সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০১৪

অবাক কাণ্ড



নেশাগ্রস্ত হলিউডের তারকাদের সংখ্যাটা নেহাতই কম নয়। এবার এই তালিকায় নাম লেখালেন 'প্রিন্সেস প্রোটেকশন প্রোগ্রাম'খ্যাত মার্কিন অভিনেত্রী ও গায়িকা সেলেনা গোমেজ। মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল আসক্তির পাশাপাশি গাঁজা ও অনিদ্রা রোগের ওষুধ অ্যামবিয়েন সেবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন ২১ বছর বয়সী এ তারকা। নেশার করাল গ্রাস থেকে নিজেকে মুক্ত করতে গত জানুয়ারিতে ৪৫ দিনের জন্য দ্য মিডোস মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন সেলেনা। কিন্তু ১৬ জানুয়ারি সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেবেন বলে দ্য মিডোস থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ছুটি নেন তিনি। ছুটি নিলেও পরে আর মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ফিরে যাননি।

সর্বরোগের ঔষধ চুম্বন


kiss,cumuপ্রথম চুম্বনের স্মৃতি সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই স্মৃতি মানুষ সহজে ভোলে না। চুম্বন দু'জন মানুষকে একসূত্রে বেঁধে দেয়। আর এই চুম্বনে রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা।

- চুম্বন প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি ঝড়াতে সক্ষম। আর তাই ওজন কমতে পারে একনিমেষে। ২০ মিনিটের কসরতে ৪০ কিলোক্যালোরি কম হয়। কিন্তু এই সমপরিমাণ ক্যালোরি কমানো যায় মাত্র একটা চুমুতে।

- চুম্বনে উৎপাদিত হয় বৃক্করস। এই বৃক্করস হৃদপিন্ডকে সংকোচনে সাহায্য করে বলে সারা শরীরে রক্তের সঞ্চালন সঠিক থাকে। দৌড়ালে বা বাইসাইকেল চালালে যে প্রভাব হৃদয়ের ওপর পড়ে সেই একই প্রভাব চুম্বনের মাধ্যমে পড়ে থাকে।

- চুম্বন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশ উপকারী। চুম্বনের মাধ্যমে যে লালারসের আদান প্রদান হয় তা শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবডি উৎপাদন করে যা বিভিন্ন রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা দেয়।

অন্যরকম এক প্রেমকাব্য

premer golpo
পতিতার কন্যা নাসিমা। তার প্রতি সমাজের অন্যরা যখন ঘৃণাভরে তাকায় তখন তার জন্য ভালবাসা
উতলে ওঠে কবিরের। এই কবির একজন সমাজকর্মী। দুজনের প্রেম সব ভেদাভেদ তুচ্ছ করে চূড়ান্ত রূপ নেয়। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।

অন্যরকম এই প্রেমকাব্যের খবর দিয়েছে অনলাইন রেডিফ। এতে বলা হয়েছে, কবিরের বাড়ি ভারতের রাজস্থানে। নাসিমার বাড়ি বিহারে। দু’জনের ভাষা ভিন্ন। সংস্কৃতিতেও রয়েছে কিছুটা ভিন্নতা। সামাজিক এত দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও তারা একে অন্যের কাছাকাছি এসেছেন।

নাসিমার পুরো নাম নাসিমা খাতুন। অনেক দিন আগের কথা নয়, তিনি ছিলেন ‘পতিতার মেয়ে’ হিসেবে পরিচিত। জন্মের পরই তাকে পরিত্যাগ করে তার মা। এ অবস্থায় তাকে লালন পালন করেন এক নারী, যিনি নিজে একজন যৌনকর্মী। বিহারের মুজাফ্ফরপুরের এই পতিতালয় বেশ পরিচিত।

সেখানে নাসিমার সামনে অনেক রকম সুযোগ এসেছিল। তিনি নোংরা পথ বেছে নিতে পারতেন এবং সেটাই স্বাভাবিক পন্থা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি তা করেন নি। তার দৃঢ় মনোবাসনা ছিল জীবন থেকে নোংরা অতীতকে মুছে ফেলবেন। মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেন। তাই নিজে প্রতিষ্ঠা করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘প্রচাম’। এখানে পতিতালয়ের শিশুকন্যাদের শিক্ষা দেয়া হয়। নাসিমা আরও এক ধাপ এগিয়ে যান। হাতে লেখা ম্যাগাজিন ‘জুগনু’ বের করেন। এতে যৌনকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে লেখা প্রকাশিত হয়।

নাসিমা যে সমাজে বসবাস করেন সেখানে ভালোবাসা এক বিস্ময়কর ব্যাপার। এমনই এক বিস্ময়কর ভালোবাসা এসে হাজির হয় তার জীবনে। সেই ভালোবাসার নাম রাজস্থানের হংসরাজ কবির।নাসিমা বলেন, কবিরের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ ২০০৩ সালে। তখন আমি পাটনা সফর করছিলাম। সেখানে দলিত শ্রেণীর জাতীয় এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলাম আমি। ওই প্রশিক্ষণের পরে কবির

আমাকে বিস্মিত করে বিয়ের প্রস্তাব করে। কবির সমাজকর্মী হলেও আইনজীবী। তিনি কাজ করেন দলিত শ্রেণীর মানুষের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে।

নাসিমার সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের কথা প্রাণ খুলে বলেন কবির, প্রশিক্ষণের সময় নাসিমার কণ্ঠ আমার হৃদয় বিদীর্ণ করে। তার চিন্তাধারা ছিল স্পষ্ট। সে কোনও সাধারণ মেয়ে নয়। সৌভাগ্যক্রমে ৮ দিনের কর্মশালা শেষে সে আমাদের গ্রুপ লিডার হয়। আমি সুযোগ পেয়ে যাই তাকে কাছ থেকে দেখার। কিন্তু তার জন্মের ইতিহাস, মায়ের নোংরা জীবনের কারণে সে অনেকটা সঙ্কুচিত ছিল। তাকে আমি প্রস্তাব দিলে সে অস্বীকৃতি জানায়। বলে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একজনকে অন্যজনের ভালোভাবে জানা দরকার।

২০০৪ সালে ভারত এবং ২০০৬ সালে দিল্লিতে তাদের পুনরায় সাক্ষাৎ হয়।

নিজের জীবন সম্পর্কে নাসিমা লিখেছিলেন ‘সফর’ নামে একটি বই। এতে অন্য পাঁচ যৌনকর্মীর জীবনাল্লেখ্য বর্ণনা করা হয়েছে। এ বইটি কবিরের পিতা ঘাইসালাকে উপহার দেন নাসিমা। তা পড়ে তিনি পরে ফোন করেন নাসিমাকে। বলেন, তিনি নাসিমাকে পুত্রবধূ বানাতে চান।

এরপর নাসিমার জন্মদিনে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শুরু হয় নাসিমা-কবিরের জীবনের নতুন এক অধ্যায়।

গর্ভবতী হতে চাইলে কি কি করতে হবে ?

গর্ভধারণের

১.গর্ভধারণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন
আপনার এখনই কোন ডাক্তারের প্রয়োজন
পড়ছেনা। কিন্তু তবুও গর্ভধারণ
পূর্ববর্তী শারীরিক পরীক্ষার জন্য
আপনার ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুণ।
আপনার ডাক্তার আপনার এবং আপনার
পরিবারের মেডিক্যাল ইতিহাস
পর্যালোচনা করবেন।
আপনার ডাক্তার আপনার সাথে খাদ্য
তালিকা, ওজন, ব্যায়াম এবং যেকোন
অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস (যেমন ধূমপান, মদ্যপান,
মাদক সেবন) এর
ব্যাপারে কথা বলতে পারেন;
মাল্টিভিটামিন সেবনের পরামর্শ
দিতে পারেন; আপনার
সবগুলো টিকা গ্রহণ করেছেন
কিনা তা নিশ্চিত করবেন; শিশুদের
রোগ জলবসন্ত ও
রুবেলা প্রতিরোধে আপনার শরীর কতটুকু
প্রস্তুত তা পরীক্ষা করবেন। এবং আপনার
যদি কিছু জানার থাকে তা বলবেন।
২. ভিটামিন এ যুক্ত খাবার গ্রহন করুন
ভিটামিন এ সেবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভ
ধারণের একমাস পূর্ব থেকে গর্ভধারণ
পরবর্তী তিন মাস প্রতিদিন ভিটামিন এ
গ্রহণের মাধ্যমে অসুস্থ ও অস্বাভাবিক
শিশুর জন্মের সম্ভাবনা ৫০ থেকে ৭০
শতাংশ কমাতে পারেন। ফলিক এসিড
গ্রহণ অন্যান্য জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধেও
সহায়তা করেন।
আপনি ফার্মেসী থেকে কিনে মাল্টিভিটামিন
সেবন করতে পারেন। মাল্টিভিটামিন
এর লেবেল পরীক্ষা করে দেখুন
এগুলোতে ভিটামিন এ রয়েছে কিনা।
৩. মদ্যপান, ধুমপান এবং মাদক সেবন
পরিহার করুন
আপনি যদি ধুমপায়ী অথবা মাদকসেবী হন
তবে এখনই সময় এসব পরিহার করুন ।
অসংখ্যা গবেষণায়
দেখা গেছে যে ধুমপান অথবা মাদক
সেবন গর্ভপাত, অসুস্থ শিশুর জন্ম এবং কম
ওজনের শিশুর জন্মের অন্যতম কারণ।
মনে রাখবেন কিছু মাদকের ক্ষতিকর
প্রভাব আপনার শরীরের
মধ্যে থেকে যেতে পারে যদিও আপাত
দৃষ্টিতে তা দেখা যাচ্ছে না ।
মদ্যপানের অভ্যাস গর্ভধারণের পথের
বাধার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে, তাই
মদ্যপান কমানোর পরিকল্পনা হবে যখন
আপনি সন্তান নেবার কথা ভাবছেন।
আপনার মাসিকের শেষ দুই সপ্তাহ সম্পূর্ণ
মদ্যপানের অভ্যাস পরিহার করুন কারণ
আপনি এর মাঝে গর্ভধারণ
করে ফেলতে পারেন। গর্ভাবস্থায়
মদ্যপান আপনার শিশুর স্বাভাবিক
বিকাশে জ্ন্মগত ত্রুটির কারণ
হতে পারে এবং আরো অসংখ্য সমস্যার
কারণ হতে পারে ।
অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস থেকে পরিত্রান
পাওয়া খুবই কঠিন হতে পারে। এসব বিষয়
নিয়ে কথা বলতে আপনার
স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর
সাথে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করবেন
না। তিনি আপনাকে ধুমপান
ছাড়তে বিভিন্ন পন্থার
কথা বলতে পারেন অথবা মাদক
থেকে মুক্তি পেতে কোন
প্রোগ্রামে যোগ দেয়ার পরামর্শ
দিতে পারে।
৪. নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন।
আপনার ফ্রিজ স্বাস্থ্যকর খাবারে পূর্ণ
রাখুন। আপনাকে এখনই দুইজনের খাবারের
কথা ভাবতে হচ্ছে না, কিন্তু
আপনি যদি এখনই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ শুরু
করেন তাহলে আপনার শরীর সেইসব
পুষ্টি সংরক্ষণ করবে যা একটি স্বাস্থ্যকর
গর্ভাবস্থার জন্য অপরিহার্য।
প্রতিদিন কমপক্ষে ২ কাপ ফল এবং ১/২
কাপ শাক সবজী খাবার চেষ্টার করুন। এর
সাথে প্রচুর খাবার
যেগুলোতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার
ক্যালসিয়াম- যেমন দুধ, ক্যালসিয়াম,
কমলালেবুর জুস এবং দই। বিভিন্ন ধরনের
প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে, যেমন
শিম, মটরশুটি, বাদাম, সয়াবিন, মুরগির
মাংস এবং মাংস ।
৫. আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
আপনার গর্ভকালীন সময় অনেক সহজ
হতে পারে যদি আপনার ওজন ঠিক
থাকে হয়। কম অথবা অধিক শারীরিক ওজন
কিছু নারীর জন্য গর্ভধারণ করা কঠিন
হতে পারে। স্বাস্থ্যসম্মত
শরীরচর্চা প্রোগ্রামে থাকবে ৩০
মিনিট বা তার থেকে বেশী পরিমিত
ব্যায়াম। তা হতে পারে হাটা,
অথবা অন্যান্য কিছু। শরীরের
নমনীয়তাবাড়াতে স্ট্রেচিং প্রাক্টিস
করুন। নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যান।
যদি গর্ভকালীন কোন
জটিলতা ধরা পরে তা হলে এসব ব্যায়াম
থেকে বিরত থাকুন.
আপনি যদি ব্যায়াম করতে না চান,
তাহলে আপনাকে একটি শরীরচর্চার
রুটিনের
মাধ্যমে ধীরে ধীরে আগাতে হবে।
আপনি শুরু করতে পারেন খুবই সাধারণ
কিছুর মধ্য দিয়ে। প্রতিদিন ২০ মিনিট
হাটার পরিকল্পনা মন্দ হয়না। আপনার
নিয়মিত
কাজে আরো বেশী সক্রিয়তা নিয়ে আসুন।
লিফট এর পরিবর্তে সিঁড়ি দিয়ে উঠুন
অথবা আপনার গাড়ীটা অফিস
থেকে একটু দূরে পার্ক করে বাকি পথটুকু
হেটে আসুন।

রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০১৪

টিপ টিপ বৃষ্টি

বৃষ্টি

"টিপ টিপ বৃষ্টি"
___ফাল্গুনী আলম

বহুদিন পরে ধরেছি কলম
লিখতে বৃষ্টি নিয়ে,
টিপ টিপ
করে বৃষ্টি কণারা 
চারিদিকে গেছে ছেঁয়ে!
কোন রূপসীর কাজল
নিয়ে সেজেছে মেঘের দল,
পেয়ারা পাতায় পানির
ধারা করে যে টলোমল!
মিডাস রাজার স্বর্ণ ছোঁয়ায়
রঙের আলো মেলে,
আকাশ আজি চমকি চমকি
বিদ্যুত দিলো ঢেলে!
ছাতার নিচে ভেজা ভেজা
গায়ে
কতো যে পথিক যায়,
বৃষ্টিরা আজ ছন্দ মেলেছে
আমার এ নিশ্চুপ কবিতায়!

সম্পর্ক প্রেমের কবিতা

প্রেমের কবিতা
প্রেমের কবিতা 

" সম্পর্ক "
_____ জয় গোস্বামী

তুমি তো জানোই আমি সামাজিক ভাবে
কোনও দিন পুরোপুরি তোমার হব না।
আমিও তো জানি তুমি আমার একার জন্য নও।
তা হোক না। তা আমার বেশি।
আমি কী কী চাই?
সুর কানে প্রবেশ করবে।
হাত সে শান্ত হবে হাতে।
শরীর কখনও হবে, কখনও হবে না।
সামাজিক ভাবে, বলো,
কারো কিছু ক্ষতি আছে তাতে?
মনে মনে সঙ্গে থাকি।
যে-পথে কলেজ থেকে ফেরো
সে-রাস্তায় মনে মনে যাই
বাস্তবেও গেছি দু’একবার।
তোমার ছাত্রীকে তুমি বললে কি আমার কথা?
বলো তো কী পরিচয় দিয়েছ আমার?

যৌনমিলনের পর গোসল করলে গর্ভধারণ এড়ানো যায়

যৌনঅনিরাপদ যৌন সংসর্গে জড়িয়ে পড়ছে তরুণ-তরুণীরা। সারা বিশ্বেই এই হার দিনকে দিন বাড়ছে। নতুন
প্রজন্মের এসব টিনএজার জন্মনিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায় সম্পর্কেও অজ্ঞ। নতুন একটি গবেষণায় এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে।

ক্লুলেস অর ক্লড আপ: ইয়োর রাইট টু বি ইনফর্মড অ্যাবাউট কন্ট্রাসেপশন? নামে গবেষণাটি পরিচালনা করে করে যুক্তরাষ্ট্রের বেয়ার হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। ২৬টি দেশে ছয় হাজার তরুণ-তরুণীর ওপর ওই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। এ সব দেশের মধ্যে চিলি, পোল্যান্ড এবং চীনও রয়েছে বলে ফক্স নিউজ ডটকমের প্রতিবেদনে বলা হয়।

বিশ্ব গর্ভ-নিরোধ দিবস (ওয়ার্ল্ড কন্ট্রাসেপশন দিবস-ডব্লিউসিডি) উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন সঙ্গীর সঙ্গে অনিরাপদ যৌন সংসর্গে জড়িয়ে পড়ার হার ফ্রান্সে ১১১ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৩৯ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ১৯ শতাংশ। এই হার গত তিন বছরের।

গবেষণার সঙ্গে জড়িত ডব্লিউসিডি?র টাস্কফোর্সের সদস্য ডেনিস কেলার বলেন, গর্ভ-নিরোধ সম্পর্কে তরুণ-তরুণীরা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাচ্ছে না কিংবা তা পেতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। সারা বিশ্বেই এই চিত্র চোখে পড়েছে। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে এখনও অনেক আজগুবি এবং ভ্রান্ত ধারণা তরুণ-তরুণীদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে।

গবেষণায় আরও বলা হয়, অপরিকল্পিত গর্ভধারণ সারাবিশ্বেই একটি আলোচ্য ইস্যু। কয়েকটি দেশের তরুণ-তরুণীদের অনিরাপদ যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ওই সব দেশে যৌন-শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ইউরোপে গবেষণায় অংশ নেওয়া তরুণ-তরুণীদের অর্ধেক বলেছে, তারা স্কুল থেকে যৌন বিষয়ে শিক্ষা পেয়েছে। অন্যদিকে লাতিন আমেরিকা, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং যুক্তরাষ্ট্রে তিনভাগের-একভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সচেতনতামূলক তথ্য পাওয়ার কথা বলেছেন। আবার কেউ কেউ বলেছে, তারা স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিত্সককে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করতে বিব্রত বোধ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানড প্যারেন্টহুড ফেডারেশনের মুখপাত্র জেনিফার উডসসাইড জানালেন, ?তরুণ-তরুণীরা আমাদের প্রতিনিয়তই বলছে, তারা যৌন-বিষয়ে সঠিক তথ্য পাচ্ছে না। কেউ কেউ ভুল তথ্য পাওয়ার কথাও বলছে।? তিনি আরও বলেন, যৌন-স্বাস্থ্য সম্পর্কে এসব তরুণ-তরুণীর অনেকেরই যথেষ্ট জ্ঞান নেই। কেউ কেউ এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে বিব্রত হতে চায় না, আবার কেউ কেউ তার সঙ্গীর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে চায় না। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ ও যৌনবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে একজনের মাধ্যমে অন্যজনের মধ্যে।

গবেষণায় যৌন-বিষয়ে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণাও উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, মিশরীয়দের তিনভাগের একভাগ বিশ্বাস করে, যৌনমিলনের পর গোসল করলে গর্ভধারণ এড়ানো যায়। অন্যদিকে থাইল্যান্ড ও ভারতের চারভাগের একভাগ তরুণ-তরুণীর বিশ্বাস, ঋতুস্রাবের সময় যৌনমিলনই গর্ভধারণ এড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায়।

শারীরিক মিলন নারীর ভালোবাসা প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক

বিবাহিত নারীর বিবাহিত নারীর ভালোবাসা প্রকাশের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক শারীরিক মিলন৷ আবার শারীরিক
প্রয়োজনীয়তার একপ্রকার বহিঃপ্রকাশ সেক্স্যুয়াল অ্যাক্টিভিটি৷ কিন্তু আপনি জানেন কি শারীরিক চাহিদা বা ভালোবাসা প্রকাশের দিক ছাড়াও এর অনেক গুণ আছে যার ফলে আপনার ব্যক্তিজীবন আনন্দে ভরপুর হয়ে উঠতে পারে—

ত্বক ভালো থাকে : শারীরিক মিলনের সময় সারা শরীরে একপ্রকার ম্যাসাজ চলে তার দ্বারা রিল্যাক্সেশনের ফলে শরীরে কোন প্রকার দাগ থাকে না বা তা ধীরে ধীরে লুপ্ত হতে থাকে৷

সৌন্দর্য্য বাড়ে : শারীরিক মিলন কালে হরমোন নিঃসরনের ফলে রক্তপ্রবাহের মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে তার প্রভাব পড়ে ত্বকের ওপরে৷ তার ফলে সৌন্দর্য্য বেড়ে ওঠে৷ আপনার সারা শরীরের মাদকতা আপনার মধ্যে গ্লো আনে৷ শারীরিক মিলন কালে মহিলাদের শরীর থেকে এস্ট্রোজেন হরমোন নিংসৃত হতে থাকে, যার দ্বারা তাদের চুল এবং ত্বক আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে৷

পিরিয়ডের সময় ব্যাথা কম হয় : যে সব মহিলাদের সেক্স্যুয়াল লাইফ খুব ভালো হয় তাদের পিরিয়ডের ক্ষেত্রে সমস্যা কম হয়৷ সাধারণতঃ পিরিয়ডের সময় মহিলাদের খুব বেশী ব্যাথা হযে থাকে৷ যাদের সেক্স্যুয়াল লাইফে কোন প্রকার অসুবিধা থাকে না তাদের এই সময়ে ব্যাথার অনুভুতি কম হয়৷ আর শরীরিক মিলনের দিক ঠিক থাকলে পিরিয়ডের আগে মহিলাদের মধ্যে অনেক সময় যে সমস্যা দেখা যায় তাও থাকে না৷

কার্ডিওভাস্কুলার এর ক্ষেত্রে উন্নতি : মহিলারা শারীরিক মিলনের সময় উত্তেজিত হয়ে উঠলে তাদের হার্টের গতি বেড়ে যায়, ফলে তাদের কার্ডিওভাস্কুলার এর সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে৷

মানসিক অশান্তি থেকে মুক্তি : মানসিক প্রশান্তি আনার দিক থেকে নিয়মিত শারীরিক মিলনের অভ্যাস সবথেকে ভালো৷ কারণ শারীরিক মিলনের ফলে মন উত্ফুল্ল থাকে ফলে মানসিক অশান্তি কম হয়৷

ওজন কমে : শারীরিক মিলনের ফলে প্রচুর পরিমান ক্যালোরি কম হয় তার ফলে ব্যক্তির ওজন কম হয়৷ নিয়মিত ভাবে শারীরিক মিলনের ফলে পেটের স্থূলতা কম হয়, আর মাংসপেশীতে জড়তা কম দেখা যায়৷

বিস্বস্ত তা বাড়ে : স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শারীরিক মিলনের বোঝা পড়া ঠিক থাকলে তারা একে ওপরকে কখনও ঠকায় না৷ তাদের ঘনিষ্ঠতা তাদের এমন কাজ করতে দেয় না৷

কাজ করার ক্ষমতা বাড়ে : শারীরিক মিলনের সময় হরমোন নিঃসরণ হয় তাই মন শান্ত থাকে আর নিরন্তর কাজের ক্ষমতা বাড়তে থাকে৷ নিয়মিত ভাবে শারীরিক মিলনের ফলে ব্যক্তির যৌবন অনেক দিন পর্যন্ত বর্তমান থাকে৷ এর মাধ্যমে ফিটনেস লেবেল বাড়ে৷ শারীরিক মিলনের ফলে ব্যক্তি সারাদিন স্ফুর্তি অনুভব করে৷ সারাদিনের কাজে এই স্ফুর্তির প্রভাব দেখা যায়৷ এর দ্বারা সারাদিনের ক্লান্তি থেকে এবং নানা রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়৷ -ইন্টারনেট (Dr.Toriqul Islam Tareq)

কিছু হাস্যকর ব্যাপার

joks

১.ছেলেরা নতুন কোনও মেয়েকে পছন্দ
করলে সে তার বন্ধুদের কে সব
থেকে আগে বলে, কিন্তু মেয়েরা কোনও
ছেলেকে পছন্দ করলে বান্ধবী কে বলেনা,
কারন সে ভয় পায়, বান্ধবী নিজেই যদি ঐ
ছেলেরে পটায় ফেলে!
২. নিজের বন্ধুর প্রেম করানোর জন্য
ছেলেরা আপ্রাণ চেষ্টা করে, কিন্তু হায়
মেয়েরা চেষ্টা তো করেই না,
পারলে আরও প্যাঁচাল লাগায়া দেয়।
৩. প্রেম হয়ে গেলে তখন আরেক কাহিনী,
তখন
আবার দেখা যায় বান্ধবীর প্রেমিক এর কাছ
থেকে চান্স পাইলেই কেমনে খাওয়া যায়
এইটা নিয়ে বেশী ব্যস্ত থাকে মেয়েরা,
কিন্তু ছেলেদের উল্টা নিজের
বন্ধুরে মাঝে মধ্যে ডেটিং এর সময়
টাকা দিয়ে সাহায্য করতে হয়।
৪. মেয়েরা সর্বদা অন্যের প্রেমিকের খুত
ধরতে ব্যস্ত থাকে, কিন্তু নিজের প্রেমিক
যে দেখতে ডিপজল এর মত এইডার কোনও খবর
নাই
৫. সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে ছেলেরা বলে,
"দোস্ত
এইটা কোনও ব্যাপার না,সব ঠিক
হয়ে যাবে...' আর মেয়েরা বলে, "আমি আগেই
জানতাম এই ছেলে তরে ছেড়ে চলে যাবে"
(ঐ মেয়ের প্রেমিকও
তারে ছেড়ে চলে গেছে এইটার কোনও খবর
নাই )

মেয়েলি সমস্যা নিয়ে কিছু কথা

hot girlsমেয়েলি সমস্যা নিয়ে রোগী তো বটেই চিকিৎসকরাও কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন। রোগী সহজেই তার
রোগের কথা ডাক্তার কেন নিকটস্থ আত্মীয়স্বজনকে জানাতে সংকোচ বোধ করেন। এরপর রোগ যখন জটিল আকার ধারণ করে তখন তারা চিকিৎসকের দ্বারস্থ হোন। কিন্তু সে মুহূর্তে চিকিৎসকদের অনেক সময় করার কিছু থাকে না। মেয়েদের প্রশ্রাবের রাস্তার সমস্যা বা ইউরিনারি স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স এমনই একধরনের মেয়েলি সমস্যা। রোগটির চিকিৎসা প্রাথমিক স্তরে করা সম্ভব হলে রোগী অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন। আমাদের দেশের মেয়েদের চিকিৎসার বড় সমস্যা হলো তারা শারীরিক সমস্যার অনেক কিছু গোপন রাখতে চান। রোগ জটিল আকার ধারণ করলে বাধ্য হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন শেষ মুহূর্তে।

মেয়েদের হাঁচি-কাশির সঙ্গে বেগ ছাড়াই অনিয়ন্ত্রিত প্রস্রাব বেরিয়ে যাওয়ার সমস্যা এমনই এক ধরনের অসুখ যা নিয়ে রোগীরা শেষ মুহূর্তে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলা হয়, ‘ইউরিনারি স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স’। বাংলাদেশের মেয়েদের কত শতাংশ এ সমস্যায় ভুগছে তার সঠিক পরিসংখ্যান না জানা থাকলেও হাসপাতালে এবং রোগী দেখার অভিজ্ঞতা থেকে অনুমেয় যে এ সংখ্যা একেবারে কম নয়।
স্বাভাবিক অবস্থায় যত প্রবল কাশি আর যত জোরেই হাঁচি আসুক না কেন, কখনও প্রস্রাব বেরিয়ে যাবে না। প্রস্রাবের বেগ চাপলেও মানুষ যথাযথ সুযোগ এবং স্থান না পেলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত প্রস্রাব ধরে রাখতে পারে। কিন্তু যারা ইউরিনারি স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্সে ভুগছেন, তাদের হাঁচি, কাশি বা হাসির সঙ্গে প্রস্রাব বেরিয়ে যায়, যার ওপর নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। প্রাথমিক অবস্থায় প্রচণ্ড হাঁচি বা প্রবল কাশির সঙ্গে হঠাৎ সামান্য প্রস্রাব বেরিয়ে যায়। কিন্তু বয়স এবং অসুখের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সামান্য হাঁচি, কাশি বা হাসিতেই প্রস্রাব বেরিয়ে যেতে পারে। অবস্থার আরও অবনতি হলে শারীরিক অবস্থান পরিবর্তনের সঙ্গে যেমন_ বসা থেকে দাঁড়াতে গেলে, কোনো ভারী জিনিস তুলতে গেলেই প্রস্রাব বেরিয়ে যেতে পারে, এমনকি অনেক সময় যৌনমিলনের সময়ও প্রস্রাব নির্গত হতে পারে। এ সমস্যা জীবন সংশয়ী নয়। কিন্তু স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যত্রতত্র হঠাৎ কোনো পূর্ব সতর্কীকরণ ছাড়া প্রস্রাব বের হওয়ার ফলে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়, পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য বারবার কাপড় বদলাতে হয়। সমস্যা আরও বেড়ে গেলে অনেককে নিয়মিত স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে হয়। নিয়মিত নামাজ পড়া বা অন্য ধর্মীয় কাজে বিঘ্ন ঘটে। এ ছাড়া প্রস্রাব দিয়ে ভেজা থাকার জন্য যোনিপথের আশপাশে ছত্রাক সংক্রমণ ও ঘা হতে পারে। প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে অনেকে সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে যাওয়া ছেড়ে দেন। এক পর্যায়ে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে এবং রোগী বিষণ্নতায় ভুগতে থাকেন। যৌনমিলনের সময় অনিচ্ছাকৃত প্রস্রাব বের হলে তা স্বামী-স্ত্রীর যৌনজীবনে অস্থিরতা ও উৎকণ্ঠা তৈরি করে।

যারা নিয়মিত খেলাধুলা বা ব্যায়াম করেন, এ সমস্যায় তাদের ক্রীড়ানৈপুণ্যে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্সের সঙ্গে প্রস্রাবের অন্যান্য সমস্যা যেমন_ বেগ এলে প্রবল তাড়া অনুভব এবং মূত্র ত্যাগে বিলম্বিত করতে না পারা, কিংবা টয়লেটে পেঁৗছানোর আগেই কাপড়ে প্রস্রাব হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্সের চিকিৎসায় যাওয়ার আগে এ সমস্যায় যেসব বিষয়কে ঝুঁকি হিসেবে গণ্য করা হয়, তা একটু জানা যাক। স্থায়ী ঋতুস্রাব বা মেনোপজের ফলে অথবা অন্য কোনো কারণে শরীরে এস্ট্রোজেন নামের হরমোন কমে যাওয়ার জন্য বা যোনিপথে প্রস্রাব বিশেষ করে বিলম্বিত কষ্টকর প্রস্রাব এবং যেসব প্রস্রাবে ফরসেপস ব্যবহার করা হয় সে ধরনের প্রস্রাবের কারণে মূত্রাশয় এবং মূত্রনালির স্বাভাবিক অবস্থান রক্ষায় যেসব পেশি কাজ করে সেগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে হঠাৎ হাঁচি, কাশি বা হাসির দমকে মূত্রাশয় ও মূত্রনালির সংযোগস্থল তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে নেমে আসে এবং প্রস্রাবের বেগ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে সামান্য প্রস্রাব বেরিয়ে যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি (ক্রনিক) কাশি বা হাঁপানি, কোষ্ঠকাঠিন্য, অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, ধূমপান ইত্যাদি ইউরিনারি স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্সের ঝুঁকি বাড়ায়। এ ছাড়া কিছু কিছু ওষুধ যেমন_ কাশি বা অ্যালার্জির জন্য ব্যবহৃত ওষুধ, মানসিক রোগের কিছু ওষুধ, প্রস্রাব হওয়ার ওষুধ ইত্যাদির কারণেও স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স বেড়ে যেতে পারে।

ইউরিনারি স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্সের চিকিৎসা নির্ভর করে প্রস্রাব নির্গত হওয়ার মাত্রা এবং এর তীব্রতার ওপর। প্রাথমিক অবস্থায় বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই শুধু রোগের ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার পর রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে রোগীর জীবনাচরণে কিছু পরিবর্তন আনার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়। যেমন_ ধূমপান পরিহার করা, অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা, কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি। গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু শতকরা পাঁচ ভাগ ওজন কমাতে পারলে স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্সের ৫০ শতাংশ উন্নতি ঘটে। এ ছাড়া প্রস্রাবের পরিমাণ এবং আবহাওয়ার উষ্ণতার ওপর নির্ভর করে পরিমিত পানি পান (কখনোই অতিরিক্ত নয়), যেসব পানীয়তে প্রস্রাবের মাত্রা বেড়ে যায়। যেমন_ চা, কফি, কিছু ফলের রস, বিভিন্ন কোমল পানীয় ইত্যাদি পান করা কমিয়ে দিতে হবে। সাধারণত জীবনাচরণের এসব পরিবর্তনে প্রস্রাব লিকেজের মাত্রা কমে আসে। এসবেও সমস্যার উন্নতি না হলে রোগীকে একটি ব্যায়াম শেখানো হয়।

যেখানে রোগী তার মূত্রদ্বার, যোনিপথ এবং মলদ্বারের চারপাশের মাংসপেশিগুলো (পেরিনিয়াল মাংসপেশি) নিয়মিত বিরতিতে সংকোচন ও প্রসারণ করবে। এ ব্যায়ামের মাধ্যমে পেরিনিয়াল মাংসপেশিগুলোর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে মূত্রাশয় এবং মূত্রনালির সহায়ক পরিপোষণকে শক্তিশালী করা হয়। কিন্তু সমস্যা একটাই, সঠিক নিয়মে সঠিক মাংসপেশির সংকোচন করা এবং একনাগাড়ে দীর্ঘদিন (অন্তত টানা ছয় মাস) চালিয়ে যাওয়া একটু কষ্টকর। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু এ ব্যায়ামেই শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ উন্নতি হয়। যেসব রোগীর অনিয়ন্ত্রিত প্রস্রাব বের হওয়ার মাত্রা অনেক বেশি বা এর সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ থাকে। তাদের ইউরোডাইনামিক পরীক্ষার মাধ্যমে আরও মূল্যায়ন করে সমস্যার তীব্রতা নির্ণয় করা হয়। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে শল্যচিকিৎসা প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন ধরনের সার্জারির মধ্যে বর্তমানে উন্নত বিশ্বে যোনিপথে সিনথেটিক টেপ স্থাপনের মাধ্যমে মূত্রনালিকে সহায়তা দেওয়া হয়। এতে হঠাৎ হাঁচি-কাশির সঙ্গে মূত্রাশয় এবং মূত্রনালির সংযোগস্থল স্বাভাবিক অবস্থান থেকে নেমে আসে না। ফলে নিয়ন্ত্রণহীন প্রস্রাব বেরিয়ে যায় না।

লেখক: ডো. শামসাদ জাহান শেলী
সহযোগী অধ্যাপক, প্রসূতি বিদ্যা ও স্ত্রীরোগ বিভাগ, বারডেম

যদি সুস্থ থাকতে চান, প্রেম করুন

hot girlsভালবেসে সুখী হতে বল কে-না চায়? রাধা সুখী হয়েছিল পেয়ে শ্যামরায়। সবাই তো সুখী হতে চায়। তবু
কেউ সুখী হয় কেউ হয় না।’
মান্নাদের এ গানে যে সুখের কথা বলা হয়েছে তা হয়তো আপেক্ষিক। কিন্তু ভালবাসা বা প্রেম মানুষকে সত্যিকার অর্থেই সুস্থ রাখে। এ কথা প্রমাণ করেছে চিকিৎসা বিজ্ঞান।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভালোবাসা মানুষের স্বাস্থের জন্য বেশ উপকারী। এবার আসুন জেনে নেই ভালবাসা শরীরের জন্য কীভাবে উপকারী।
১. প্রেমে পড়লে মানুষের মন এবং শরীর শান্ত হয়। আর এটা হয় এক ধরনের হরমোন নিসৃত হওয়ার কারণে। এই হরমোন মানুষের নার্ভাস সিস্টেমকে পুনর্গঠন করতে সাহায্য করে। এতে নতুন স্নায়ু কোষ তৈরি হয়। ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
২. ভালবাসলে মানুষের মনের ক্রোধ কমে আসে। শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক ক্রোধ কমে যেয়ে রোমাঞ্চকর অনুভূতির সৃষ্টি হয়। ফলে ইমিউন, এন্ডোক্রাইন এবং হার্ট উপকৃত হয়।
৩. কেউ যদি তার কাঙ্খিত মানুষটির সঙ্গে কথা বলে তাহলে তার হার্টবিট তিনগুণ বেড়ে যায়। যার ফলে সারা শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় রক্ত চলাচল করে। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।
৪. নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায় যে, প্রেমিক-প্রেমিকারা খুব কাছাকাছি সময় কাটায় এবং পাশাপাশি বসে ভালোবাসার কথা বলে তাদের শরীর থেকে অক্সিটোসিন নামক এক প্রকার লাভ হরমোন উচ্চমাত্রায় নিঃসৃত হয়। এর ফলে মেয়েদের ব্লাড প্রেসার কমে যায়।

যে কথা হয়নি বলা আগে


যে কথা হয়নি বলা আগে
by *অভিষেক ঘোষ*

থাক না বলায় থাক
যে কথা হয়নি বলা আগে
শুরুতেই যে কথা শেষ হয়ে গেছে
সে কথা তুলে আর কি হবে ?

আমিতো বেশ আছি ভালো
গুছিয়ে নিজেকে নিজেই
না বলে গিয়েছো চলে,নিয়েছি তো মেনে
পা ধরে sorry বলার অভ্যাস আমার নেই 

হয়তো কোনদিন স্মৃতির দুয়ার খুলে খুজবো তোমায়
অগভীর রাতে কিছু চিরচেনা স্বপ্নেরা হানা দিতে পারে
তবুও ভুল করে ডাকবোনা তোমায়
আমার দেওয়া পুরানো নামটি ধরে 

না রয় সব সম্পর্ক চিরজীবন
না হয় মানুষের সব চাওয়া পূরণ
এখনও সেই পুরানো জায়গায় রোজ বিকেলে বসি
সময় পেলে একদিন এসো
গল্প করা যাবে,বসে পাশাপাশি ৷

রবিবার, ৯ মার্চ, ২০১৪

ফুলেরা জানতো যদি



                                                                    ফুলেরা জানতো যদি 
--------– হুমায়ুন আজাদ
মুলঃ হেনরিক হাইনে

ফুলেরা জানতো যদি আমার হৃদয়
ক্ষতবিক্ষত কতোখানি,
অঝোরে ঝরতো তাদের চোখের জল
আমার কষ্ট আপন কষ্ট মানি ।

নাইটিংগেল আর শ্যামারা জানতো যদি
আমার কষ্ট কতোখানি-কতোদুর,
তাহলে তাদের গলায় উঠতো বেজে
আরো ব হু বেশী আনন্দদায়ক সুর ।

সোনালী তারারা দেখতো কখনো যদি
আমার কষ্টের অশ্রুজলের দাগ,
তাহলে তাদের স্থান থেকে নেমে এসে
জানাতো আমাকে সান্ত্বনা ও অনুরাগ ।

তবে তারা কেউ বুঝতে পারেনা তা-
একজন,শুধু একজন,জানে আমার কষ্ট কতো;
আমার হৃদয় ছিনিয়ে নিয়েছে যে
ভাংগার জন্য-বারবার অবিরত ।

(পোষ্ট করেছেন- নিপা নাহার)

শনিবার, ৮ মার্চ, ২০১৪

সেই ছেলেটি আমার ভালোবাসা

বাংলা মেয়েদের ফটো লিখেছেন - -A.T. Noor Sheikh Lita

তার নামটা আমি এখনও মুখে আনতে পারি, হয়ত একই রকমভাবে কিংবা নয়। আমি আশ্চর্য হই, কিভাবে তার নামটা আমার মুখে এখন এতটা সহজেই উঠে আসে যখন এটা মোটেও স্বাভাবিক কিংবা সরল ছিল না। কিন্তু তবুও সকল উপেক্ষার আড়ালে, অন্তরালে এটা সহজেই উঠে আসে আর আমি স্পষ্ট খেয়াল করতে পারি, ভিতরের এই যন্ত্রনাটা যেমনই হোক না কেন, তার নামটা মুখে উচ্চারিত হতেই আমার সমস্ত মুখে এক অন্যরকম উজ্জ্বলতা কাজ করে। 'রুদ্র'। হ্যাঁ, সেটা রুদ্রই ছিল। আমি এখনও স্মরণে আনতে পারি সে ছিল আমার দেখা সবচেয়ে সুদর্শন (আমার কাছে, যদিও তাকে অন্যরা ভেবে নিতে পারে উগ্র বাউন্ডুলে কিংবা পাগলাটে কেউ) তবে সেটা যেমনই হোক না কেন, আমার কাছে মূল্যহীন। কেননা আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম, তার পাগলামীকে ভালবেসেছিলাম, তার উস্কোখুস্কো এলোমেলো চুলগুলো ভালোবেসেছিলাম। সে ছিল আমার ভিতরে-বাহিরে, হৃদয়ে-প্রতিটি রক্তবিন্দুতে, আমার চোখের পলকে, দৃষ্টিতে-দৃষ্টির প্রতিটি আড়ালে, আমার ভাবনায়-চেতনায়... সে ছিল আমার সমস্তটা জুড়ে। আমি কোথায় ছিলাম আমার জানা নেই কিন্তু যেখানেই ছিলাম সে ছিল পরম ভালোবাসায় আর নিবিড় বন্ধুত্বের মায়ায়।

আর আমার চোখ দু'টো তাকে প্রথম দেখতে পেয়েছিল এবং মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল সাথে সাথেই। হ্যাঁ, আমি একটা মুহূর্তেই স্মরনে নিয়ে আসতে পারি তার সাথে আমার প্রথম পরিচয়ের স্মৃতি। ক্যাম্পাস, কলেজের মধুর ক্যাম্পাস! তাকে যখন আমি প্রথম দেখেছিলাম, গিটার হাতে এলোচুলের এক পাগলাটে সুদর্শন যুবক। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা আর তার আড়ালে লুকায়িত লালচে চোখগুলো যেন প্রমাণ স্বরুপ বলে যাচ্ছিল তার অনেকগুলো নির্ঘুম রাত্রিযাপনের কথা। আর চিকনা-চাকনা ছেলেটা যখন হেঁটে যাচ্ছিল, এমন মনে হল যেন এখনই উড়ে যাবে হাওয়ার সাথে! আর তার খুব দ্রুত পায়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যেন খুব তাড়া ছিল। যদিও সেটা ছিল একটা ক্ষণিকের মুহূর্ত আমার তাকে দেখতে পাওয়ার কিন্তু আমি নিশ্চিত অনুভবে সেটা মোটেও কিছু সময়ের ব্যাপার ছিল না এবং যে ক'টা সময় আমার চোখের পলক পর্যন্ত পরেনি। কিন্তু আমি অবাক হয়ে গেলাম, কলেজের এত ছেলের চাওয়া উপেক্ষা করে আমার দৃষ্টি কিনা আটকে গেল এই রুদ্রের উপর! প্রথম দেখায় প্রেম কাকে বলে আমার বোঝা হয়ে উঠেনি কখনই কিন্তু যতটা আমি অনুভব করতে পেরেছিলাম চোখের আড়াল হয়ে গেলেও ছেলেটি তখনও ছিল আমার সমস্ত দৃষ্টি জুড়ে। সেটা তো কেবল শুরুই ছিল, কেননা আমি খেয়াল করতে পারছিলাম, ধীরে ধীরে আমার মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে দিয়েছিল। আমি তো আমার নিজেকেই চিনতে পারছিলাম না। যে আমি কোন ছেলের প্রতি কখনই আগ্রহ প্রকাশ করিনি সেই আমিই কিনা ঐ পাগলাটে ছেলেটির তথ্য জানার জন্যে উদগ্রীব হয়ে গেলাম। যেই আমি নিজ থেকে কখনই কোন ছেলের সাথে যেচে কথা বলিনি সেই আমিই কিনা এক বান্ধবীর সাহায্যে ওর সমস্ত খোঁজখবর নিয়ে লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম ওর দিকে বন্ধুত্বের আহবানে! কি হয়ে যাচ্ছিল আমার মাঝে, রুদ্রর উপেক্ষা প্রত্যাখান করে আমি যেভাবে লেগে ছিলাম ওর পিছে, কোথায় ছিল আমার তীব্র সেই আত্মসম্মানবোধ! আমি অবাক! আর যখন আমার আগ্রহের কাছে হার মেনে ও হাতটা বাড়িয়ে দেয় বন্ধুত্বের... আহা! সেই সময়টা এখনও আমাকে লাজুক করে দেয়! আমি তো রুদ্রের হাত ধরেছি, হেঁটেছি বহু পথ। এটা তো কেবল রুদ্রই ছিল যে শিখিয়েছে আমাকে কি করে দিগন্তের শেষেও পথ খুঁজে নিতে হয়। রুদ্রই তো শিখিয়েছে আমাকে নতুনভাবে বাঁচতে শেখা। তার কাছে জীবন-বেঁচে থাকার এক পৃথক আর অন্যরকম সংগা ছিল। তাকে আমি হাসতে দেখেছি পৃথিবীর সবচেয়ে যন্ত্রনাদায়ক মুহূর্তটিতেও। আমি তাকে দেখেছি মানুষ, অনুভূতি, আবেক সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন হতে। এবং খুব সম্ভবত সেটা একমাত্র আমিই ছিলাম যে এতটা কাছ থেকে তাকে জানার সুযোগ পেয়েছিল যেমনটা রুদ্র আমাকে প্রায়ই বলত। আমিই তো ছিলাম ওর সকল কর্মকান্ডের একমাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষী। তবুও যেন আমি তাকে প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করছিলাম নতুনভাবে, তার বিষয়ে আমি যতটা জেনেছি ততটাই যেন অজানা রয়ে যাচ্ছিল। আর আমি মিশে গিয়েছিলাম, নির্ভর হয়ে গিয়েছিলাম রুদ্রের প্রতি এতটাই, একটা মুহূর্ত অতবাহিত করাটাও যেন অসম্ভব হয়ে গেল ওকে ছাড়া। আর রুদ্র! সে ছিল অসম্ভব ভালো একজন বন্ধু, নিঃসন্দেহে কিন্তু আমি আমার বিষয়ে নিজের কাছে বিশস্ত ছিলাম না কখনই। আমি অনুভব করতে পারছিলাম রুদ্রর প্রতি আমার অমোঘ আকর্ষন, আমি বুঝতে পারছিলাম রুদ্রের প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা। আমি ভীত ছিলাম, যদি সেটা প্রকাশিত হয়ে যায়! কেননা বন্ধুত্ব জড়িত ভালোবাসায় প্রত্যাখান মানে শুধুই হৃদয়ের ভাঙণটাকেই বোঝায় না বরং এর সাথে তাকেও হারানো হয় যার পাশে থাকাটা তখন খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠে, একজন বন্ধুর! তাই সবদিক বিবেচনায় আমি লুকিয়ে রেখেছিলাম আমার অনুভূতিটাকে অনেকটা সময়, তখনও আমি নিশ্চুপ ছিলাম রুদ্রর সাথে অতিবাহিত করা সেই বৃষ্টিস্নাত বিকেলেও। আর আমি তখনও নির্বাক শুনেছি রুদ্রর মোহনীয় কন্ঠস্বর, ও আমাকে গান গেয়ে শুনিয়েছিল আর আমি হাঁ করে শুনে গেছি যেন গান নামক শব্দটার সাথে আমার আগে কখনই পরিচয় ঘটেনি নাকি আমি শুনে যাচ্ছিলাম কেবল রুদ্রকেই!

সময়ের বহমান ধারায় তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ব্যার্থ প্রয়াসেও যদিও চেষ্টা আমি কম করিনি তবুও রুদ্র বুঝে যায়, জেনে যায় সবকিছু। আমার চোখের আনাড়ি দৃষ্টির মাঝেই আমি ধরা পড়ে যাই, আমি লুকোতে চাই নিজেকে কিন্তু কোথায়! কেননা রুদ্র তো ছিল আমাকে ঘিরে সমস্তটা ক্ষেত্রেই! আর আমি বড্ড অনিশ্চয়তায় ভুগি। বলতে দ্বিধা নেই আমি স্পষ্টই বুঝতে পারছিলাম আমাকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। আর এটা ভাবনায় আসতেই একটা কিসের যেন যন্ত্রনা আমি অনুভব করছিলাম ক্ষণে ক্ষণে। আমি পারিনি সহ্য করতে আর, আত্মসম্মানবোধ ভুলে রুদ্রের কাছে হাজির হই। একটা পাগলাটে ছেলের মাঝে কি ছিল আমার বোধগম্য নয় কিন্তু তবুও সেটাই আমাকে উন্মাদ করে দিয়েছিল প্রতিটিবার। আর রুদ্রর কতটা সহজ স্বীকারোক্তি, কতটা সাবলীলভাবেই ও বলে দিল, আমার ভালো ওর থেকে দূরে থাকায়, রুদ্র আমাকে বোঝায় আর বলে-"ভুলে যাও ইপা। তুমি আমার বান্ধবী তাই জানিয়ে দিচ্ছি আমার মতো ছেলেরা ভালোবাসতে জানে কিন্তু থাকে না চিরকাল... সময় থাকতেই বুঝে যাও..." জানিয়ে সে দিয়েছিল আমাকে, বুঝিয়েছেও অনেক কিন্তু তার সেই স্বীকারোক্তি, তার সেই সততা আমাকে যেন এগিয়ে নিয়ে যায় আরো এক ধাপ। কমে না বরং বেড়ে যায় তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা মিশ্রিত ভালোবাসা আরো কয়েক গুণ। কি ছিল সেখানে, সে কি এক দুর্বধ্য টান, সে থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া যে অসম্ভব, এমনকি সত্যটা জানার পরও। বিশেষ করে তখন যখন সেই ভালোবাসা কিংবা অনুভূতির উপর মানুষের কোনই নিয়ন্ত্রন থাকে না, চলে না কোন কর্তৃত্ব।

হ্যাঁ আমি আপনাদেরকে রুদ্রর কথাই বলছিলাম, শোনাচ্ছিলাম রুদ্রের গল্পই। রুদ্র এক বেপরোয়া একরোখা পাগল ছেলে! যে তার কথা রেখেছে, ইপাকে সে ভুল প্রমাণিত করে চলে গেছে। সে সত্যিই থাকেনি চিরকাল কিন্তু যে ক'টা মুহূর্ত সে ছিল আমি কি সমস্তটা জীবন জুড়েই তাকে কল্পনায় একইভাবে এঁকে রাখব না। যদিও আমি অজ্ঞাত এই বিষয়ে যে রুদ্র আছে নাকি নেই, থাকলেও কোথায়, কোন সেই অজানায় কিংবা কোন সীমানায়। তবুও ওর নামটা আমার মুখে কি চলে আসবে না প্রতিনিয়ত খুবই সহজভাবে, অনেকটা ঝর্নার পানির মত করে, কিংবা প্রার্থনার মত অবিরত চলে আসা! তাকে আটকে রাখাটা সম্ভব হয়ে উঠেনি। রুদ্র চলে গেছে কিন্তু রেখে গেছে অজস্র স্মৃতি, অজস্র ভালোবাসা, তাকে আরেক নজর আরেকবারের জন্যে দেখার অজস্র আকাংখ্যা। আর এটাই কি বেঁচে থাকার জন্যে যথেষ্ট নয়! আমি এখন বুঝতে পারি রুদ্রর বলে যাওয়া কথা, একটা আশার শেষ হয়ে যাওয়া মানেই পরিসমাপ্তি নয় বরং এটাই শুরু। নতুনভাবে বেঁচে থাকার নতুন শুরু! সত্যিই সেটাই, রুদ্র আমাকে বেঁচে থাকা শিখিয়ে গেছে আর এখন তো আমার কাছে একটা নিয়ন্ত্রণহীন প্রত্যাশাও রয়েছে, আর একবার একটিবারের জন্যে রুদ্রর মুখোদর্শন।
আমার জানা নেই যদিও আমি নিশ্চিত এই বিষয়টা জানা হলেও কখনই আমার বোঝা হয়ে উঠবে না, কিছু মেয়েরা কেন এমন এলোমেলো পাগলাটে ছেলেদের প্রতিই দূর্বল হয়ে যায়, কিন্তু সত্যি এটাই কিছু কিছু মেয়ে অনেক বোকা হয়, ওরা সংসারী নয় জানা সত্বেও নিজেকে জড়িয়ে নেয় ভালোবাসা আর বিশ্বাসের ভিন্ন এক চাঁদরে। আমার কি তবে আফসোস থাকা উচিত এটাকে নিয়ে কিন্তু আমার কোন আফসোস নেই, আমার কোনই আফসোস নেই যে আমিও সেই কিছু বোকা মেয়েদের ব্যাতিক্রম হতে পারিনি, কাউকে নিঁখুত ভালোবাসা আমাকে এতটাই বোকা বানিয়ে দিয়েছে.... যদিও আমার কোন অভিযোগও নেই রুদ্রের প্রতি কেননা রুদ্রকে ভালোবাসাটা আমারই সিদ্ধান্ত ছিল, আমি বুঝতে পারি। তবুও বলে যাই রুদ্র তোমার জীবন রোদের মতো করেই উজ্জ্বল হয়ে থাক...
পাওয়া-না পাওয়ার হিসেব এখন আমি আর কষি না,
সকল অপূর্ণতায় তবুও তুমি আজ পূর্ণতা হয়ে থাকো,
আমার একান্ত অনুভূতি আর চিন্তার জগতে, তুমি আছো তুমি থাকবে,
সকালের রোদ হয়ে__
হৃদয়ের জগতে প্রজ্জ্বলিত অনন্তকালের রুদ্র তুমি থাকবে।

শনিবার, ১ মার্চ, ২০১৪

যদি আমার হাতে রাখ হাত

দুঃখের কবিতা

লেখক 
$h@rmin 

যদি আমার হাতে রাখ হাত,
খালিপায়ে হেঁটে যাব
কাঁশফুলের পাশ ঘেঁষে
দিগন্ত ছোঁয়া নদীর তীর ধরে
বহুদূর; বহু ক্রোশ পথ।
সোনালি সূর্যের রোদেলা আলোয়
তোমার পায়েমাখা বালুকণা
হবে রূপালি নূপুর।
আমাদের যুগল চলায়
লাজুক কাঁশফুল তারা হয়ে রবে
তোমার মেঘরং এলোচুলের খোঁপায়।
নুড়ি দিয়ে আমারই গাঁথা মালা
তুমি পরবে গলায়। 

সারাদিন তোমায় ভেবে

premer kobita

সারাদিন তোমায় ভেবে
হলো না আমার কোন কাজ
হলো না তোমাকে পাওয়া
দিন যে বৃথাই গেল আজ

সারাদিন গাছের ছায়ায়
উদাসী দুপুর কেটেছে
যা শুনে ভেবেছি এসেছো
সে শুধু পাতারই আওয়াজ

হাওয়া রা হঠাৎ এসে জানালো
তুমি তো আমার কাছে আসবে না
এক হৃদয় হয়ে ভাসবে না

তবে কি একাই থাকবো
তবে কি আমার কেউ নেই
সারাদিন যেমন কেটেছে
তেমনি যাবে গো সাঁঝ

সারাদিন তোমায় ভেবে
হলো না আমার কোন কাজ
হলো না তোমাকে পাওয়া
দিন যে বৃথাই গেল আজ

সুখানুভূতি ভালবাসার গল্প

i love youলিখেছেন - মোঃ রোকনুজ্জামান রোকন

সিরাজ সাহেব এখন যে চারতলা বিল্ডিংটার ছাদে আছেন সেখান থেকে এর আগে দুই জন লাফিয়ে পড়েছিলেন।কিন্তু সিরাজ সাহেব লাফাবেন না।কারণ যেই দুইজন এর আগে লাফিয়ে পড়েছিলেন,তাদের কেউই মরেননি।কিছু হার-গোর আর কোমর ভেঙেছে যা আর কি।হার-গোর ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মত টাকা এখন পকেটে নেই,এই মাসে তা হওয়ার সম্ভবনাও তিল পরিমাণও নেই।তাছাড়া আত্মহত্যা করার মত দিন এখনো তার আসেনি।তবে সিরাজ সাহেবের ধারণা সেই দিনটি খুব দূরে নেই যেদিন তার নিজেকে হত্যা করতে হবে না,জাগতিক জালা-যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে তার আত্মাই শরীর ছেড়ে পালিয়ে যাবে।
সিরাজ সাহেব সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে নামছেন।এখন বাড়ি যাবেন।বেসরকারি একটা স্কুলে পড়িয়ে তিনি রোজ দুপুর দুইটায় বাড়ি ফিরেন।বাড়ি ফিরে সোজা চলে যান তার মায়ের ঘরে।তার মায়ের দিন ঘনিয়ে এসেছে।সারাদিন বিছানায় শুয়ে তসবিহ পড়েন,শুয়ে শুয়েই নামাজ আদায় করেন।সিরাজ সাহেব ঘরে ঢুকে মায়ের পাশে কিছুক্ষণ বসেন।তারপর চলে আসেন তার নিজের ঘরে।চলে আসার আগে মায়ের কপালে একটা চুমু দিয়ে আসেন,ছোটবেলায় ঠিক যেভাবে সিরাজ সাহেবকে তার মা স্কুলে পাঠানোর আগে কপালে চুমু দিতেন ঠিক সেভাবে।
বাড়ি ফিরে মায়ের ঘর থেকে তার নিজের ঘরে এসে দেখেন রিমা ঘুমিয়ে।রিমার পাশে ঘুমিয়ে আছে তাদের একমাত্র ছেলে রিফাত।রিফাতের বয়স কিছুদিন পরই এক বছর হবে।দিনের এই সময়টায় রিফাত ঘুমায়,আর রাতে জেগে থাকে।আবার ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পড়ে।রিমার এখন ঘুমানোর কথা না,সেও ঘুমাচ্ছে।সিরাজ সাহেব প্রতিদিন ঘরে ফিরে রিমাকে প্রচুর ক্লান্ত দেখেন,আজকে তিনি দেরি করে আসায় ক্লান্তি জোর করে রিমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।ঘুমানোরই কথা,সারা দিন সংসারের সব কাজ তাকেই তো করতে হয়।টাকা বাঁচানোর জন্য কাজের মেয়েকে বিদায় দেয়া হয়েছে।তুলটা টেনে সিরাজ সাহেব রিমার পাশে বসেন।ছোট্ট ফর্সা মুখটার দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকেন,কখনো ভাবেন অতীতের মধুর সব স্মৃতির কথা আবার কখনো ভবিষ্যতের আগত করূন পরিণতির কথা।
রিমা মেয়েটাও সিরাজ সাহেবের সাথে একই স্কুলে পড়াতো।দারুন চটপটে মেয়ে।কথা বলার ধরনটা সবারচেয়ে আলাদা,মেয়েটার এই কথা বলার ধরনটাই সিরাজ সাহেবকে বধ করেছে।সেই দিন সিরাজ সাহেব বুঝেছিলেন চেহারাই সব কিছু নয়।বুকের ভেতরের ভয়ের কারখানাটাকে অনেক কষ্টে অকেজো করে একদিন সিরাজ সাহেব রিমাকে বলেছিলেন ''রিমা,আমি দিন দিন আপনার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ছি।আপনি কি নিজের বিয়ের ব্যাপারে কিছু ভেবেছেন?''
রিমা সোজা জানিয়ে দেয় ''যা করার আব্বা-আম্মা করবে''
পরদিনই সিরাজ সাহেব তার মাকে পাঠান রিমাদের বাড়িতে।দুই পরিবারের মতেই বিয়ে হয় তাদের।এক বছর পর রিফাত পেটে আসলো,রিমাকে চাকরী ছাড়তে হলো।সংসারের ভাড় পড়লো একা সিরাজ সাহেবের উপর।কিছুতেই তিনি কুলিয়ে উঠতে পারছেন না।গত ছয় মাস ধরে চেষ্টা করছেন বাড়িতে পড়ার জন্য একটা শাড়ি রিমাকে কিনে দেয়ার।কিন্তু পারছেন না।সেই কবেকার দুটো শাড়ি আর শ্বাশুড়ির পূরোনো শাড়িগুলো দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে বেচারী রিমাকে।রিফাতের পিছনেই চলে যায় বেতনের অনেকটা অংশ।বাড়ির খরচ,মায়ের ওষুধ পত্র,নিজের পকেট খরচ এসবের কথা ভাবলেই তিনি ডুবে যান অন্ধকারে।মরে যেতে ইচ্ছে করে তার।
সিরাজ সাহেব অনেকক্ষণ রিমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন।হঠাৎ তিনি খেয়াল করলেন এই সময়টায় কোন কষ্টই তার হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারলো না,পারলো না তাকে অন্ধকারে ডুবিয়ে দিতে।তিনি ঠিক করে ফেললেন প্রতিদিন কিছুটা সময় ঘুমন্ত রিমার দিকে তাকিয়ে থেকে কষ্ট ভুলে থাকবেন।গ্রামের বাড়ির একমাত্র জমিটা বিক্রি করে কোন ব্যাবসা শুরু করবেন নাকি তাও ভাবলেন একবার।রিমার কষ্ট আর তার সহ্য হচ্ছে না একদম।তবে এ ব্যাপারে রিমার সাথে কথা বলা আবশ্যক।সিরাজ সাহেব এসব ভাবতে ভাবতে চোখ দিলেন রিফাতের উপর,ওমা পিচ্চিটা যে বাবার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসছে!কোন শব্দ না করেই ও জেগেছে,কোন শব্দ না করেই হাসছে।সিরাজ সাহেবের কেন যেন মনে হলো রিফাত তার ভাবনাগুলো বুঝতে পেরেছে।

ভালবাসা এবং কিছু শূন্যতা

মেয়েদের ফটোলিখেছেন - Chandro Bindu

ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি পরছে।যেন আকাশের সব অভিমান অশ্রু হয়ে ঝরে যাচ্ছে।বৃষ্টি দেখলেই মন ভাল হয়ে যায় তার।বৃষ্টি দেখে,বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা অনুভব করে ।আজ অনেকদিন পর স্মৃতির ছেড়া পাতাগুলো খুব উল্টাতে ইচ্ছা হল হিমাদ্রির
হিমাদ্রি আর আদৃতার বন্ধুত্ব শুরু হয় ভার্সিটিতে। একি ক্লাসে পড়ে তারা।হিমাদ্রি সবসময় খুব চুপচাপ থাকে। কারোর সাথেই তেমন কথা বলে না।তাই বন্ধু বলতে তার কেও নেই।সবসময় একা থাকে,নিজের সাথে কথা বলেই সময় কাটায় যেন,একাকীত্ব তার একমাত্র বন্ধু।শূন্যতা যখন তকে গ্রাস করে ফেলছিল ঠিক সেই মুহূর্তে বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় আদৃতা।তখন থেকে শুরু হয় হিমাদ্রির জীবনের নতুন অধ্যায়।
খুব চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে আদ্রিতা।সারাক্ষন কিছু না কিছু করছেই।দুষ্টুমি ফাজলামিতে সবাইকে মাতিয়ে রাখে।আর ওদের মধ্যে খুনসুটিতো লেগেই আছে।প্রতিদিন ঝগড়া করে একে অপরকে মানানো তাদের নিত্যদিনের অভ্যাস।
এভাবে ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে হিমাদ্রি,যেন তার অন্ধকার মেঘাচ্ছন্ন জীবনটা কেও ভোরের শুভ্র আলোয় ভরিয়ে দিয়েছে। যে ছেলের কাছে শূন্যতা আর একাকীত্বই ছিল তার জীবনে চলার পথের সঙ্গী,আজ সে আর একা নেই।অনেক বন্ধু তার যারা সবসময় তার সাথে থাকবে,তাকে আগলে রাখবে। তবে মা-বাবার পর তার সবচেয়ে আপন একজনই,আদৃতা।যতযাই হোক না কেন সে আদৃতাকে হারাতে চায় না।তাই তো যেই ঝগড়া শুরু করুক না কেন হিমাদ্রি আগে সরি বলবে। আদৃতার মুখে হাসি দেখার জন্য সে সবকিছু করতে পারে।
সেদিনও ঠিক এভাবেই বৃষ্টি পরছিল। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ভার্সিটির বারান্দায় দাড়িয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছিলো সে।হঠাৎ একটি মেয়ে দৌড়ে এসে তার পাশে দাঁড়াল।তাকাতেই মনে হল মেয়েটি যেন বর্ষাস্নাত কদম ফুল।মেয়েটির টানাটানা চোখ আর মায়াকাড়া চেহারা মন কেড়ে নিয়েছে তার।অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে মেয়েটির দিকে।হিমাদ্রি বলে ডাকতেই চমকে উঠল সে
-কিরে হিমাদ্রি ঠিক আছিস তো?
-অহ!তুই??কখন এলি?
-কখন এলি মানে?এতক্ষন ধরে দাঁড়িয়ে ডাকছি আর তুই আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছিস
-নাহ!এমনি
-অহ!তাই বল।আচ্ছা ক্লাস না করে এভাবে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকলে হবে?চল ক্লাসে যাই।
-নারে আজ আর ক্লাস করব না।তুই যা।আমি যাই আজকে
বলে হাঁটতে শুরু করল। ওদিকে আদৃতা ডেকেই চলেছে,কিন্তু আজকে কেন জানি সাড়া দিতে ইচ্ছে হল না।
আদৃতাকে নিয়ে আজ সারাক্ষণ ভাবল হিমাদ্রি। নাহ!কোন কাজেই মন বসাতে পারছে না সে।কিন্তু কি অদ্ভুত! যতবার সে মেয়েটির কথা ভাবছে মনে কিরকম যেন অনুভূতি হচ্ছে যা কখনো আগে অনুভব হয়নি।তবে কি আমি প্রেমে পরেছি? যে ছেলে প্রেম ভালবাসা থেকে একশ হাত দূরে থাকে সে কি একটু একটু করে ভালবাসতে শিখে গেল??চিন্তার সাগরে ডুবে থাকতে থাকতে রাত পার হয়ে কখন ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে খেয়াল করে নি হিমাদ্রি।অনেক চিন্তার পর ভাবল না এভাবে বসে থাকলে তো হবে না,পাগলীটাকে জানাতে হবে যে তাকে কত ভালবাসে। আদৃতাকে ছাড়া তার জীবনটাই তো অচল।ভাবতেই আনন্দ লাগছে তার সবচেয়ে ভাল বন্ধুকে সে এত ভালবাসে।যে অনুভূতিকে সে বন্ধুত্ব বলে মনে করত আসলে সেটা ছিল তার ভালবাসা।এমন সময় হঠাৎ করে ফোনটা বেজে উঠল।ফোনের স্ক্রিনে তাকাতেই দেখল আদৃতার নাম
-এই শোন তোকে একটা জরুরি বলব।এখনি ভার্সিটি চলে আয়।
-আচ্ছা আসছি।
তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে ভার্সিটিতে চলে গেল হিমাদ্রি।এক ঘণ্টা হয়ে গেল আদৃতার দেখা নেই।নাহ মেয়েটা আর ঠিক হল না।অপেক্ষার পালা যেন শেষ হচ্ছেই না। কখন যে তাকে মনের কথাগুলো বলতে পারব!
-এই হিমাদ্রি।সরি অনেক দেরি করে ফেললাম।
-তুই তো দেরি করবি।এ আর নতুন কি?
-আচ্ছা প্লিজ রাগ করিস না। তোকে একটা কথা বলব।
-কি বলবি তাড়াতাড়ি বল কারণ আমিও তোকে একটা জরুরি কথা বলব।
-তোকে বলা হয় নি।রাতুল আমাকে গতকাল রাতে প্রপোজ করেছে।কিন্তু আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।তাই ওকে বলেছি হিমাদ্রি যা বলবে আমি তাই করব।
-তাই নাকি?আমি যদি না বলি তখন?
-তাহলে না বলে দিব।কারন আমি জানি তুই আমাকে সবার থেকে ভাল বুঝিস আর সবসময় আমার ভাল চাইবি।
-তুই কি রাতুলকে পছন্দ করিস?
-আমি জানি না হিমাদ্রি।
-আমি যা বুঝার বুঝে গিয়েছি।রাতুল অনেক ভাল ছেলে। তোকে কখনও কষ্ট দিবে না।আর যদি ওর কারণে যদি তোর চোখে এক ফোঁটাও জল আসে,তাহলে আমাকে বলবি ওর খবর করে দিব।
-কি যে বলিস না।বলেই হেসে ফেলল আদৃতা।
-আচ্ছা পাগলী আমি যাই। তুই আর তোর পাগল অনেক সুখে থাক।
-যাই মানে? তুই না কি জরুরি কথা বলবি?
-নাহ কিছু কথা অজানা থাকাই ভাল।বলেই চলে গেল সে।কারণ যেখানে সুখ থাকে সেখানে শূন্যতাকে থাকতে নেই।
অনেকদিন পর পাগলীটার কথা মনে করে চোখ ভিজে উঠল হিমাদ্রির।। জীবনের কাছে হয়ত একটু বেশিই চেয়ে ফেলেছিলাম আমি । সবাই তো জীবনে সব কিছু পায় না। আমি না হয় তোর স্মৃতি আর কিছু শুন্যতা নিয়েই জীবনটা কাটিয়ে দিব। আসলে কি জানিস? যাদের নিজেদের ইচ্ছাগুলো অপূর্ণ থাকে অন্যের পূর্ণতায় তারা সুখ খুঁজে নেয় ।

পুনশ্চঃ যদি গল্পে কোন প্রকার ভুল থাকে তাহলে ক্ষমাদৃষ্টিতে দেখার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি।

যে ভালোবাসা সবচেয়ে দামী

প্রেমের গল্পলিখেছেন - নওশীন শিকদার।
________________________________
-ইথার ভাইয়া দাড়া, আমিও আসতেসি...
- কই আসবি রে তুই মিমি??
-আমি জানি তুই আজও কলেজের বাহানা দিয়ে আব্বুর সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করতে আব্বুর অফিসে যাচ্ছিস...!
সতের বছরের কিশোর ইথার তার পাঁচ বছরের ছোট্ট বোন মিমির কথা শুনে বাসার দরজা দিয়ে বের হতে নিয়েও থমকে দাড়িয়ে রইল.......
- কিরে দুষ্টু ভাইয়া,আমার চকলেট কালারের হিল জুতাটা কই লুকায়া রেখেছিস,আব্বু বলেছিল আব্বুর সাথে বেড়াতে গেলে আমি যেন আব্বুর দেয়া ওই জুতাটা পড়ে যাই...! আর কিছুক্ষণ আগে টিভিতে দেখলাম আজ ভ্যালেন্টাইন ডে.. ভুলে গেছিস আমাদের প্ল্যান?
- ইঁদুর তোর জুতা খেয়ে ফেলেছেরে মিমি... আমি কলেজে যাই,আসার সময় ঠিক অমনই একটা জুতা আনব,তারপর যাইস।
- তুই প্রতিদিনই এটা বলিস আর আসার সময় একটা করে কিটক্যাট চকলেট নিয়ে আসিস আমার জন্য.. কিন্তু আমি জানি আব্বু-ই চকলেট দেয় তোর কাছে আমাকে দেয়ার জন্য,আর তুই চুরি করে সব চকলেট খেয়ে মাত্র একটা কিটক্যাট নিয়ে এসে আমার হাতে ধরায়া দিস প্রতিদিন!
-আল্পনা আন্টি ..................
মিমিকে ধরো,গেট টা একটু লাগাও আমি যাই...!
**********************
......সিঁড়ি বেয়ে ইথারের দ্রুত গতিতে নামার শব্দের সাথে সাথে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় পেছন থেকে আসা কোমল কন্ঠের " ভাইয়া...... ভাইয়া......" চিৎকার।
********************
একমাস দুই দিন পার হয়ে গেছে প্লেন দূর্ঘটনায় মিমি - ইথারের বাবা মিনহাজ চৌধুরী মারা যাওয়ার। উনি বেঁচে থাকতে বিজনেস এর ব্যস্ততায় খুব কম দিনই বাসায় থাকতেন, তবে যেদিনই বাসায় আসতেন, ইথারকে ইথারের পছন্দের ক্যাপ কিনে দিতেন,মিমি কে অনেক চকলেট কিনে দিতেন। ইথার ওর আদরের বোন মিমিকে রাগানোর জন্য মিমির পড়ার টেবিলের ড্রয়ার থেকে কিটক্যাট চুরি করে খেত! আসলে,রাগলে মিমির ছোট্ট মুখটা গোলাপী ক্যন্ডিফ্লস এর মতো হয়ে যায়,এটা দেখতে ভীষন ভালোলাগে ইথারের। আর মিমি ইথারের আলমারি খুলে শখের রং - বেরংয়ের ক্যাপের কালেকশন থেকে ক্যাপ চুরি করে লুকিয়ে রেখে ভাইকে রাগিয়ে মজা পেত!
ইথারের চোখ জ্বালা করে এসব ভাবলেই.. যে, ভাগ্যের নির্মম খেলায়... আজ আর ইথারের কিটক্যাট চকলেট চুরি করে খাওয়া হয়না বরং ইথার নিজেই মিমির জন্যে কিটক্যাট নিয়ে আসে।আর মিমিটা তো সারাদিন "আব্বু.. আব্বু.." করেতে করতে ,আগের মতো ক্যাপ লুকিয়ে ভাইকে রাগানোর কথা ভুলেই গেছে...! নিষ্পাপ পাগলীটা এখনও কেন বোঝেনা যে ওর বাবা আর কোনদিন ওকে সন্ধ্যাববেলায় ব্যালকনিতে কোলে নিয়ে বসে মজার মজার গল্প শুনাবেনা, চকলেট কিনে সারপ্রাইজ দেবেনা!

********************
চোখের জলের ফোঁটা গাল বেয়ে পিচঢালা রাস্তায় পড়ল........ ফেব্রুয়ারীর ফাল্গুনী রোদে তপ্ত রোড শুষে নিল সেই নোনতা দুঃখ,কিন্তু কোনভাবেই বুকের ভার কমাতে পারেনা ইথার! সৃষ্টিকর্তার কাছে শুধু প্রশ্ন করে......" আম্মু তো দু বছর আগেই অন্যকোথাও বিয়ে করে চলে গেছে,একটিবারও ফিরে তাকায়নি আমাদের দিকে, আর শেষ পর্যন্ত বাবার ছায়াটুকুও কেন মুছে গেল আজ...! "
********************
হঠাৎ প্যান্টের পকেটে ঘুমিয়ে থাকা মোবাইলের জাগ্রত ভাইব্রেশনে চমকে ওঠে ইথার... রিসিভ করতেই শুনতে পায় ওদের ক্লাসের রিশাতের মায়ের কান্নাজড়ানো কন্ঠ।
- ইথার,বাবা... রিশাত কি গতকাল সন্ধ্যায় কোচিং ক্লাসে গেছিলো?
- না আন্টি, কেন?
-রিশাত তো আমারে হুমকি, ধমক দিয়া আমার আলমারি থেইকা গতকালও টাকা নিয়ে গেছেগা কোন ডিজে পার্টিতে!তুমিতো জানো বাবা,রিশাত রে আমি একাই মানুষ করসি,ভালোবাসা,ভালো শিক্ষার কমতি হইতে দেইনি কুনুদিন।কিন্তু একটু বড় হওয়ার পর থেকাই রিশাত আমারে খ্যাত বলে,বন্ধুদের সামনে মা বইলা পরিচয় দিতেও চায়না........!
কিছু বলার ভাষা হারিয়ে গেছে ইথারের!
*******************
হঠাৎ ইথারের অশ্রুনীল চোখের দৃষ্টিতে আটকে গেল আজকের ভালোবাসা দিবসে... একটি অতি সাধারণ অথচ অমূল্য ভালোবাসার দৃশ্য..... রাস্তার পাশে ফুটপাতের কোনায় উষ্কো-খুষ্কো চুলের এক মাঝবয়সী লোক তার বালক বয়সী ছেলেটিকে মাটির হাড়িতে করে ডালভাত মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছেন।ছেলেটিও কি মধুর তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছে.................. তা দেখে ছেলেটার বাবার মুখে কি অদ্ভুত তৃপ্তি মাখা ভালোবাসার হাসি...!
ইথারের মনে পড়ছে সেই দিনগুলো...যখন আব্বু ওকে আর মিমিকে নিয়ে ছুটির দিনে মুভি দেখতে গিয়ে রেস্টুরেন্টে বসে হাতে তুলে খাইয়ে দিতেন.....।আবার বাসায় যেদিন বাবার সাথে খেতে বসা হতো,ইথার আর মিমি ইচ্ছে করে খাবারের প্রতি অনীহা দেখাত,বাবা যেন আদর করে খাইয়ে দেয়,এই আশায়.. আর তখন সেই ছোট্ট আশাগুলো মিষ্টি করে পূরন করে দিত ওদের আব্বু! এ বছর,আব্বুকে নিয়ে ইথার আর মিমি ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করবে,এমনই প্ল্যান ছিল!
আজ ভ্যালেন্টাইনস ডে..... আগামীতে হয়ত কোন জীবনসঙ্গী ভালোবাসা দিবসে পাশে রবে,কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা বাবাকে নিয়ে ভ্যালেন্টাইনস ডে পালনের সুযোগ এ জীবনে আর কোনদিন আসবেনা! কেন সারাটি জীবনের জন্যে অপূরনীয় রয়ে গেল মা বাবার ভালোবাসা পাবার তৃষ্ণা..!! "
আসলেই পৃথিবীটা বড় অদ্ভুত!
মা বাবাকে সম্মান করার শিক্ষা ইথারদের মধ্যে আছে কিন্তু রিশানের মতো মা ইথারের ভাগ্যে জোটেনি,আর ফুটপাতের ওই ছেলেটির ইথারদের মতো দোতালা ডুপ্লেক্স বাড়ি আর বিলাসবহুল খাবারের প্রাচুর্য নেই,কিন্তু "বাবা" নামক বিশেষ মূল্যবান সম্পদ আছে,যা ইথার আর মিমির নেই!
উৎসর্গঃ সেইসব ইথারদের.. যাদের সব আছে ,বাবা কে নিয়ে ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের মতো বিশাল মনও আছে কিন্তু মা বাবা নেই,আর সেইসব রিশানদের.. যারা মা বাবার ভালোবাসাকে পথের ধূলোর চেয়েও নিকৃষ্ট মনে করে মিথ্যা মোহে দিব্যি বেঁচে আছে।

পাপড়ি গুলো ঝরে পড়া ভালবাসার গল্প

ভালবাসার গল্প
ভালবাসার গল্প
লিখেছেন - শেষ রাতের আঁধার

একেবারে গোসল করে বের হয়েছে সিহাব। এই ঠাণ্ডার মধ্যেও গোসল। আজ প্রথম দেখা হবে সূচির সাথে, ভালবাসার পর।একটু ভালভাবে না গেলে কি হয়?সাদা গোলাপি চেকের শার্টটা পরে যেতে বলল সূচি। উঠেই ইস্রি করে গায়ে পরে নিল। উপরে নিজের সবচেয়ে দামী জ্যাকেটটা। মোটামুটি দৌড়ে বের হল সিহাব। তবে রাস্তায়ই থেমে গেল। প্রতিদিন এই মেয়েটার সাথে, বাসা থেকে বের হবার পরই দেখা হয়।মেয়েটা মুনা। যেই বাড়িটায় সিহাব থাকে, সেই বাড়িওয়ালার মেয়ে। সিহাবরা থাকে দোতলায়। আর বাড়িওয়ালারা নিচ তলায়। মুনাকে দেখেই সালাম দেয় সিহাব।মুনা সিহাবের ছোট, তুমি করে বলে। তবুও সালাম দেয়।
- ভালো আছেন ভাইয়া?
- হ্যাঁ ভালো। তুমি?
- জ্বি ভালো। আজকেও সালাম দিলেন? আমি আপনার ছোট কিন্তু।
- সালাম সবাইকেই দেয়া যায়।
- তাই ?
- হ্যাঁ।
- কোথাও যাচ্ছেন বুঝি?
- হ্যাঁ, এক বন্ধুর সাথে দেখা করব।
- হুম দেখেই বোঝা যাচ্ছে।অনেক সাজগোজ করে বের হয়েছেন আজ। প্রতিদিন তো একটা হাফ প্যান্ট পরা অবস্থায়, আপনাকে দিনের শুরুতে দেখি।
সিহাব একটু লজ্জা পেল।প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই, একটু হাওয়া বাতাস খেতে বের হয় সিহাব। আসলে হাওয়া বাতাস না, মুনার লাগানো ফুল গাছের, ফুলের ঘ্রাণ নিতে আসে।ফুলের ঘ্রাণ নিয়ে দিন শুরু করলে, দিনটা অনেক ভালো যায়।মনটা অনেক পবিত্র লাগে।আর এই কাজটা ঘুমানোর সময় পরে থাকা থ্রি কোয়ার্টার পরেই করে। ঠাণ্ডার মধ্যেও তাই পরেই আসে।আর ঘ্রাণ নেবার পরে, পিছন ফিরে মুনার সাথে দেখা হয়। একটা সালাম দিয়ে সিহাব চলে যায়।কোনদিন টুকটাক কথা হয়।
- না আসলে, ওভাবেই চলে আসি তো। আচ্ছা কাল থেকে ফুল প্যান্ট পরে বের হব সকালে।
- হিহি, ওটা আপনার ইচ্ছা। ভাইয়া, আজ কিন্তু ফুলের ঘ্রাণ নিতে আসেন নি।
- আজ একটু ব্যাস্ত ছিলাম, সকালে উঠে। আর প্রতিদিন চুরি করে তোমার গাছের ফুলের ঘ্রাণ নেই, এটাও ঠিক না।
- আমার কিন্তু ভালোই লাগে ভাইয়া।
- আজও আসতাম, তবে তাড়াহুড়ায় আসতে পারিনি। আজ প্রথম দেখা ওর সাথে, বুঝই তো। কত কাজ।
- কার সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন, প্রেমিকা?
- না মানে।
- হিহি, বুঝতে পারছি তো।
হাসলেও হঠাৎ মুনার মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। মুখ ভার।সিহাব এখানে মন খারাপের কিছু পায় নি।বুঝতেও চায় নি। মেয়েদের মনে ব্যাপারগুলো অনেক জটিল। এতো সহজে বুঝে নেয়া যায় না।সিহাব একটু তাড়া দেখিয়ে বলল, মুনা, আমি আসি। দেরী হয়ে যাচ্ছে।
- ওও হ্যাঁ ভাইয়া। আপনার দেরী হয়ে যাচ্ছে।যান তাহলে।
- আচ্ছা।
- ভাইয়া, একটা কথা বলব?
- হ্যাঁ বল।
- আপনাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে। আপু অনেক পছন্দ করবে।
- ধন্যবাদ।
- আর একটা কথা বলি?
- বল।
- আপনি প্রতিদিন আমার বাগানের, ফুলের ঘ্রাণ নিতে আসবেন কিন্তু।
- আচ্ছা আসব।
মুনা মেয়েটার চোখে জল চলে এসেছে। কোনমতে কান্না আঁটকে রেখেছে।সিহাব এই চোখের জলের মানে জানে না। জানতেও চায় না। দেরী হয়ে যাচ্ছে।সূচি এসে অপেক্ষা করবে। সিহাব চলে গেল অনেক দ্রুত। আজ মনটা অনেক ভালো। সূচির সাথে প্রথম দেখা, ভালবাসার পর। সিহাব চলে যাচ্ছে। আর মুনা পিছন থেকে দেখছে। হয়ত হারিয়ে যাচ্ছে কিছু। বুকের ভিতর কষ্ট হচ্ছে মুনার। চোখের ভিতর ব্যথা করছে।আসলেই হারিয়ে ফেলছে কিছু মুনা। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে, ফুল গাছ গুলোর যত্ন করে মুনা অপেক্ষা করে। কখন সিহাব আসবে। সিহাব ঘুম ঘুম চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে, লুকিয়ে লুকিয়ে ফুলের ঘ্রাণ নেয়। মুনাও লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে। কেন যেন দেখতে অনেক ভালো লাগে, এভাবে ছেলেটাকে। ঘ্রাণ নেয়া শেষ হলেই,মুনা বের হয়ে আসে। সিহাব মুনাকে দেখে বোকা বোকা চোখে তাকিয়ে ,একটা সালাম দেয়। সিহাবের এই বোকা বোকা চেহারা দেখে বড্ড হাসি পায়।হাসে না মুনা।হাসি লুকিয়ে, একটু আধটু কথা বলে। প্রতিদিন কথা বলে। কখন যেন এই জিনিসটার প্রেমেই পড়ে গিয়েছে মুনা। বুঝতে পারেনি। কখন যেন সিহাবকে ভালবেসে ফেলেছে, টের পায় নি। অনেক দিন বলতে গিয়েই বলতে পারেনি। একটা ছেলে হাফ প্যান্ট পরে, বোকা বোকা চোখে তাকিয়ে আছে। তাকে ভালবাসি বলা যায় নাকি? তার চেয়ে কয়েকদিন পর,মুনার জন্মদিন। মুনা চেয়েছিল, সেদিন সিহাবের সাথে সারাদিন ঘুরবে। সিহাব একটা পাঞ্জাবী পরবে,যে কোন রঙের। আর মুনা আকাশী রঙের শাড়ি। সেদিন চুপ করে হাত ধরে বলে দিবে, সিহাব ভাইয়া, আপনাকে আমি ভালবাসি। সারাজীবন এভাবে হাত ধরে থাকতে চাই? রাখবেন তো?কেন রাখবেন না? রাখতে হবে।আমি কি দেখতে দেখতে অসুন্দর? কত মিষ্টি একটা মেয়ে।
মুনার আর এই কথাগুলো বলা হল না। বুকের ভিতরের ভালবাসা ,বুকের ভিতর রয়ে গেল। ফুল গাছ গুলোর উপর খুব রাগ হচ্ছে। কেন হচ্ছে মুনা জানেনা।সবগুলো গাছ গিয়ে নষ্ট করে ফেলল।নষ্ট করে কাঁদছে মুনা।অনেক যত্নে রেখেছিল ফুল গাছ গুলোকে মুনা। নষ্ট করে কাঁদছে। অনেক যত্নে বুকের মাঝে জমিয়ে রাখা, ভালবাসা হারিয়ে যাওয়াতে কাঁদছে। সিহাবের আসতে হবে না ফুলের ঘ্রাণ নিতে। মুনা এটা চায় না আর।
ভালবাসতে সবাই পারে। ভালবাসার কথা বলতে সবাই পারে না।কেউ বলে দেয় মনের কথা।কেউ বুঝিয়ে দেয় না বলেও।কেউ বুকের মাঝে জমিয়ে রাখে। জমিয়ে রাখতে রাখতে একদিন হারিয়ে যায় ভালবাসা। চোখের জলে সেই ভালবাসা ফিরে আসে না। ভালবাসতে সাহস লাগে, সেই সাহস সবার থাকে না। কিছু ভালবাসার কথা কেউ জানে না। চুপিসারে ঝরে পড়ে, ঐ বাগানের ফুলের পাপড়ি গুলোর মত।

রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

দুরত্ত-ব্যবধান কবিতা

premer kobita

কাল তুমি ছিলে এখানে
আজো আছো
তাহলে কেন এত দূরে.............

নিঃশব্দতা যখন করবে প্রশ্ন
বলে দাও আমায়
কি বলবো আমি
নিয়ে এক বুক উষ্ণ...............

তুমি করোনি বিশ্বাস কখনো
হয়তো আমার মাঝেই ছিলো কিছু কমতি
শুধু মনে রেখো যেমনি আমার ছিলে
থাকবে তেমনি............

এ মনে কি ব্যথা
কখনো জানতে চাইলেনা
জানিনা কেন.........

আছো আমার পাশেই
তবুও আছি একাকী
কিভাবে বলি.........

শুধু তুমি আমায় বলো
কিছু না বলে আমি কি করে থাকি
তোমার এই আনমনা
আমি কি করে দেখি.........

কখনো কি আমি বলেছি
কখনো কি তুমি শুনেছো
সত্য কি আর মিথ্যা কি
সেটা আজ নাও জেনে
আমার ছিলে আমারি রবে.........

এ দূরত্ব এ ব্যবধান
কেন আজ তোমার আমার মাঝে............

অশান্ত সাগর ভাবছো যেটা তুমি
ভালো করে চেয়ে দেখো সেটা আমার
চোখের পানি............

কিছুটা তুমি কেঁদেছো
কিছুটা আমি কেঁদেছি
তবুও কারণটা হলো না জানা.........

ভুলে যাও সব পুরনো কথা
বাড়িয়েছি হাত শুরু করো পথ চলা
এ কথা ভেবে আগাই যতো আগে
হটাৎ দেখি সব দূরত্ব ব্যবধান তোমার আমার মাঝে.........।।

ভালোবাসি বলতে হবে না

প্রেমের কবিতা

ভালোবাসি বলতে হবে না !
-----গোলাম সারোয়ার অনিক

আমায় ভালোবাসি বলতে হবে না
শুধু তোমার ঐ শতরঞ্জিত মুখে
আমার নামটি উচ্চারন কর
আমি জ্ঞানহীন যাব।

আমায় দামী কোন উপহার দিতে হবে না
শুধু তোমার পবিত্র হাত দু'টি দিয়ে
আমায় ছুঁয়ে দিও
আমি হারিয়ে যাব।

আমাকে কখনো আর বলতে হবে না
'তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে'
শুধ আমার দিকে চোখ দুটো বাঁকিয়ে তাকাও
আমি স্বর্গ দেখে নেব তোমার চোখে।

আমার দিকে দৌড়ে আসতে হবে না তোমাকে
শুধু তোমার নগ্ন পা দু'খানি দিয়ে
আমার পানে একপা' হাটো
আমি হাইপার ডাইভ গতীতে তোমার কাছে ছুটে যাব।

আমাকে ভালোবেসে ফুল হাতে দাড়াঁতে হবে না আজ
শুধু আমি আসলে মুচকি একটু হেসে
জিঙ্গেস করবে, কেমন আছ ?
আমি ভালোবাসা খুজে নেব তোমার হাসিতে।

আমার সাথে বেরুতে হবে না কখনো
একবার ভালোবাসি বললেই হবে,
সেদিন থেকেই আমার ভ্যালেনটাইন শুরু হবে....
আজ না আমার ভ্যালেনটাইন শুরু করতে ইচ্ছে করছে
একবার বলবে 'ভালোবাসি ভালোবাসি'.

অভিমানিনী কান্না ভালবাসার গল্প


ভালবাসার গল্প By- Pinky Saha

টিভিটা খুলেই চোখ পড়ল নিউজ স্ক্রলের দিকে। কারওয়ান বাজার মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনা। মুহূর্তেই ভয়ে কাঁটা দিয়ে উঠল সমস্ত শরীর। লিখন তো ওইদিক দিয়েই অফিসে যায়। ওর কিছু হয়নি তো? দৌড়ে মোবাইলটা নিয়ে ফোন করলাম লিখনের ফোনে।মনে হল অনন্তকাল ধরে রিং হচ্ছে।নো আনসার! কাঁপা কাঁপা হাতে আরেকবার ফোন করলাম।
হ্যালো।
তুমি ঠিক আছো? ওর কন্ঠটা শুনে মনে হল জীবন ফিরে পেলাম!
কেন, আমার আবার কখন কি হল? আমি মিটিং এ। অফিস টাইমে যে কেন ফোন কর, বুঝিনা। কি বলবে একটু তাড়াতাড়ি বল।
না, কিছু বলবনা।
ওকে, টা টা।
কতটা নিষ্ঠুর হয়ে গেছে লিখন আজকাল।আমি তো ওকে লাঞ্চ ব্রেক ছাড়া ফোনই করিনা, আজ করেছি কতটা টেনশনে পড়ে তা যদি ওকে বোঝাতে পারতাম। এমন রুক্ষ ব্যবহার করার কি খুব দরকার ছিল? লাঞ্চের সময়ও তো প্রতিদিন আমিই ফোন করি। ও খাওয়াদাওয়া করল কিনা না জানা পর্যন্ত কিছুই মুখে তুলতে ইচ্ছা করে না। কই ও তো কোনদিন জানতে চায়না আমি খেয়েছি কিনা। অফিস থেকে আসার কথা সন্ধ্যে সাতটার মধ্যে, মাঝে মাঝেই আটটা-নয়টা বাজে। আমি তো রাগ করিনা, ঝগড়াও করিনা। শুধু একদিন ভেবেছিলাম কথা বলবনা ওর সাথে। কিন্তু আমার এই অভিমান বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারলাম না। সেদিন ও অফিসিয়াল ফাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল, আমি কথা বলছি কিনা এইটা খেয়ালই করলনা। ও তো এমন ছিলনা। আমাদের ভার্সিটি লাইফের প্রেম। অনেক প্ল্যানিং ছিল বিয়ে নিয়ে। আমি নতুন নতুন রান্না করে ওকে খাওয়াব, খেতে যেমনই হোক ও প্রশংসা করবে, যত ব্যস্ততাই থাকুক অফিস থেকে আসার পর আমরা অনেক অনেক গল্প করব, আর ছুটির দিনগুলো বেড়াতে যাব দূরে কোথাও। একসাথেই ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছি আমরা। কিন্তু সংসারে সময় দিতে পারবনা ভেবে নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি চাকরি না করার। ইচ্ছা ছিল আগে সংসারটা গুছিয়ে নিয়ে তারপর ওসব চাকরির চিন্তা করব। ওর নতুন চাকরিজীবন, আমি পাশে না থাকলে কি ও পারবে এতটা প্রেশার নিতে? ওর চাকরির তিন মাস হতে চলল, এখন ওর ব্যস্ততার মাঝে আমাকে কোথাও খুঁজে পাইনা। তবু অপেক্ষা করি, হয়তো আসবে আমাদের স্বপ্ন সত্যি হওয়ার দিন।
একটা বাজে, ওর লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে, আবার কি ফোন করা ঠিক হবে? দোটানার মধ্যেও ফোন টা করেই ফেললাম।
সীমা, আমি জরুরি মিটিং এ আছি, প্লিজ এভাবে বারবার ফোন করনা।
তুমি কি লাঞ্চ করেছ?
না, দেরি হবে।
কখন খাবে? শরীর খারাপ করবে তো।
উফ, তুমি কেন আমার সিচুয়েশনটা একটুও বোঝার চেষ্টা করনা বলতো? এখন রাখলাম, আমার মিটিং শেষ হলে খেয়ে নেব। বাই।
মনের অজান্তেই চোখ জলে ভিজে উঠল। আমি কি সত্যি পারছিনা ওর যোগ্য সহধর্মিনী হতে?
সারাটা দিন কাঁদলাম। কারো সাথে শেয়ার করতেও ভাল লাগেনা, যদি কেউ আমাদের ভালবাসাকে ছোট করে! প্রেমের বিয়ে সুখের হয়না- এই উদাহরণের মধ্যে যদি কেউ আমাকে ফেলে! আমার একটুও ভাল লাগবেনা। ও তো আমাকে বলে ছিল চাকরিটা পার্মানেন্ট না হওয়া পর্যন্ত ওকে অনেক ব্যস্ত থাকতে হবে, আমাকে ধৈর্য্যশীল হতে হবে, আমিও বুঝি, তবু মনে হয় ও কি আমাকে আর একটু বেশি সময় দিতে পারতনা?
কলিংবেল এর শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল, ওহ, ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই চমকে উঠলাম। পাঁচটা বাজে। কিন্তু এখন আবার কে এল? দরজা খুলতেই দেখি অবাক হয়ে গেলাম, লিখন!
তুমি? এত তাড়াতাড়ি?
আই লাভ ইউ, মাই ডিয়ার ওয়াইফ!
মানে? আর তোমার হাতে এত্ গোলাপ কেন?
তোমার জন্য, তোমার মনে নেই? আজ কত তারিখ? আজ আমাদের প্রথম দেখা হওয়ার তারিখটা তুমি কি ভাবে ভুলে গেলে?
সরি, মনে ছিলনা, কিন্তু তোমার কিভাবে মনে থাকল?
তুমি তো জানো, আমি কাজের মধ্যে থাকলে কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কিছু ভাবতে পারিনা, একটা এসাইনমেন্ট ছিল, আজ প্রেজেন্ট করলাম, সবাই খুব প্রশংসা করেছে, আমার চাকরি পার্মানেন্ট উইথ প্রমশোন ফ্রম নেক্সট মান্থ!
সত্যি?
হ্যাঁ, আর আমার এই সব কিছুর ক্রেডিট তো তোমার সোনা। আমি তোমাকে কতটা ভালবাসি তা তুমি কখনই জানবেনা, আমি তো সেভাবে এক্সপ্রেস করতে পারিনা। তুমি আমার উপর অনেক অভিমান কর তাই না? সরি…আচ্ছা, তুমি আমার সরি গ্রান্ট করেছ কিভাবে বুঝব? বোঝাতে হলে চটপট রেডী হয়ে এস, আজ বাইরে ডিনার করব, ক্যান্ডল লাইট ডিনার।
আমি জানিনা কেন অঝোর ধারায় কাঁদতে লাগলাম, সারাদিন কষ্ট পেয়ে অনেক কেঁদেছি আবার এখন কাঁদছি অনাবিল আনন্দ নিয়ে। কি বলব আমি লিখনকে? নিজেকে খুব স্বার্থপর মনে হচ্ছিল।কি নাকি ভেবেছি এতগুলো দিন, অকারনে কস্ট পেয়েছি।
কি হল, এত কাঁদছ কেন? এখন কান্নার আবার কি হল?
কিছুই বলতে পারছিলামনা, শুধু ফিসফিস করে বললাম, আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি আর সবসময় বাসব…।।

এটা গল্প হলেও পারত


hot girls photoলিখেছেন - কানিজ

“এই ছেলে তুমি আমার খাতা দেখে লিখছ কেন?” হঠ্যাৎ চিৎকার শুনে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায় শ্রাবণ। মেয়েটার ননস্টপ বকবকানিতে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগই পায় না সে। অসহায় দৃষ্টি নিয়ে চারপাশে তাকিয়ে দেখে পুরো ক্লাস ওর দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গিতে হাসছে এমনকি গার্ড এ থাকা ভাইয়াটা পর্যন্ত সবার এমন ভাব যেন পৃথিবীতে সেই প্রথম ব্যাক্তি যে অন্যের খাতা দেখে দেখে লিখছিল । আর এই মেয়ে যে বকবক শুরু করসে এর কোনো থামাথামি নাই টেপ রেকর্ডার এর মত চলছে , পুরাই অসহ্য। আগে জানলে শ্রাবণ ভুলেও এই মেয়ের খাতার দিকে তাকাতই না। এই মেয়েটা হচ্ছে তিতলি । বাইরে থেকে খুব রাগি আর অহংকারী মনে হলেও আসলে তিতলি খুবি ইমশোনাল আর ভালো একটা মেয়ে,এই গোপন তথ্যটা অবশ্য তিতলির মা ছাড়া আর কেউ জানে না। সেদিন সকাল থেকেই ওর খুব মেজাজ খারাপ ছিল এর ক্লাস এ অই ছেলেটার হা করে ওর খাতাও দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আর নিজেকে একদমই কন্ট্রোল করতে পারে নি ,সারাদিন এর সমস্ত রাগ অই ছেলের উপর গিয়ে পড়ল। কিন্তু বাসায় আসার পর থেকেই তিতলির মনে হতে লাগলো কাজটা একদমই থিক হয় নি একটা সামান্য কাজের জন্য এত কথা শুনানোর কোন দরকার ছিল না। বেচারা কেমন মাথা নিচু করে ওর সব কথা সুনে যাচ্ছিলো এসব মনে হতেই কেমন খারাপ লাগতে শুরু করল ওর। পরদিন খুব সকাল সকাল কোচিং এ চলে আসলো তিতলি যদি ছেলেটাকে পাওয়া যায় । কোচিং এর ভিতর যেতেই দেখে ছেলেটা মাথা নিছু করে সিঁড়িতে বসে আছে। ওকে ওইভাবে বসে থাকতে দেখে তিতলির খুব মায়া লাগে ,সেও আস্তে করে ওর পাশে গিয়ে বসে তারপর হঠ্যাৎ করেই বলে উঠে -“সরি” চমকে উঠে শ্রাবণ তাকিয়ে দেখে কালকের ওই বদরাগী মেয়েটা বসে আছে, সরি কি ওই বললো নাকি? অবাক করা ব্যাপার এই মেয়ে আবার সরি বলতে পারে নাকি? এদিকে তিতলি কথা বলেই যাচ্ছে “ আসলে কাল আমার ওইভাবে বলাটা উচিৎ হয় নাই , কাল আমার মেজাজটা খুব খারাপ ছিল তো তাই এইভাবে বলে ফেলসিলাম, কিছু মনে কর না। তুমি কথা বলছ না কেন?” প্রশ্ন শুনে ধ্যান ভাঙ্গে স্রাবনের। এতক্ষণ হা করে তিতলির কথা শুনছিল ও। -“না না ঠিক আছে আমি তেমন কিছু মনে করি নি । আর দোষটা তো আমারই। আসলে আমি কেমিস্ট্রি একটু কম পারি তাই কিছু ইকুয়েশন সিওর হয়ে নিচ্ছিলাম।” -“আগে বলবা তো ,আমাকে বললেই আমি নিজেই দেখাতাম। যাই হক আমি আবার কেমিস্ট্রি খুবি ভাল পারি। এরপর থেকে আমি তোমাকে হেল্প করব কেমিস্ট্রি বুঝতে।” এইভাবেই কথা শুরু হয় শ্রাবণ আর তিতলির, অল্প কথা থেকে একসময় ভাল ফ্রেন্ডশিপ হয়ে যায় ২ জনের মধ্যে। একসময় দেখা যায় একজনকে ছাড়া আর একজনের চলছে না। শ্রাবণের সকাল শুরু হয় তিতলির গুড মর্নিং দিয়ে এর তিতলি রাত এ ঘুমাতে যায় শ্রাবণের গুড নাইট শুনে আর সারাদিন কথার রেলগাড়ি তো চলছেই , কোনো সময় কোচিং এ আর কোচিং শেষ হলে মোবাইল এ। ওদের কথা আর ঘুরে বেড়ানোর যন্ত্রণাই শুধু কোচিং সেন্টার না পুরা ফার্মগেট এলাকাই বিরক্ত হয়ে গেল।
একদিন ক্লাস শেষ করে বাসায় যাওয়ার সময় ওরা বাসের জন্য ওয়েট করছে ,একটার পর একটা বাস চলে যাচ্ছে অথচ কোনটাতেই উঠতে পারছে না ওরা ,মেজাজ এমনি গরম হয়ে আছে শ্রাবণের এই সময় তিতলি ওকে ধাক্কা দিয়ে বলে “দেখ দেখ কি সুন্দর রংধনু!!!!!” “হুম একটু আগে বৃষ্টি হইসে তাই” “আরে তুই এত বেরসিক কেন? কই এত সুন্দর একটা জিনিস দেখে খুশি হবি তা না। দেখ আকাশটাকে কি অদ্ভুত সুন্দর লাগছে , ইস! আমি যদি ওইটা ধরতে পারতাম তাহলে কিছু রঙ নিয়ে গায়ে মাখতাম” রংধনু দেখে এত খুশি হওয়ার কি আছে তা শ্রাবণ বুঝে উঠতে পারে না কিন্তু পাগলিটার রংধনু ছোঁয়ার চেষ্টা দেখে
ওর খুব ভাল লাগে। “আরে এভাবে লাফাস না হাত পা ভাঙ্গবে , রংধনু কি ছোঁয়া যায় রে বোকা , বাস এসে পরছে বাসায় চল।” ইদানিং শ্রাবণের মনে খুব অচেনা এক অনুভূতি হয় ,কই আগেও তো ও অনেক মেয়ের সাথে মিশেছে কিন্তু তিতলির জন্য যা হচ্ছে এইরকম আর কারো জন্য তো কোনোদিন ও তো হয় নি। এখন শ্রাবণের সারাদিন কেবল এটাই মনে হয় তিতলি না থাকলে ওর জীবনে আর ভোর হবে না বিকেল আসবে না রাত ও নামবে না। কিন্তু এগুলা তো নিজের মধ্যে নিয়ে বসে থাকলে হবে না তিতলিকে জানাতে হবে। কিন্তু কিভাবে?? এই চিন্তাই সারাদিন ঘুরপাক খায় শ্রাবণের মাথায় । একদিন নিউমার্কেট এ গিয়ে ওর মাথায় অদ্ভুত এক চিন্তা আসে তিতলি কে যদি রংধনুর সাত রঙের চুড়ি কিনে দেয়া যায় তাহলে ও হয়ত অনেক খুশি হবে , রংধনু না এনে দিতে পারলেও ব্যাপারটা কিছু একটা হবে, যা হবে হইতবা ভালই হবে। সারদিন ধরে নিউমার্কেট পুরাটা চার বার চক্কর দিয়ে সে সাত রঙের সাতটা চুড়ি খুজে বের করে, আর কল্পনাতে দেখতে থাকে এইগুলা পরলে তিতলির হাতকে রংধনুর মতই ভাল লাগবে আর মেয়েটা খুব খুশি হবে , কল্পনাতেই তিতলির হাসি মুখ দেখে খুব ভাল লাগে শ্রাবণের। পরদিন ক্লাস শেষ করে ধানমণ্ডি লেক এ যায় ওরা। শ্রাবণ থিক করে আসছে আজ যা হক কিছু একটা করতে হবে এইভাবে আর চলা যায় না। আজ তিতলিকে নিজের হাতে চুড়ি পরিয়ে দিয়ে বলবে “আমার আকাশটা খুব ধুসর রে ,তুই আমার আকাশে রংধনু হবি?? যে রংধনু শুধু বছরে একবার উঠে না বরং সারাজীবন আকাশটাকে রাঙ্গিয়ে রাখবে।” -“শ্রাবণ দেখতো আমার জ্বর আসছে কিনা?” তিতলির কপালে হাত দিয়ে চমকে উঠে শ্রাবণ। -“তোর তো বেশ জ্বর, শরীর একদম পুড়ে যাচ্ছে। চল এখুনি বাসায় চল।” তিতলিকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে মনটাই খারাপ হয়ে গেল স্রাবনের।ধুর আজো বলা হোল না, চুড়ি গুলা পকেটেই থেকে গেল। এদিকে শ্রাবণ জানতেও পারলো না তিতলি গতকাল সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজেছে ইচ্ছা করে জ্বর আনার জন্ন,মনে করেছিল অনেক জ্বর আসলে জ্বরের ঘোরে শ্রাবণকে বলতে পারবে ওর ভালবাসার কথাটা। এমনি অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু বলতে পারে নি,আর ছেলেটাও এত বোকা ওর চোখের দিকে তাকিয়েও বুঝতে পারে না যে কি প্রচণ্ড ভালবাসা নিয়ে তিতলি ওর জন্য অপেক্ষা করছে শুধু ওর মুখে একটিবার ভালবাসি শুনার জন্য। -“কিরে জ্বর কমসে? “ রাত এ কল করে জিজ্ঞেস করে শ্রাবণ। -“হুম নাই এখন” -তাহলে কণ্ঠ এরকম শুনাচ্ছে কেন? মন খারাপ? দাঁড়া আমি এখুনি তোর মন ভাল করে দিচ্ছি।” এই বলে গীটার নিয়ে গান শুরু করে শ্রাবণ- “মুখটা তুলে আকাশটাতে দেখ আরেকবার তোমার সাথে আছি আমি যে চিরকাল জোছনার আলো যখন তোমার গায়ে পড়ে আমি তখন থাকি তোমারই পাশে পাশে” ফোনের অইপাশে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে তিতলি মনে মনে বলে তুই যদি আমাকে এভাবে গান শুনাস তাহলে সারাজীবন আমি মন খারাপ করে থাকতে রাজি আছি।ঁ” -“কি রে তুই কি কাঁদছিস” -“কই না তো” দুজনেই অনেকক্ষণ চুপ।কেউ কোন কথা বলছে না কিন্তু দুজনেরেই অনেক কিছুই বলার আছে,,,,,, তবুও কিসের যেন একটা বাধা। “ঘুমিয়ে পর ,অনেক রাত হয়েছে।” “হুম। শোন কাল আমি রাজশাহী যাচ্ছি , মামার বিয়ে।এক সপ্তাহ পরে ফিরব।” “সাবধানে যাস আর পৌঁছে ফোন দিস।”
পরদিন রাজশাহি চলে যায় তিতলি। অইখানে ওদের বাড়িটা একদম পদ্মার পাড়ে। এখানে আসার পর থেকে তিতলির শ্রাবণের কথা আর বেশি করে মনে পরতে থাকে। ইস!!এখন যদি শ্রাবণ আমার পাশে থাকতো !!!!!!! গতকাল সারাদিন সারারাত ধরে তিতলির ফোন এ চেষ্টা করে যাছে শ্রাবণ, কিন্তু বারবার বন্ধ পাচ্ছে। ধুর মেয়েটা যে কি করে না। মামার বিয়ে নিয়ে হয়ত বিজি, নিজেকেই সান্ত্বনা দেয় ও।
শ্রাবণ খবরের কাগজ খুব একটা পরে না। আজ কি মনে করে যেন সকাল বেলায় পেপার নিয়ে বসলো ও। “পদ্মায় নৌকা থেকে পরে পানিতে ডুবে এক মেয়ের মৃত্যু” খবরটা পরেই পুরা কেপে উঠে শ্রাবন।ভিতরের নিউজ পরার মত শক্তি নিজের ভেতর পায় না। তিতলিও ত সাঁতার জানে না। তবে কি,,,,,,,,,,,,,, আর ভাবতে পারে না শ্রাবণ , মাথা ঘুরে পরে যায়। পরে ঠিক হলে জানতে পারে তিতলিরা সব কাজিন মিলে নৌকায় ঘুরতে বের হয়, নৌকাটা কাঁত হয়ে গেলে পড়ে যায় তিতলি , নদীতে অনেক স্রোত থাকার কারনে দূরে চলে যায় , যখন ওকে খুজে পাওয়া যায় তখন আর ওর দেহে প্রান নেই। সেইদিন এর পর থেকে আর বাসা থেকে বের হয় না শ্রাবণ কারো সাথে কথাও বলে না। ওর মত এরকম এত উচ্ছল ছেলেকে এইভাবে বদলে যাওয়ার কারনটা কেউ ঠিক বুঝতে পারে না। শ্রাবণ এখন বেশির ভাগ সময়ই অই চুড়িগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে আর অদেরকেই তিতলি মনে করে নিজের মনেই কথা বলে। আজ একবছর পর বাসা থেকে বের হয়েছে শ্রাবণ তিতলির কাছে যাচ্ছে অ,পকেটে সেই চুড়িগুলো , আজ তিতলির মৃতু্বার্ষিকী । সময়ের সাথে সাথে হয়ত ঠিক হয়ে যাবে শ্রাবণ কিন্তু না কষ্টটা একদমই কম্বে না বরং সময়ের সাথে সাথে বাড়বে পৃথিবিতে এমন কিছু কষ্ট থাকে যা মানুষ ইচ্ছা করে মনে রাখতে চায়।

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বন্ধুত্বের প্রেম অথবা প্রেমের বন্ধুত্ব

valobasar golpoবুকের বামপাশে একটা চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে।তার সাথে শুরু হয়েছে প্রচণ্ড মাথাব্যথা।প্রচণ্ড অভিমানও হচ্ছে।মনে হচ্ছে অভিমানগুলো জমা আছে বলেই চিনচিনে ব্যথাটা হচ্ছে।মন খুলে কাঁদলে সেই অভিমানগুলোও বুক থেকে বেরিয়ে যেতো,সাথে কমে যেতো ব্যথাও।প্রিয় মানুষটাকে হারানোর কষ্টটা বুঝি এমনি হয়।আমার এই প্রিয়মানুষটার নাম বীথি।জ্ঞান হবার পর থেকে এই একটা মেয়েকেই চিনে এসেছি।ওই ছিল আমার বন্ধু,শত্রু,অভিভাবক সব।এতদিনের সম্পর্কটা সামান্য কয়েকটা কথার জন্য এভাবে ভঙ্গুর হয়ে গেল।এই বীথিই যে আমাকে প্রপোজ করে বসবে তা আমি ঘুনাক্ষরেও ভাবিনি।কোনকালেই ওকে এই চোখে দেখিনি।ওর মুখে এই কথাটা শুনে বুকটা যেমন কষ্টে ফেটে যাচ্ছিল,তেমনি ওর প্রতি রাগও হচ্ছিল।যে বন্ধুত্বে প্রেম প্রবেশ করে সেটা হয় পরিপূর্ণ প্রেম হয়ে যায়,নয়তো সেটা বন্ধুত্বটাকেই ধ্বংস করে দেয়।আমার ক্ষেত্রে বন্ধুত্বটাকেই গলা টিপে হত্যা করেছে।সমবয়স্ক কাউকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে কল্পনাও করতে পারি না।এইসব কিছুই বীথি ভাল করেই জানতো।আর এজন্যই ওর প্রতি খুব রাগ আর অভিমান হচ্ছিল।তারপরও ভেবেছিলাম সব ভুলে আবার আগের মতো করে নেব।কিন্তু শত চেষ্টাতেও আগের মত হল না।কোথায় যেন সম্পর্কের সুরটা কেটে গেছে।

বীথির সাথে এভাবে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমি প্রচণ্ড একা হয়ে গেলাম।আমার আসলে তেমন কোন বন্ধুও ছিল না।কেমন যেন বাধনহাঁরা হয়ে গেলাম।পরীক্ষার রেজাল্টও খারাপ হতে লাগলো,পাশাপাশি হতাশা আমাকে প্রচণ্ড ভাবে ঘিরে ধরল।বীথির সাথে ক্লাসে দেখা হলে খুব মায়া বোধ করতাম,মনে হতো ওর ইচ্ছাটা পূর্ণ করে দেই।নিজেকে হাজারবার বোঝানোর পরও বীথিকে ওইভাবে কল্পনা করতে পারছিলাম না।সেই থেকে ঠিক করলাম কোন সমবয়স্ক মেয়ের সাথেই বন্ধুত্ব করবোনা।সময় কাটানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে গেলাম ভার্চুয়াল জগতে।

তখনো ফেসবুকের প্রচলন তেমন হয়নি,চারিদিকে শুধু মিগের জয়জয়কার।সেখানে রুমি খান নামে একজনের সাথে পরিচয় হল।কেন জানিনা অল্পকিছুদিনের মাঝেই তার সাথে খুব চমৎকার একটা সম্পর্ক হয়ে গেল।ছেলেটা আমার সমবয়সী আর খুব বন্ধুবৎসল টাইপের।বন্ধু দিবসের দিন ওর সাথে ফোনে প্রথম কথা হল।ওইদিন আমি যেন কারেন্টের শক খেলাম।সেদিন আমার অতিপরিচিত ছেলে ‘রুমি’ মেয়ে হয়ে গেল।আমি এতোটাই অবাক হলাম যে কথাই বলতে পারছিলাম না।ভুলটা আসলে হয়েছিল আমারই।রুমি নামের যে মেয়ে হতে পারে সেটা আমার ধারনাই ছিল।তাছাড়া আমি যে ‘সমবয়সী নারীবিদ্বেষী’ হয়ে পরেছি তা আমার চ্যাট থেকেই রুমি বুঝে নিয়েছে।এজন্যই রুমি ইচ্ছে করে ওটা ক্লিয়ার করেনি।শুধু আমার ‘কাণ্ডকারখানা’ দেখে মজা নিয়ে গেছে।যেটাই হোক না চাইতেও আমার জীবনে বীথির মত আরেকজন মেয়েবন্ধুর আগমন হল।ওর সাথে যে এতদিনে পরিমান ঘনিষ্ঠতা হয়েছে তাতে অবশ্য ফিরে আসবারও উপায় ছিল না।তবুও বীথির স্মৃতি মাথায় রেখেই রুমির সাথে মিশতে লাগলাম।

মানুষকে আপন করে নেবার অদ্ভুত একটা ক্ষমতা আছে রুমির।অতি অল্প সময়েই আমার আপন কেউ হয়ে গেল।আমার পড়াশুনা থেকে শুরু করে প্রাত্যহিক অনেক সিদ্ধান্তেই ও আমাকে সাহায্য করতো।আমার প্রতি ওর take care এর বর্ণনা দিলে সত্যি সত্যিই মনে হবে সে আমায় ভালবাসে।অন্তত আমার বন্ধুরা তাই ভাবতো।কিন্তু ও এমন ভাবে take care করতো,তাতে আমার কখনই মনে হয়নি যে সে আমাকে ওইভাবে চিন্তা করে।যেমনটা সকাল ঘুম উঠতে দেরি হলেই এমন একটা ‘সুন্দর’ বাংলা গালি দিবে যে ঘুম থেকে না উঠে পারা যায় না।আর ওর হাতে যে প্রতিদিন কতো খামচি খেতে হয় তারতো ইয়ত্তা নেই।ও ছিল কখনো মা,কখনো বড় বোন আর কখনোবা আমার বন্ধু হিসেবে।রুমির জন্যই বীথির স্মৃতি আমার মাথা থেকে মুছে যেতে বেশি সময় লাগলো না।বরং অনেকক্ষেত্রেই বীথিকে ছাপিয়ে গিয়েছিলো রুমি।বীথির কারনে আমার মনে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল সেটা রুমি অল্পদিনেই কাটিয়ে দিয়েছিল।ওর কাছে এমন কিছু ছিল না আমি শেয়ার করতাম না।এমনকি ছেলেদের ‘স্পেশাল’ ব্যাপারগুলাও বাদ যেত না।রাস্তায় কোন মেয়ে দেখলে আমরা ছেলেরা যেভাবে আলাপ করি ওর সাথেও সেভাবে করতাম।রুমিকে প্রায়ই বলতাম কলেজের জুনিয়র মেয়েদের কারো সাথে প্রেম করবো।কিন্তু কোন মেয়ে ভাল লাগলেও সেই ভালোলাগাটা বেশীদিন থিতু হত না।এজন্য রুমিকে কোন মেয়ের ব্যাপারে বললেই হেসে বলতো তোর দ্বারা আর যাই হোক প্রেম হবে না।

এভাবেই তাইরে নাইরে করে ভালয় ভালয় ভার্সিটি লাইফের ৩ টা বছর পার করে দিলাম।অবশেষে আমার জীবনে প্রেম এলো।নতুন বর্ষে কেমিস্ট্রিতে ভর্তি হওয়া দিয়াকে দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম প্রেম কি জিনিস।টলটলে চোখ আর হালকা টোল পরা কাচা হলুদ বর্ণের মেয়েটায় আমার সমস্ত পৃথিবী কেন্দ্রিভুত হয়ে গেল।আগে কোন সুন্দরী মেয়ে দেখলেই রুমিকে বলতাম ভাল লাগার কথা।কিন্তু দিয়ার কথাটা অন্য কেউতো নয়ই, রুমিকেও বলতে পারলাম না।দিয়াকে প্রপোজ করবো সেই সাহসটাও সঞ্চয় করতে পারলাম না।পুরো কলেজ জুড়ে যে আমি সবাইকে জ্ঞান দিয়ে বেড়াতাম প্রেম না করার জন্য,সেই আমিই যদি প্রেম করি তবে আর রক্ষা নেই। তাছাড়া দিয়া যদি আমাকে ফিরিয়ে দেয়,তবে এই মুখ নিয়ে ভার্সিটিতে থাকতে পারব না।নিজের ভালোলাগা প্রকাশ না করতে পেরে কেমন যেন কুঁকড়ে গেলাম।ক্লাসে অনিয়মিত হয়ে গেলাম আর রুমিকেও এড়িয়ে চলতে লাগলাম।এইভাবে প্রায় ৩ মাস পার হয়ে গেল।ডুবে যাওয়া মানুষের মত খড়কুটো আঁকড়ে ধরতে চাইলাম।রুমিকে বললাম দিয়ার নাম্বার জোগাড় করে দিতে।কপালে যা আছে ভেবে দিয়াকে ফোন দিয়েই বসলাম।প্রথম দিন কথা বলেই চমকে গেলাম।দিয়া বোধহয় এতদিন আমার ফোনেরই অপেক্ষা করছিল।মাত্র ৭দিন কথা বলতেই দিয়া আমাকে হ্যাঁ বলে দিল।আমি যেন স্বর্গ হাতে পেয়ে গেলাম।প্রিয় মানুষকে নিজের করে পাওয়ার আনন্দের মাঝেও কেমন যেন একটা অস্বস্তি কাজ করছিল।দিয়ার এতো সহজে মেনে নেয়াটা আমি কেন যেন মেলাতে পারলাম না।সেই রহস্য ভেদ করলো দিয়াই।আমার হঠাৎ স্তব্দ হয়ে যাওয়াটা রুমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না।তাছাড়া আমিও কিছু বলছিলাম না।বাধ্য হয়েই চুরি করে আমার ডায়েরি থেকে দিয়ার কথা জানতে পারে।সেই থেকে ২টা মাস তার দায়িত্ব ছিল দিয়ার মাথায় আমার ভুত ঢুকিয়ে দেয়া।এবং এই কাজটা সে দক্ষতার সাথে করেছে।

রুমি এমনিতেই আমার সবচেয়ে বন্ধুদের একজন।এই ঘটনার পর ওর প্রতি আমার ভালোলাগাটা অসম্ভব রকম বেড়ে গেলো।দিয়াকে আরো কাছে টানতে যা যা করার সবই রুমি আমাকে শিখিয়ে দিল।মেয়েরা মেয়েদের মন ভাল বুঝে।তাই খুব অল্প সময়েই দিয়ার সঙ্গে আমার বোঝাপরাটা হয়ে গেল।দিয়ার সঙ্গে প্রেম হয়ে গেলেও রুমিকে নিঃসঙ্গ করার মতো অকৃতজ্ঞ হলাম না।আমার প্রেমটা যে রুমির জন্যই হয়েছে তা দিয়া ভাল করেই জানতো।তাই হয়তো প্রথমদিকে রুমির সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি দিয়া।কিন্তু দুর্ভাগ্যই বলতে হবে আমার।আর দশটা মেয়ের চেয়ে দিয়াও বেতিক্রম হতে পারল না।প্রথম দিক থেকেই দিয়া রুমির সাথে আমার সম্পর্কটা অবচেতনভাবেই ঘৃণা করে এসেছে।কিন্তু অল্পকিছুদিনের মধ্যেই সেটা সচেতন ঘৃণায় পরিনত হল।সেটা বুঝেই রুমিও আমাকে এড়িয়ে চলতে লাগলো।দিয়ার এই ব্যাপারটায় আমি খুব বেশি দুঃখ পেলাম,যদিও মুখে কিছুই বললাম না।কিন্তু ওই থেকেই কেন জানিনা দিয়ার সাথে ছোটখাট ব্যাপার নিয়ে ঝামেলা লেগেই থাকতো।এই ঝামেলার হাত ধরেই মাত্র ১১ মাসের মাথায় আমাদের সম্পর্কের ইতি ঘটলো।ওর প্রতি এতই বিরক্ত হয়ে পরেছিলাম যে সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ায় একটুও খারাপ লাগেনি।রুমি বোধহয় এই কারনে কিছুটা অপরাধবোধে ভুগত।এইজন্যই বরাবরের মতো এড়িয়ে চলতো।কিন্তু এরপর আমার জীবনে যা ঘটলো তা বোধহয় দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।জানুয়ারির এক শীতের রাতে রুমির বাসা থেকে ফোন করে বলল,আমার আর রুমির সম্পর্কটা প্রেম কিনা জানতে চাইল।মাথায় বাজ পরলেও বোধহয় এতো অবাক হতাম না।কয়েকদিন পর রুমির মা ফোন করে অনেক কান্নাকাটি করলো।রুমি কিছুতেই বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না।আবার কাউকে পছন্দ করে কিনা সেটাও বলছে না।রুমির ভাইয়ের ধারনা আমাকে ভালবাসে বলেই ও বিয়েতে রাজি হচ্ছে না।জীবনে দ্বিতীয়বারের মত স্থবির হয়ে গেলাম।রুমি কি চাইছে তা আমার আর বুঝতে বাকি রইল না।দুঃখে মরে যেতে ইচ্ছে করলো।আমি ভাল করেই বুঝতে পারলাম আমি যদি ওর সাথে সম্পর্ক রাখি,তাহলে আর ওর বিয়ে করা হবে না।ওর কাছ থেকে সরে আসার জন্যই মিথ্যে ছুতো ধরে বিশাল ঝগড়া লাগিয়ে রুমির সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে দিলাম।আমার এরকম বদলে যাওয়া দেখে রুমি বোধহয় মারাত্মক অবাক হল।

অনেক কষ্ট হলেও রুমির সাথে যোগাযোগ করিনি।এই ঘটনার এক বছর পর পারিবারিক সম্মতিতে নুহার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়।ভেবেছিলাম কিন্তু রুমিকে বিয়ের দাওয়াত দিয়ে কাটা ঘায়ে আর নুনের ছিটা দেবো না।সম্পর্ক না রাখলেও রুমিকে আমি এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারিনি।তাই বিয়ের দাওয়াত না দিয়ে পারলাম না।সেইদিন অনেক দ্বিধা নিয়ে ভয়ে ভয়ে রুমিকে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম কেন সে বিয়ে করছে না।উত্তর না দিয়ে রুমি কাঁদতে লাগলো।অনেক জোরাজুরির পর সে বলল ডাক্তার বলেছেন রুমির মা হবার সম্ভাবনা খুব কম।তিন বছর আগে হরমোন টেস্টে এটা ধরা পরেছে,যেটা এখনো রুমির পরিবারের কেউ জানেনা।সেদিন রুমির কান্না দেখে নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারলাম না।তীব্র অপরাধবোধ আমাকে ঘিরে ধরল।রুমিকে এতদিন আমি কতোটাই না ভুল বুঝেছি।আর ভুল বুঝে কতো পবিত্র একটা সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলেছি।

নুহার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে ১৭ মাস হয়ে গেলো।এঁর মধ্যে নুহা আমাকে একজন দেবদূত উপহার দিয়েছে।এর জন্য আমি ওর কাছে অনেক কৃতজ্ঞ।নুহার সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে সে সবকিছুকেই সহজভাবে নিতে পারে।আমার সাথে রুমির সম্পর্কটা খুব সহজভাবেই নিয়েছে।আজমিনের জন্মের সময় রুমিই ছিল সব।নিজেকে মাঝে মাঝে খুব ভাগ্যবান মনে হয়।নুহা না চাইলে আমার জীবনের সবচেয়ে সেরা বন্ধুটাকে হয়তো আর কাছে পাওয়া হতো না।নুহার তাগিদেই দেশে রুমির চিকিৎসার অনেক চেষ্টা করেছি।কিন্তু ভাগ্যদেবী এখনো সাড়া দেয়নি।এইবার আমি আর নুহা মিলে ঠিক করেছি রুমিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে চিকিৎসা করাবো।ভাগ্যদেবীর সাথে এইবার আমার একটা সেইরকম বোঝাপড়া হবে।আমার পৃথিবীসেরা বন্ধুটার ভাগ্য নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেবো না তাকে...