঘুমানোর সিধান্ত নেই। এইসব ভাবতে থাকলে সেও পাগল হয়ে যাবে।তার চেয়ে কৌতূহল দমিয়ে পাগল হওয়ায় ভালো।


সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চলেছে।সময় ১১টা। রোমন পার্শ্ববর্তী একাটা হোটেলে এসেছে। উদ্দেশ্য সকালের নাস্তা করা, অভিজাত শ্রেনীরদের ভাষায় যেটাকে লাঞ্চ বলা হয়। তবে সময়টা লাঞ্চ গ্রহণের নয়। সকাল আর দুপুরের মাঝামাঝি সময়ে যা খাওয়া হয় সেটাকে ব্রাঞ্চ বলা হয়।
রোমনের পাশের টেবিলে দুটো উটকো লোক বসে আছে।কেমন তাদের ভাবভঙ্গি। কথাবার্তার স্টাইল কেমন একটু আলাদা। কিছু একটা বলার পরেই দুজনে আট্টহাসি জুড়ে দিচ্ছে।
রোমন কোন প্রকার ভ্রুক্ষেপ না করেই খেতে থাকে। হোটেল বয়ের পাশের টেবিলে এগিয়ে আসা দেখে আবারও সেদিকে তাকাই রোমন।
হঠাৎ উটকো লোক দুটোর একজন ছেলেটার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
গ্লাস থেকে লোকটার গায়ে পানি ছিটকে পড়তে দেরি, কিন্তু থাপ্পড় বসাতে দেরি করেনি সে।

আবারও মারতে উদ্দত হলে ছেলেটিকে সরিয়ে নেয় রোমন। ছেলেটি ভয়ে রোমনকে জড়িয়ে ধরেছে। ভীতুরা সাহসীদের সঙ্গ খুব পছন্দ করে।এই মুহূর্তে ছেলেটি রোমনকে খুব সাহসী ভাবছে।একাকিত্বের সময় রাস্তার কুকুরকেও মাথার আকাশ মনে হয়। ছেলেটি রোমনকে তাই ভেবে থাকতে পারে। রোমনের সামর্থের কথা চিন্তা করার সময় পায়নি সে, তার প্রয়োজনের সময় এগিয়ে এসেছে সেটাই বড় কথা।
ফুঁসতে ফুঁসতে হোটেল থেকে বের হয়ে যায় লোকদুটো। তবে যাবার আগে রোমনকে তারা বেশ অবাক করে যায়।রোমন ভেবেছিলো তারা বিল পরিশোধ না করেই বের হবে। নিজের বিল পরিশোধের পর আবারও আবাক হয়ে যায় রোমন। যখন জানতে পারে, তারা ছেলেটির জন্য বিলের সাথে চারশ টাকা রেখে গেছে, ভাঙতি ফেরত নেয়নি। লোকগুলোর
সম্পর্কে রোমন যে খারাপ ধরনা করেছিলো এবার টা পুরোপুরি বদলে গেলো। তাদের নিয়ে আর কিছু ভাবতে পারলো না রোমন। ভাবলে পাগল হয়ে যাবে। সবকিছুই কেমন বদলে যাচ্ছে। বদলায়না শুধু তানিয়া সে আর ফিরে আসেনা।


রোমন, এই রোমন!
চমকে গিয়ে পিছনে তাকায় রোমন। চমকানোর কারন আছে। রোমনের এই নামে কেউ তাকে ডাকে না। ছোট্ট একটা নাম আছে রোমনের, সবাই তাকে সেই নামে ডাকে। বিশেষ কয়েকজন ছাড়া সবাই তাকে রনি বলে ডাকে।
যে বিশেষ কয়েকজন তাকে রোমন বলে ডাকে তারা তাকে খুব ভালবাসে, ভালজানে। তবে খুব কম মানুষই তাকে এই নামে ডাকে।
মানুষ আলোচিত না হলে তাকে কেউ চিনেনা। রোমনকে না চেনার কারনও এটি। এমনকি মা ও তাকে চিনেনা পরিবারে আলোচিত হতে পারেনি বলেই। তাই হয়তো মা রনি বলে ডাকে। যার বিশ্বাসের দালানকোঠা ভেঙ্গে পড়েছে খড়ের ঘরের মত, যে শোকে সন্তপে,বেদনায় বিষাদে কুঁকড়ে থেকেছে, চরম লজ্জা আর লাঞ্ছনা যাকে আত্মহত্যা করার মত একটি ভয়ংকর পথে নিয়ে যেতে চেয়েছে সে কখনো পরিবারে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনা।তার পারিবারিক জীবন কখনো স্বাভাবিক হয়না।
নাম মানুষের ভালমন্দ বিচার করে না। তবে রোমন তার নাম নিয়ে করে, তার পাশের মানুষগুলো করে।

রোমনের বিশ্বাস সে যদি ইতিহাস গড়তে পারে তবে মীরজাফর কিংবা ঘসেটি বেগমের মতো তার নামটি অনেকে ঘৃণিতভাবে উচ্চারন করবে। তবে সে তার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানে একজন সাধারন মানুষ কখনো ইতিহাস গড়তে পারেনা। ইতিহাস গড়তে হলে সাধারন থেকে অসাধারন হতে হয়। রোমন তা হতে পারবে না। অসাধারণ হলে তাকে মানুষকে ঘৃণা করতে বাধ্য হতে হবে। কিন্তু মানুষকে ঘৃণা করতে পারেনা রোমন, তাই হয়তো তানিয়াকে নিয়ে আজও ভাবে ।
একাকিত্বের সময় যাদের সঙ্গ আশা করেছিলো রোমন, তাদের কাউকে পাশে পায়নি। কিন্তু আজও তাদের অপেক্ষায় আছে।
শেষ কবে রোমন নামে তাকে ডাকা হয়েছে আজ ভুলে গেছে। সম্ভবত তানিয়া শেষ এই নামে ডেকেছিল,কিন্তু সেও চলে গেছে। বদলানর কথা বলে যে এসেছিলো সেই চলে গেলো।
আজও মনে পড়ে সেই দিনের কথা, কলেজের প্রথম দিন অনুসন্ধিৎসু দুটি চোখ, খুঁজে চলেছে কাউকে, কিন্তু বারবার দৃষ্টি আছড়ে পড়ছে একজনের উপর,চেয়ে থাকতে চাইছে অনন্তকাল, অমর হওয়ার ইচ্ছা জাগিয়ে দিচ্ছে বারবার।

সে আজ নেই চলে গেছে অনেক দূরে। তানিয়া চলে গেছে। সে এসেছিলো পূব আকাশের সূর্যের মতো হয়ে কিন্তু হারিয়ে গেছে পশ্চিম আকাশে আর কখনো পূব আকাশে দেখা দেয়নি।
পেছনে দাড়িয়ে আছে কাফি।কিন্তু কাফির রোমন বলে ডাকার কারন খুঁজে পায়না সে, কিছুটা অবাক হয়। রোমন আবার ভাবতে থাকে, সবাই কি তাহলে ফিরে আসছে। তানিয়া তাহলে কি ফিরে আসবে।কিন্তু চলে যাবার যে কারন সে দেখিয়ে গেছে সে কারনগুলো আজও তার মাঝে বিদ্যামান। তানিয়া তো বদলে যাবার কথা বলেই এসেছিলো তবে তাকে কেন এভাবে ছেড়ে গেলো, এভাবেই কি তাহলে বদলাতে চেয়েছিলো!
কাফি খুব ধীরে হেঁটে এসে রোমনের ঘারে হাত রাখে। দূরে ঠেলে দেয়ার অভ্যাস অনিরামেয়। জীবনের বড় একটা সময় কেটে গেলো একাকিত্বে। পরিচিতদের ভিড় এড়িয়ে চলতে ইচ্ছা হয় এখন। তবে কাফিকে দেখে খুশি হয় রোমন। এখন সামান্য ভালবাসা পেতে ইচ্ছা করছে কারো থেকে।
ভীষণ অসহায়ত্বের সময় কেউ সামান্য সহানুভূতি দেখালে নিজেকে কুকুরের মতো মনে হয়, গা ঘেঁষে থাকতে ইচ্ছা করে।
রোমন চাই কেউ তাকে আগলে রাখুক এইসময়। তার আকাশ হয়ে থাকুক,বিদ্যুতের মতো হাতছিনি দিক, শঙ্খ শোনাক সেও তো তীর হারা ঢেউ এর সাগর পাড়ি দিতে চাই।


বিকেলের মেঘ মুক্ত আকাশ যা কারনে সূর্যের তাপ প্রখর। পশ্চিমের আকাশে ঢলে পড়েও ঠিক যেন মাথার উপর থেকে তাপ বিকিরণ করছে হিংসুটে সূর্যটা।
প্রতিদিনের ন্যায় আজও একটা বটগাছের নিচে এসে বসে রোমন।
প্রকৃতির দানের এই বটগাছতাই শুধু তার অনুকূলে ভাবে রোমন। বসে
থেকে মানুষ দেখে, বিহঙ্গের নীড়ে ফেরা দেখে আকাশের রঙ বদলানো দেখে প্রতিদিন।
আজ হঠাৎ করে পশ্চিমের আকাশ আবীর মেখে লাল হয়ে উঠে। রোমন চমকে যায়। পরক্ষনে আবার পুরো আকাশ কালো হতে শুরু করে। রোমন জানে এসব তার কারনেই হচ্ছে। প্রকৃতির সবকিছুই এখন তার প্রতিকূলে। হিংসুটে আকাশটা রোমনের ভালোলাগা সহ্য করতে না পেরেই নিজেকে কুৎসিত ভাবে প্রকাশ করছে। আকাশটা এখন আগের মতো নেই,আগের মতো এখন নুয়ে এসে তার গা ছুয়ে দেয়না, বৃষ্টি দেয়না ধুয়ে।
সবাই শুধু চলে যায়, হারিয়ে যায় ফিরে আসে না।
আকাশের হঠাৎ করে রঙ বদলানো দেখে অজানা শঙ্খায় চমকিত হয় রোমন।
তানিয়ার আসাটাও ছিলো এমন, গোধুলির মতো যা নিমিষেই চমকে দিয়েছিল।কিন্তু আজকের মতো করেই রোমনের আকাশ কালো করে চলে যায় সে।

হঠাৎ মাথায় কয়েক ফোটা তরলের উপস্থিতি টের পায় রোমন। নিশ্চিত হয়ে বসে থাকে তার প্রতিকুলে থাকা পাখিগুলো প্রতিদিনের ন্যায় আজও সেই মহৎকর্ম করেছে ভেবে। আজ ভীষণ দেখতে ইচ্ছা করছে হিংসুটে পাখিগুলোকে দেখতে। ওপরের দিকে তাকায় রোমন। পাতার ফাক দিয়ে কয়েক ফোটা পানি এসে পড়ে রোমনের মুখে অবাক হয় রোমন। পড়ে সেটা ঝুম বৃষ্টির রুপ নিতে শুরু করে। পাখির বদলে আজ আকাশ তার দিকে চোখ দিয়েছে, বৃষ্টি এভাবে তাকে এসে ধুয়ে দিবে, ভাবেনি রোমন। অবাক হওয়াটা স্বাভাবিক সে অবাক হয় সে।
বর্ষার নবধারা জলে স্নান করতে পারলে ভালো হতো। মনের সব গ্লানি ধুয়ে যেত। কিন্তু তা সম্ভব না গ্লানির সাথে মিশে আছে তানিয়ার চলে যাওয়ার স্মৃতি, চাইলেই তা ধুয়ে ফেলা যাইনা।

নিরাপদ আশ্রয়ে দৌড়ে এসে দাড়ায় রোমন। দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখে, লাল কৃষ্ণচুড়া দেখে, দেখে ভেজা শালিক, দুটো হাসের ডানা ঝাপটানো।
ধীর গতিতে চলে যাওয়া এক রিক্সা দেখে।কাকাভেজা সে রিক্সাচালকের দিকে দৃষ্টি রাখা যায়না। দৃষ্টি চলে যায় রিক্সায় বসে থাকা তানিয়ার দিকে। মুগ্ধ হয়ে তানিয়ার দুই হাত দিয়ে বৃষ্টি ধরা দেখে রোমন। চুড়ি বেয়ে পানি বেয়ে পড়ছে তানিয়ার। ভেজা শাড়িটি আঁকড়ে ধরেছে তানিয়াকে অন্য পাশ থেকে সযত্নে ধরে আছে একজন।
দৃষ্টি ক্রমাগত নিচের দিকে নামতে থাকে রোমনের।বৃষ্টি সিক্ত পিচঢালা পথ দেখতে থাকে রোমন। বড় আপন মনে হয় সেই পথ। সেই পথে পা বাড়ায়। পথ তাকে ডাকছে, বহু দিনের চেনা সে পথ।
রোমন হাঁটতে থাকে পথ ধরে। খুব ইচ্ছা করছে পিচধালা পথে গা এলিয়ে দিয়ে ভিজতে। ভীষণ ইচ্ছা করছে রাস্তায় মিশে যেতে,সব গ্লানি ধুয়ে ফেলতে।

প্রেমের নাম জোনাক পোকা

ভালোবাসার ফটোআমি সবাইকে 'অভ্র' নামে পরিচয় দিই । যদিও এই নাম আমার বাবা-মার দেওয়া না । তাই বলে এটা নকল নাম আর তাঁদের দেওয়াটা আসল নাম, তা না । দুইটাই আসল । শুধু পার্থক্য হল, ওইটা বাবা-মা রাখছে আর এইটা আমি রাখছি । তাঁরা ওইটা রাখার সময় গরু-ছাগল জবাই করে আকিকা দিছেন আর আমি একটা পাখিও না । পাখি বেশ বড় হয়ে যাচ্ছে । বলা যায় একটা মশা-মাছিও না ।
আচ্ছা নাম নিয়ে প্যাঁচাল করার কি দরকার? থাক না যেটা আছে সেটা । মানে 'অভ্র' আরকি...
এবার আমার মনের অবস্থা বলি । সত্যি কথা বলতে সেটার অবস্থা অত্যধিক খারাপ । অধিকতর খারাপ । পুড়ে একেবারে ছাই হয়ে গেছে । কারণ সে চলে গেছে আমাকে ছেড়ে । দুষ্টামি করে আগেও কয়েকবার গিয়েছিল । ফিরেও এসেছে । তবে এবার বেশ সিরিয়াস ভাবে গেছে । আমিও বুঝতে পারছি কতটা সিরিয়াস । সেজন্যেই মনের অবস্থা এতটা খারাপ । তাকে এবার আর ফেরানোর চেষ্টাও করিনি । সে আর এডজাস্ট করতে পারছেনা আমার সাথে । আমাকে সহ্য করতে পারছেনা । অবশ্য তাকেও দোষ দিতে পারছি না । আমি হয়ত আসলেই এমন অসহ্য । নিজেকে নিয়ে বেশ কনফিউজড আমি ।
এই মুহূর্তে আমি বেশ বিরক্ত । বিরক্তির মূল কারণ আমার পাশে হাঁটতে থাকা মেয়েটা । একই ভার্সিটিতে পড়ি । তবে মেয়েটা আমার জুনিয়র । মেয়েটাকে চিনি আগে থেকে । কিন্তু তেমন একটা কথা হয়নি । একটু আগে ভার্সিটি থেকে বের হওয়ার সময় দেখা হয়ে যায় মেয়েটার সাথে । সেও নাকি বাসায় যাবে । কিছুদুর একসাথে যাওয়া যাবে । তারপর দুজন দুদিকে ।
দেখা হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত একটা কাজ মেয়েটা ননস্টপ করে যাচ্ছে । সেটা হল কথা বলা । একটা সেকেন্ডের জন্যও মেয়েটার কথা বন্ধ হয়নি । মাথা ধরে গেছে আমার । তারপরও কিছু বলতে পারছিনা । আসলে কথা বলতেই ইচ্ছা হচ্ছে না । আর মেয়েটার থামার কোন লক্ষণই নেই । মেয়েটার গায়ের রং কালো । তবে চেহারায় একটা মায়া আছে । ভালো লাগার মত এই একটা জিনিসই আছে । যদিও আমার এখন ওইটাও ভালো লাগছে না ।

মেয়েটার কথার মধ্যে সব ধরনের কথা আছে । গতকাল কিভাবে হোঁচট খেয়ে পড়তে পড়তে বেঁচে গেছে সেটা থেকে শুরু করে আজকে সকালে তার বাবা তার সামনে তার মাকে চোখ টিপ মারা পর্যন্ত সব । তার বাবা মায়ের রোমান্টিক লাইফ আর রোমাঞ্চ নিয়ে সে খুব এক্সাইটেড । সে নিজেও এমন একটা রোমান্টিক লাইফ চায়, এটা পর্যন্ত বলে দিল । মেয়েটার সাথে আমার আজই প্রথম কথা হচ্ছে । আগে যা হয়েছে সব হাই হ্যালো কেমন আছো টাইপের । আজই প্রথম, আর আজই মেয়েটা এসব বলে দিচ্ছে । কি মনে করে বলছে ? কে আমি ? কিছুটা অবাকই হলাম । তবে সেটা প্রকাশ করলাম না ।
আর কিছুদুর হাঁটার পর দুজন দুদিকে যাওয়ার সময় এসে গেল । আমি ভদ্রতা দেখাতে বললাম
-একা যেতে পারবে ? বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিব ?
-অনেক ধন্যবাদ । খুব পারব একা যেতে । এত সহজে আমার বাসার ঠিকানা জানতে দিচ্ছি না আপনাকে ।
মেয়েটার জবাব শুনে আমি বেকুব হয়ে গেলাম । কি বলে এই মেয়ে ??
-আমি কি বলেছি আমি তোমার ঠিকানা জানতে চাই ?
-জানতে যে চান না সেটাও তো বলেননি ।
আমি কয়েক সেকেন্ডের জন্য চুপ করে গেলাম । এই মেয়ের মাথায় নিশ্চিত প্রবলেম আছে ।
-আচ্ছা যাও তাইলে । তোমার ঠিকানা ভালো থাকুক, সুখে থাকুক, যত্নে থাকুক । বিদায়...
-এমন ভাবে বলতেছেন যেন আর কখনো দেখা হবে না ।
-বলা যায় না...
মেয়েটা চলে যাচ্ছে । আমারও আর দাঁড়িয়ে থাকার ইচ্ছা নাই । ঘুরে পা বাড়াতে যাব এমন সময় মেয়েটা পিছন থেকে ডাক দিল । অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফিরলাম ।
-আমার নাম তো জানেন না মনে হয় । আমার নাম সুবহা ।
-আমি কি বলছি আমি তোমার নাম জানতে চাই ?
-জানতে চান না সেটাও তো বলেননি ।
বলেই মেয়েটা হেসে ফেলল । চোখে মুখে দুষ্টুমির ছাপ স্পষ্ট মেয়েটার । আমার আর কিছু বলার নাই তখন । আমি অবাক হয়ে সুবহা নামের মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রইলাম । মেয়েটার হাসিটা বেশ সুন্দর । দেখতে অনেক ভালো লাগছে । আমাকে ওইভাবে রেখেই মেয়েটা চলে গেল হেঁটে হেঁটে ।
পরদিন ভার্সিটিতে ক্লাসের পর দাঁড়িয়ে ছিলাম ফ্রেন্ডসদের সাথে । এমন সময় দেখলাম সুবহা নামের মেয়েটা আমাকে ডাকছে । ফ্রেন্ডসদের ঈঙ্গিতপূর্ণ চোখের চাহনি উপেক্ষা করে গেলাম ওর কাছে ।
-যাবেন না ?
-কোথায় ?
-কোথায় আবার ? বাসায় ?
-হুম যাব তো ।
-চলেন একসাথে যাই ।
আমার মোটেই ইচ্ছা নাই একসাথে যাওয়ার । তাই মিথ্যে বললাম ।
-আমার যেতে একটু দেরী হবে । তুমি চলে যাও ।
-ও...

মেয়েটা চিন্তা করছে । চোখমুখ অন্ধকার হয়ে গেছে । ভেবেছিল একসাথে যাবে । মন খারাপ হয়ে গেছে হয়ত । আমি নিজের চোখের সামনে সফলতা দেখতে পেয়ে মনে মনে খুশি । যাক একসাথে যেতে হবে না । বাঁচা গেছে । কিন্তু হঠাত মেয়েটার মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠাতে শংকিত হয়ে পড়লাম ।
-আচ্ছা আমি ওই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি । আপনার যাওয়ার সময় হলে বলবেন । আমি ওই পাশটায় আছি । ঠিকাছে ?
আমি মনমরা অবস্থায় বললাম, আচ্ছা ।
মেয়েটা একটু দূরে দাঁড়ানো আরেকটা মেয়ের সাথে কথা বলা শুরু করল । আমি আবার বন্ধুদের কাছে ফিরে গেলাম । সবাই জানতে চাইছে মেয়েটা কে ? আমার সাথে কি ওর ? আমার তখন কিছু বলার মুড নাই । মেজাজটা খারাপ হয়ে গেছে, নিজের উপর । জানি না কেন হয়েছে ।
বেশীক্ষণ দাঁড়ালাম না আর । লাভ নেই কোন । আগে যাই বা পরে, মেয়েটার সাথেই যেতে হবে । শুধু শুধু দাঁড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করার দরকার নাই কোন ।
ভার্সিটি থেকে বের হয়েই আমাকে সে হুকুমের সুরে বলল, একটা রিক্সা ঠিক করেন ।
মেজাজ এমনিতেও খারাপ । তার উপর এইরকম কথা শুনে সেটা আরো বাড়লো । সরাসরি বলে দিলাম, পারবোনা । তুমি কর ।
আমার যে মেজাজ খারাপ এটা সুবহা মনে হয় খেয়ালই করেনি ।
-বলেন কি ? আপনি একটা মেয়েকে এভাবে রিক্সা ঠিক করতে বলতেছেন ?
-কেন ? মেয়েরা রিক্সা ঠিক করলে কোন সমস্যা আছে ?
-নাহ । কিন্তু যখন সাথে কোন ছেলে থাকে তখন তো করে না ।
আমার তর্ক করতে ইচ্ছা করছে না । এই মেয়ের সাথে তর্ক করে ফায়দা নাই । ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজের কথাটাই সত্য প্রমাণ করতে ব্যস্ত থাকবে । সব মেয়েই কি এমন ? শিওর না ।

রিক্সা ঠিক করলাম একটা । রিক্সাওয়ালার বয়স বেশি না । রিক্সায় উঠেই আমি বললাম, মামা হুডটা তুলে দেন তো ।
তখন সুবহা বাধা দিল ।
-রোদ নাই তো । হুড তোলার কি দরকার ?
-না মানে..
-আমরা কি প্রেম করতেছি নাকি । এত ভয়ের কি আছে ? থাকুক এরকম ।
আমার এখন অধিক শোকে পাথরের মত অবস্থা । নিজেকে একটা পুতুল মনে হইতেছে । যাকে নিয়ে ইচ্ছামত যা খুশি করা যায় । ইচ্ছা হলে হাত একটা চাপ দিয়ে ভেঙ্গে ফেলা যায় । আবার চাইলেই লাগিয়ে দেয়া যায় । বড়ই শোচনীয় অবস্থা ।
এরপর বেশ কয়েকটা দিন কেটে গেছে । সবকিছু পাল্টে গেছে এই কদিনে । যেই মেয়েটাকে বিরক্ত লাগত অনেক, সেই সুবহা নামের মেয়েটাকেই এখন অনেক ভালো লাগে । বেশ ভালো বন্ধু আমরা । অনেক কথা বলে সুবহা । এত কথা কোথা থেকে যে বের হয় কে জানে । তবে আমার এখন আর শুনতে খারাপ লাগে না । একবার ভালোবাসা নিয়ে ওর ইচ্ছার কথা বলেছিল ।
-জানো আমার খুব শখ কাউকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসবো । সেও মন প্রাণ দিয়ে আমাকে ভালোবাসবে ।
-তোমাকে ভালোবাসবে ? হাহ...
-কেন ? আমাকে ভালোবাসা যায় না ?
-তুমি যে কত কথা বল সেটা শুনলেই ভালোবাসার সাধ মিটে যাবে । পালাবার রাস্তা খুঁজবে তখন ।
-বলছে তোমাকে..
-বলতে হবে কেন ? আমি জানি ।
-হইছে । চুপ । আমি এখন রেগে গেছি । আমার সাথে তিন মিনিট কথা বলবা না ।
-আচ্ছা ।
বরাবর তিন মিনিট পর...
-জানো আমি যাকে ভালোবাসবো তাকে বলে দেব যে সে আমাকে 'জোনাক পোকা' ডাকতে হবে ।
-মানে কি ? জোনাক পোকা ডাকতে হবে কেন ?
-আমার ইচ্ছা । আমার ভালো লাগে ।
-বাহ । ইন্টারেস্টিং...
আমি সুবহাকে নিয়ে কখনো ভালোবাসা সম্পর্কিত কিছু চিন্তা করিনি । ইচ্ছা হয়নি কখনো । এসবে তেমন আগ্রহ নাই । কিন্তু কিছুদিন পর থেকে যখন সুবহা কোন ছেলের সম্পর্কে ভালো কিছু বলত, তখন রাগ হত । ওরে কিছু বলতেও পারতাম না । মানাও করতে পারতাম না । এসব শুনলে ও নিশ্চিত হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাবে ।
আমার নিজেরই বা এমন হচ্ছে কেন ? ও কোন ছেলের সম্পর্কে ভালো কিছু বলতেই পারে, এতে আমার রাগ করার কি আছে ? নিজেকে নিজেই বুঝতে পারতেছি না । হতে পারে এতদিন একসাথে থাকার ফলে আমি চাই সুবহার সবকিছুই 'আমি' কেন্দ্রিক হোক । আমি চাই ওর সবকিছুতে শুধু আমি থাকতে ।

আরো কিছুদিন পর ব্যাপারটা পরিষ্কার হল আমার কাছে । নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করলাম । আমি ওই সুবহা নামের মেয়েটার প্রেমে প্রচন্ড জোরে আছড়ে পড়েছি । ওঠার শক্তি নেই ।
আমি এখন এ ব্যাপারে শিওর এবং আমার উচিত যত তাড়াতাড়ি পারি ওকে এসব বলে দেয়া । এসব ব্যাপারে দেরি করা ঠিক না । মাঝখানে অন্য কেউ এসে ঢুকে পড়তে পারে ।
দিন তারিখ ঠিক করে ফেললাম । মনে মনে প্রস্তুতি নিতে থাকলাম । নির্দিষ্ট দিনে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম । কোন ফুল-টুল কিচ্ছু আনি নাই । টেনশনে এতকিছু মনে ছিল না । এখন শুধু একটাই চিন্তা, ওরে জানাতে হবে সব । এই কয়দিন ওর সাথে তেমন যোগাযোগ হয়নি । তাই আমার উপর কিছুটা রেগে আছে ও ।
-সুবহা... এই সুবহা...
-চিল্লাচ্ছ কেন ? বল..
-না মানে... আসলে...
-কি মানে ? কি আসলে ? যা বলার ঠিকভাবে বল । এইভাবে একবার এদিকে একবার ওইদিকে দুলতেছ কেন ? সোজা হয়ে দাঁড়াও... এবার বল...
-আসলে... আমি আসলে... তুমি... মানে...
-আজব তো । এইভাবে আমি তুমি করতেছ কেন ? তুমি বলবা ? নাইলে আমি যাচ্ছি... বাই...
-আরে দাঁড়াও না বলছি ।
-হুম...
-আমি... তোমাকে... মানে তোমাকে আমার জোনাক পোকা করতে চাই । তুমি কি আমার জোনাক পোকা হবে ? প্লিজ...
কথাগুলো বলেই আমি চোখ নিচের দিকে নামিয়ে ফেললাম । সুবহা কি করবে দেখার সাহস নাই । জানি না কি হবে । চুপ করে আছে ও । একবার কি ওর দিকে তাকাবো ? না থাক । রিস্ক নেওয়ার দরকার নাই ।
বেশ কিছুক্ষণ পর সুবহা স্বাভাবিক ভাবেই বলল, যাও রিক্সা ঠিক কর একটা ।

আমি বাধ্য ছেলের মত রিক্সা ডাকলাম । রিক্সায় উঠে পড়লাম আগেই ।
-তুমি বাম পাশে বসলে কেন ? বাম পাশে মেয়েরা বসে । যাও ডান পাশে যাও...
গেলাম ডানপাশে । এখনো আমি ওর চোখের দিকে তাকাতে পারিনি । জানিনা কি না কি দেখব তাকালে । সুবহা রিক্সায় উঠে রিক্সাওয়ালাকে বলল, মামা হুডটা তুলে দেন তো ।
সুবহা হঠাত আমার হাতটা ধরতেই আমি ওর দিকে তাকাবার সাহস পেলাম । সামনের দিকে তাকিয়ে আছে ও । দৃশ্যপট পাল্টে গেছে । এখন ও আমার দিকে তাকাতে পারছে না । লজ্জা পাচ্ছে । আমি ওর হাতটা শক্ত করে ধরলাম । আমার এখন পাগলের মত চিত্কার করে গাইতে ইচ্ছা করতেছে,
তোমার হাত ধরে কাটিয়ে দিব সারা জীবন এমন করে করে । 

যে কারণে মধ্যবয়স্ক নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয় তরুণরা

indian girl photoলক্ষ লক্ষ অবিবাহিত ও সুন্দরী তরুণী বিস্মিত হন এই ভেবে যে কেন ছেলেরা তাদের চেয়ে মধ্যবয়স্ক নারীদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়।


দিন দিন এই ধরনের সম্পর্কের মাত্রা বেড়েই চলেছে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। মধ্যবয়স্ক নারীর মধ্যে শারীরিক ও চারিত্রিক বহু আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট আছে। আর এগুলো তারা সুন্দরভাবে মেলেও ধরতে পারেন। ছেলেরা এই লুকায়িত সৌন্দর্যই খুঁজে বেড়ায় এবং এতে মুগ্ধ হয়। সবচেয়ে বড় কথা সুন্দরী, অবিবাহিত তরুণীরা যত আকর্ষণীয় হোক না কেন একজন মধ্যবয়স্ক নারীর পূর্ণতার কাছে অনেক ক্ষেত্রেই আনাড়ি তারা। নিষিদ্ধের প্রতি তরুণদের এ আকর্ষণ চিরন্তন।


এখন অনেক ছেলে মধ্যবয়স্ক নারীকে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় অনেকটাই উন্মুখ। এ ব্যাপারটা প্রকাশেও তারা কোন রাখঢাক রাখছে না। এই হার ক্রমশই বেড়ে চলেছে। কিন্তু কেন? বিশেষজ্ঞরা কিছু কারণ খুজেঁ বের করেছেন।


আত্মবিশ্বাস


একজন মধ্যবয়স্ক নারী এটা ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারেন যে তারা অন্যদের চেয়ে আলাদা। তিনি নিজের সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন। আর তাই তার ভেতরটা আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ থাকে। এই ভারসাম্য ও আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাবই তাকে ভেতর থেকে তীব্র আবেদনময়ী ও আকর্ষণীয় করে তোলে। আত্মবিশ্বাসী নারীরাই পুরুষের কাছে কাম্য। আত্মবিশ্বাসী নারীরা ছকবাঁধা নিয়মে চলতে পছন্দ করে, তারা নিজের জগতে কখনও সন্ত্রস্ত হয় না।


নারীর এই দৃঢ় রূপ ও আবেদনময়ী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে ছেলেরা মুগ্ধ হয়। তাই ক্রমশ: পুরুষ একজন মধ্যবয়স্ক নারীর প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। এই ধরনের নারীর সাথে সময় ব্যয় করা করা খুবই সহজ, তার চাওয়া থাকে খুব কম। তার সঙ্গ উপভোগ্য এবং জীবন সম্পর্কে টলটলে জলের মত স্বচ্ছ ধারনা রয়েছে তার। তাদের আত্মবিশ্বাস পুরুষের মাঝে সঞ্চারিত হয় কম নাটকীয়তা ও অবাধ আনন্দের সাথে।


দায়িত্বশীলতা


একজন মধ্যবয়স্ক নারী নিজেকে গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করেন। নিজে কী চান সেটা তারা ভালো করেই জানেন তাই তাদের লক্ষ্য স্থির ও স্বচ্ছ থাকে। মধ্যবয়স্ক নারীই পারে একজন মানুষকে জীবনের আঁকাবাঁকা পথ চেনাতে, আস্থা তৈরি করতে, ওপরে উঠার প্রবল ইচ্ছাশক্তি তৈরি করতে এমনকি প্রবল আত্মসম্মানবোধ তৈরি করতে। জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি একটি মানুষকে কল্পনার জগতে ভেসে বেড়াতে নয়, জীবনের অমোঘ বাস্তবতা শেখাতে পারেন। এটি একজন তরুণের কাছে নির্ভরতার জায়গা।


স্বাধীনতা


সাধারণত অধিকাংশ মধ্যবয়স্ক নারী কোন ভনিতা ছাড়াই পুরোপুরি খুশি থাকে। একজন পুরুষকে তার আবশ্যিক করে তোলার কোন দরকার পড়ে না। তিনি কখনোই তার ওপর নির্ভর করেন না, এমনকি তার নিজের ডিনার অথবা কফির বিল নিজেই দেয়ার মানসিকতা রাখেন।


আপনি কি কোন জটিল মানসিক গেম আপনার প্রিয়জনের সাথে খেলতে পারবেন? ভালো করে চিন্তা করে দেখুন। মধ্যবয়স্কা নারীরা কখনোই কোন গেম খেলতে যান না কারন তাঁরা ভালো করে জানেন তাঁদের কী প্রয়োজন। মানসিক এবং আর্থিক স্বাধীনতা একটি মানুষের জীবনের গুরুত্বপুর্ণ অর্জন।


সততা


একজন মধ্যবয়স্ক নারী পুরুষকে বিশ্বাস এবং সততার স্তরগুলো ভালোভাবে শিখিয়ে নিতে পারেন। প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ে যে কোনো ধরনের সম্পর্কেই শ্রদ্ধা একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ ব্যাপার। মধ্যবয়স্ক নারী তার দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দেন। তার মধ্যে সততা, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধাবোধ প্রবল থাকে। একজন মধ্যবয়স্ক নারী কখনোই একাধিক পুরুষের প্রতি কামনা রাখেন না। যে পুরুষটি অন্য একাধিক নারীদের সাথে ডেট করছে তার প্রতি এ নারীরা কখনোই আগ্রহ প্রকাশ করেন না।


অভিজ্ঞতা


একজন মধ্যবয়স্ক নারী জীবনে একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন তাই তার অভিজ্ঞতাও অনেক। জীবনের ছোটখাট সবধরনের সম্পর্কের অভিনয় তিনি নিখুঁতভাবে বিবেচনা করতে পারেন । এটা কীভাবে সমাধান করা যায় যায় সেটাও তিনি ভালো জানেন। মধ্যবয়স্ক নারী যথাসময়ে আবেগী হয়ে ওঠেন এবং পুরুষটির সাথে সত্যিকার গাঢ় সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করেন। তিনি প্রিয় মানুষটির কাছে নিজেকে এমন ভাবে মেলে ধরেন যাতে সেই মানুষটি তাকে সহজভাবে পড়তে পারে। ফলে তিনি একজন ভালো মানুষ, একজন ভালো বন্ধু, এমনকি দীর্ঘ চলার পথে ভালো একজন সঙ্গী হতে পারেন।


পারস্পরিক বোঝাপড়া


একে অপরের মধ্যে যদি বোঝাপড়া ভালো না হয় তাহলে সম্পর্কের শুরুতেই হোঁচট খেতে হয়। তীব্র আগ্রহ মুখ থুবড়ে পড়ে। সম্পর্কের মধ্যে বোঝাপড়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। অর্থময় বোঝপড়া সম্পর্ককে আনন্দময় করে তোলে। আর এটা গড়ে ওঠে মধ্যবয়স্ক নারীর জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ারের মাধ্যমে। পারস্পরিক কথোপকথন জীবনের গল্পকে থামিয়ে দিবে না, বরং জীবনের গতিকে বাড়িয়ে দেবে। পরস্পরকে ভালো করে বুঝে ওঠার পথ তৈরি করে দেবে। যে পুরুষটি শুধু সেক্স এবং একটু মুগ্ধতার চোখে তাকানোর জন্য অপেক্ষা করতো সেই পুরুষটির মধ্যেও এই নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জেগে ওঠে।


নিবিড় যৌন সম্পর্ক


বিছানায় একজন মধ্যবয়স্ক নারী যথেষ্ট অভিজ্ঞ, সে তার চরম মুহূর্তের চাওয়া পুরুষটিকে বলতে দ্বিধা করে না। তৃপ্তিময় যৌনতায় তিনি সব ধরনের অনিরাপদ ভীতিকর ব্যাপারগুলোর উর্ধ্বে থাকেন। এই খোলামেলা সততাই দুজনকে সুখের চরম পর্যায়ে নিয়ে যায়। আমরা যদি কাউকে `সেক্সুয়ালি স্যাটিসফাইড` বলি সেটা অবিশ্বাস্যভাবে সেই ব্যক্তিকে আত্মবিশ্বাসী ও ভেতর থেকে সতেজ করে তোলে। মধ্যবয়স্ক নারীর এই ধরনের গুনাবলী একজন পুরুষকে সহজেই সন্তুষ্ট করে। অন্যান্য বড় কারণ ছাড়াও এই কারণে মধ্যবয়স্ক নারীর প্রতি পুরুষেরা বেশি আকৃষ্ট হয়। এ নারীরা বিছানায় অত্যাধিক প্লেফুল, রোমাঞ্চকর হন। পুরুষটির মাঝে নিজেকে উৎসর্গ করে দিতে পারেন।


মধ্যবয়স্ক নারীর মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে যা তাকে তার সঙ্গীর সাথে গভীরভাবে যুক্ত করে। এখন পুরো ব্যাপারটাই সেইসব পুরুষদের হাতে যারা উদারমনষ্ক, আত্মবিশ্বাসী, আবেদনময়ী এবং স্বনির্ভরশীল নারীদের নিকট হতে শিখতে দ্বিধাবোধ করে না।

বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৩

বাংলালিংক দামে ভালবাসা

bhalobasar photoএকটি কমেডি ধাঁচের রোমান্টিক গল্প । সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই)
আমার একটা ফ্রেন্ড আছে । নিক নেম অর্ন্বেষা । অনেক সুন্দর একটা নাম । কিন্তু সমস্যা তার মূল নামে ! নিক নেমের মতই মডার্ণ এই মেয়ের ভাল নাম সোহাগী খাতুন ! এইডা কিছু হইল ?
তার নাম নিয়ে আমার একটা নিজস্ব ধারণা আছে । আমার ধারণা তার প্রকৃত নাম ছিল সোহাগী খাতুন কুলসুম টাইপ কিছু একটা । যেহেতু নিক নেম সার্টিফিকেটে উল্লেখ নেই তাই আকীকা ছাড়াই কুলসুম পাল্টে নিজে নিজেই অর্ন্বষা রেখে দিয়েছে !
তবে ভাল নাম নিয়ে ভালই বিব্রত সে ! আর সুযোগ পেলে নাম নিয়ে তাকে ক্ষেপানোর সুযোগ কিছুতেই ছাড়ি না আমি- বিশেষ করে মনে যখন গুঁতুগুঁতু ভাব থাকে !!
আমার একটা মারাত্মক সমস্যা আছে । আমার মনে মাঝে মাঝে গুঁতুগুঁতু ভাবের উদয় হয় ! আর তখন কুতুকুতু টাইপের এমন কিছু কাজ করি যার স্বাভাবিক কোন ব্যাখ্যা নেই ! যাদের মনে মাঝে মাঝে আমার মতই গুঁতুগুঁতু ভাবের উদয় হয় কেবল তারাই এ সমস্যাটা বুঝতে পারবেন, বাকিরা নয় !!
তো একদিনের কথা । বসে বসে কমেডি মুভি দেখছিলাম । এমন সময় হঠাত্‍ গুঁতুগুঁতু ভাবের উদয় হল ! কি করা যায় কি করা যায় ভাবতে ভাবতে কিছু না ভেবেই ফোন লাগালাম অর্ন্বষাকে ! কন্ঠ যথাসম্ভব গম্ভীর ছিল ।
:- হ্যালো, সোহাগী বলছ ?
:- ইঁইঁইঁইঁ ! I will kill you !! (:@)
:- চুপ বেডী ! তোর লাইগ্যা আঁর হোলা খাবা দাবা বন্ধ করি মইরবের অবস্থা ! তুই কি জাদুটোনা করসছ শয়তান বেডী ? আঁর হোলারে অবনো ঠিক করি দে কইলাম ! নইলে তুই যেট্টে হলাবি হলা, তোরে হেট্টে আই মাইরালামু !!
:- ইয়ে......... কে....কে...কে বলছেন ?
:- কে কইতাছেন ? আই মিথুনের আব্বা কইতাছি ! তুই অবনো আঁর..............
:- কোঁত্‍ ! কোঁত্‍ ! কোঁত্‍ !
লাইন কেটে গেল । মনে মনে এক চোট হেসে নিলাম । বেচারী মনে হয় একটু বেশীই ঘাবড়ে গিয়েছিল ! তা না হলে আমার আর আমার আব্বার কন্ঠের পার্থক্যটুকু অবশ্যই ধরতে পারত !!
এমন একটা কুতুকুতু কাজ করার পর মনের গুঁতুগুঁতু ভাবটা কিছুটা উপশম হল ! বসে বসে আবার মুভি দেখতে লাগলাম ! তখনও কি জানতাম যে পরের দুই ঘন্টায় আমার জীবনের সবচেয়ে লুতুপুতু কান্ডটি ঘটে যাবে !?
দুই ঘন্টা পরের কথা । মুভিতে মশগুল হঠাত্‍ মোবাইলটা ঘ্যোঁত্ ঘ্যোঁত্ শব্দে ভাইব্রেট করে উঠল । হাতে নিয়ে দেখলাম অর্ন্বেষার মেসেজ- Mithun, tui jodi ai msg ti peye thakos, ai muhurte reply de. It's urgent !!
মনে মনে ঝাড়ি খাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে মেসেজের রিপ্লে দিলাম- Msg to paichi. Kintu hotat urgent tolob ! Kahini ki mam ?
সাথে সাথেই ফোন ! ভয়ই পেলাম । মেয়ে এত ক্ষেপছে কে জানত ?
:- হ্যালো মিথুন........
ওর ফোন দেখে ভয় পেয়েছিলাম ! কিন্তু ওর কন্ঠস্বর শুনে ভয়টা দুশ্চিন্তায় রূপ নিল ! ঝাড়ি খেয়ে মেয়ে হার্ট অ্যাটাক করে নাই তো আবার ! তাইলে যে আমার খবর আছে !!!
আমরা যখন কাউকে আদুরে গলায় ফিসফিস করে ডাকি, ফিসফিস করে কথা বলি, ঠিক সেভাবেই সে বলল- হ্যালো মিথুন......
:- কি রে ? কি হইছে ? এভাবে কথা বলছস ক্যান ?
:- তুই নাকি খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ করে দেবদাস হয়ে যাচ্ছস ?
:- কে বলছে তোরে ?
:- কে বলছে সেটা বড় কথা না ! সত্যি কিনা সেটা বল ?
:- না । মিথ্যা কথা !
:- চুপ গাধু ! এখনো তো ঠিক করে মিথ্যা বলাও শিখস নাই !
:- কি বললি তুই ?
:- বলছি তুই একটা গাধু !
:- ঐ ? তুই ঠিক আছস তো ! হইছে টা কি তোর ?
:- আমার কিছু হয় নাই ! তোর কি হইছে সেটাই ভাবতেছি ! আচ্ছা তুই এত বোকা ক্যান রে ?
:- আরে আজিব ! কি হইছে সেটা তো বলবি ?
:- তুই আমারে এত পছন্দ করছ, এত ভালবাসছ সেটা তুই বলবি না ? কিন্তু আমারে কিছু বলার বদলে তুই খাওয়া দাওয়া ছেড়ে একেবারে দেবদাস হয়ে যাইতেছস ! ভাগ্যিস আঙ্কেলে ফোন দিয়ে আমারে বলছিল ?
:- কোন আঙ্কেল ? কখন ফোন দিছিল ? কি বলছিল !?
:- তোর আব্বা ! গাধু ! তুই আমাকে ভালবাসছ এটা তুই আমাকে বললেই পারতি ! আমিও তো তোকে প্রথম থেকেই একটু একটু পছন্দ করতাম ! আর তুই গাধু কিনা.........
মনে মনে বললাম- ধরণী, দ্বিধা হও । তোমার ভিতরে হান্দানো (!) ছাড়া আমার আর কোন গতি নাই !!
কিন্তু ধরণী দ্বিধা হল না ! অগ্যতা মুখ খুলতেই হল !
:- অর্ন্বেষা, শোন । তুই আমার কথাগুলো একটু বুঝার চেষ্টা কর । আসলে........
:- শোন, আমার বুঝাবুঝির কোন দরকার নাই ! যা বুঝার আমি তা বুঝে গেছি ! এখন তুই আমার কথা মন দিয়ে শোন । আমি রিফিউজ করবো- এই ভয়েই তো তুই খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিছস !? এখন তো জানলি যে আমিও তোকে ভালবাসি ! এখন এসব ভান্ডামি বাদ দিয়ে ঠিকমত খাওয়া দাওয়া কর । নইলে আঙ্কেল আবার আমাকে ঝাড়া শুরু করবে !
:- তুই একটু আমার কথা শুনবি ? আসলে ছোট্ট একটা মিস আন্ডারেস্টিং হচ্ছে !
:- কোন মিস আন্ডারেস্টিং হচ্ছে না । বরং এতদিন পর ঠিক আন্ডারেস্টিংটাই হচ্ছে ! জানিস, আমি সবসময়ই ভাবতাম যে তুই রাজপুত্রের মত এসে আমাকে প্রপোজ করবি ! কিন্তু তুই যে এরকম একটা গাধার মত কাজ করবি সেটা কখনো ভাবি নাই ! যাই হোক, গাধামি অনেক হইছে । আর না । এখন ফোন রেখেই খেতে যাবি । ঠিক আছে ?
আমি জানতাম ! আমি আগে থেকেই জানতাম যে একদিন এই গুঁতুগুঁতু কাজকর্মের কারণে অনেক বড় ভেজালে জড়িয়ে পড়বো ! তবে এমন লুতুপুতু ঝামেলায় পড়ব সেটা ভাবিনি ! যাই হোক, এখন আর তাকে কিছু বলতে চেষ্টা করে লাভ হবে না ! যা হবার তা হয়েই গেছে । অগ্যতা কন্ঠ মেলালাম !
:- হ্যাঁ ঠিক আছে !
:- কাল ক্যাম্পাসে আসবি কিন্তু ।
:- আচ্ছা আসবো ।
:- অনেক কথা বলার আছে তোকে ! কাল প্রাণ খুলে দুজন কথা বলব ।
:- আচ্ছা ।
:- আচ্ছা ঠিক আছে । এখন রাখি । শরীরে যত্ন নিস তুই ।
:- আচ্ছা নিবো ।
:- যা ! খেতে যা....
:- যাই !
:- বাই ।
:- বাই !
কি ভুলটাই না বুঝল মেয়েটা ! ওর ভুল ভাঙ্গানোর দরকার ছিল । বলা উচিত ছিল- মেয়ে ! আমি মোটেও তোর প্রেমে পড়ি নাই ! ওটাতো জাস্ট একটা ফান ছিল !!
কিন্তু আমি কিছুই করি নি ! বাংলালিংক দামে ভালবাসা পাইছি ! এসব বলে তা কি আর হাতছাড়া করবো ? আমি বোকা হলেও এত বোকা না।

রূপচর্চায় কাঁচা হলুদের কিছু জাদুকরী ব্যবহার

hot girls
হলুদ আমাদের প্রত্যেকের রান্নাঘরে ভীষণ সহজলভ্য একটি উপাদান। হলুদ ব্যতীত বাঙালিদের রান্না যেন কল্পনাই করা যায়না। সেই প্রাচীন কাল থেকেই হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে নানান রকম চিকিৎসায় আর সেই সাথে কাঁচা হলুদ রূপচর্চার অন্যতম উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ। কাঁচা হলুদে আছে অ্যান্টি এজিং উপাদান, তাই ত্বক হতে বয়সের ছাপ দূর করতে হলুদের জুরি মেলা ভার। আবার অন্যদিকে হলুদ অ্যান্টি সেপটিক হিসাবেও চমৎকার কাজ করে, তাই ব্রণ দূর করতে বা ক্ষত সারাতেও অতুলনীয়।আসুন জেনে নেই সৌন্দর্য চর্চায় কাঁচা হলুদের কয়েকটি অনবদ্য ব্যবহার।

ব্রণের চিকিৎসায়-

ব্রণ সারাতে হলুদের মতন চমৎকার প্রাকৃতিক উপাদান খুব কমই আছে। ব্রণের ইনফেকশন কমানো হতে শুরু করে ব্রণের দাগ দূর করা পর্যন্ত হরেক রকম ব্যবহার আছে এর। নিম্নে রইলো সেগুলোর মাঝে কয়েকটি।

১)ব্রনের প্রচুর ব্রণ ওঠে তাদের জন্য কাঁচা হলুদ জাদুর মতো কাজ দেয়। ব্রনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কাঁচা হলুদ বাটা, আঙ্গুরের রস ও গোলাপ জল মিশিয়ে ব্রনের উপরে লাগান। কিছু সময় পর ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ মিলিয়ে যাবে ও ইনফেকশন হবে না।
২)কাঁচা হলুদ বেটে রস করে নিন। এই হলুদের রসের সাথে মুলতানি মাটি ও নিমপাতার রস এক সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে ফেস প্যাকের মতন মুখে লাগান। প্যাক শুকিয়ে এলে গোলাপজল দিয়ে আলতো হাতে ম্যাসাজ করে করে নিন এবং পানির সাহায্যে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের প্রকোপ কমবে।
৩)ব্রনের দাগ দূর করতে কাঁচা হলুদ ও নিমপাতা বেটে দাগের উপর লাগান। কিছুদিন লাগালে দাগ মিলিয়ে যাবে।
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করতে-
যুগে যুগে কাঁচা হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক পাবার আকাঙ্ক্ষায়। তবে ব্যবহার করতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে।

৪)কাঁচা হলুদ বাটা,বেসন, চালের গুঁড়া ও টক দই একসাথে মিশিয়ে নিন। এবার সারা মুখে ও গলায় লাগান। শুকিয়ে গেলে হালকা হাতে ঘষে তুলে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে তিনদিন লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হবে।

৫)কাঁচা হলুদ ও মসুর ডাল একত্রে বেটে নিয়ে সাথে মুলতানি মাটি ও গোলাপজল সহযোগে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগান। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।
৬)কাঁচা হলুদ ও শুকনো কমলার খোসা একত্রে বেটে স্ক্রাবার হিসাবে পুরো শরীরে ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে আসবে অন্য রকম জেল্লা।
বলিরেখা, রোদে পোড়া ও অ্যালার্জির জন্য-
৭)বলিরেখা দূর করতে কাঁচা হলুদের সাথে দুধের সর মিশিয়ে মুখে মাখুন ফেস প্যাক হিসাবে। নিয়মিত লাগালে অবশ্যই দারুন উপকার পাবেন।
৮)রোদেপোড়া দাগ কমাতে মসুর ডালবাটা, কাঁচা হলুদবাটা ও মধু একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান।
৯)যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে হলুদ মেশানো পানিতে গোসল করলে অ্যালার্জি ও র‍্যাশের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
মনে রাখবেন হলুদ দিয়ে কখনো রোদে বের হবেন না, তাহলে ত্বক পুড়ে কালো হয়ে যাবে। আর তাই হলুদ দিয়ে রূপচর্চা করবেন রাতের বেলা। কখনোই দিনের বেলা নয়।

কি সুন্দরী তুমি

বাংলা মেয়েদের ফটো

কি সুন্দরী তুমি
হাওয়ার আদরে তোমার চুল উড়ছে
এই তো কাছে দাঁড়িয়ে তুমি।
আকাশের চাঁদের পানে চেয়ে দেখি
নক্ষত্ররা গোল মিটিঙে বসেছে
সবাই শুধু তোমার কথা বলছে।
আমি অবাক হয়ে ভাবছি
কি সুন্দুরী তুমি
জোত্স্নার নীল আলো আমার চোখে
তোমার প্রেমে মুগ্ধ আমি।
তোমার শেওলা রঙের শাড়ির আঁচলে
জোত্স্নার জারিজুরি ,কাটাকুটি
তুমি হাসছো ,হাসছো আমার চোখে।
আকাশের চাঁদে আজ পূর্ণতা
সেই আলো জড়িয়ে তোমার মুখে।
নেমে যাচ্ছে তোমার থুতনি বেয়ে তোমার শরীরে
অসাধারণ এক কবিতার মতো
আমি ছুয়ে যাচ্ছি তোমায়
ভেসে যাচ্ছি জোত্স্নার আলোয় তোমার বুকে।

কিস নিয়ে ১০টি মজার তথ্য

কবিতা
ফেব্রুয়ারী ৫ হচ্ছে আন্তর্জাতি ক চুমু দিবস।২সাধারন চুমুতে প্রতি মিনিটে ২৫ ক্যালোরি এবং গভীরভাবে চুমুতে ১০০ ক্যালোরি পর্যন্ত শক্তি প্রয়োজন! ৩ চুমু সম্বন্ধে যে বিদ্যা তার নাম Philematology! ৪ প্রেমিক প্রেমিকাদের মস্তিস্কে এক ধরনের নিউরন থাকে যা তাদেরকে অন্ধকারেও একজন আরেকজনের ঠোঁট খুজে পেতে সাহায্য করে! ৫ পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ চুমুর রেকর্ড হচ্ছে ৩৩ ঘন্টা ১৮ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড! এটা করা হয়েছিলো ২০১০ সালের ভ্যালেন্টাইনস ডে তে। এই যুগলের পরে অক্সিজেন দিয়ে ট্রিটমেন্ট দিতে হয়েছিলো। ৬ সিনেমাতে সবচেয়ে দীর্ঘ চুমুর রেকর্ড হচ্ছে ৩ মিনিট পাঁচ সেকেন্ড্ । সিনেমার নাম “You’re in the Army Now” (১৯৪১ সালের)। ৭ মূল ধারার এক সিনেমাতে সবচেয়ে বেশী চুমুর রেকর্ড ১২৭ বার Don Juan (১৯২৭ সালের) সিনেমাতে! ৮ আমরা যেটাকে ফ্রেন্চ কিস হিসেবে জানি ফ্রান্স এ তার নাম Embrasser Avec la Langue ।! ৯ পুরুষের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষনীয় ঠোট? জরিপ অনুযায়ী এনজেলিনা জোলী! ১০ চুমু খেতে ভয় পান? তবে আপনার Philematophobia হয়েছে!