সৌন্দর্য্য কি? এটা কি কতিপয় ছেলে-মেয়ের কেনা সম্পত্তি? যারা হয়তোবা নিজেকে সুন্দর বলার কিংবা তথাকথিতি সৌন্দর্যকে টাকা দিয়ে কিনবার সামর্থ্য দেখিয়ে বেড়ায়? আজকাল সব জায়গায় দেখি, পাত্র বা পাত্রী চাই বিজ্ঞাপন যেখানে বড় বড় করে লেখা থাকে “সুন্দরী (প্রায় 6 ফুট উচ্চতার সুশ্রী পাত্র চাই। যোগাযোগ করুন।” কিংবা, শিক্ষিত ইন্জিনিয়ার পাত্রের জন্য সুন্দর, ফর্সা (আলাদা করে লিখে দেয়া হয় যেন কালোরা সুন্দর নয়!) পাত্রী চাই। আমরা য আমেরিকা কে বর্ণ্ বাদী বলি, নিজেরা কি বর্ণবাদ প্রশ্রয় দিচ্ছি না? আবার দেখে মনে হয় পাত্র আমেরিকায় দু পা দিয়ে বসে আছে বিয়ে করা মাত্র নিয়ে যাবে। এছাড়া আরো কতো কিছু চোখে পড়ে। অনেকে আবার বাড়ি গাড়ির ফিরিস্তি দেন। ছেলে বা মেয়ের একটু খুত থাকলে যেন গাড়ির লোভে হলেও তাদের বিয়ে হয়। ব্যাপারটার জন্য সমাজ দায়ী অনেকটা। একজন ডিভোর্সি মেয়ে বা ছেলের কি নতুন করে জীবন শুরু করার অধিকার নেই? আজ আমরা যদি তাদের আলাদা করে না দেখে স্বাভাবিকভাবে দেখতাম তাহলে গাড়ী বাড়ির প্রলোভন দেখানোর দরকার পড়ত না। মাঝে মাঝে মনে হয়, এরা গাড়ীকে না পাত্র-পাত্রীকে বিয়ে করে? কিংবা চামড়ার রং আর কয়েকটা কাগজের টুকরার কাছে শিক্ষাটা নিতান্তই ক্ষুদ্র হয়ে যায়? এমনটা করে আমরা যে কি করছি নিজেরাই জানিনা। পরোক্ষভাবে আমরা লোভকে প্রশ্রয় দিচ্ছি এর ফলে মেয়েদের ক্ষেত্রে যৌতুকজনিত নির্যাতন বাড়ে। এমনকি ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলোর মধ্যে কথিত সৌন্দর্যের কনসেপশন ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে তাদের চেনানো হচ্ছেনা। 15-20 বছর পর মুখের লাবন্য যখন উড়ে যাবে তখন এই মানুষগুলোই বুঝবে একটি সংসার চালাতে যতটা না সৌন্দর্য প্রয়োজন তার থেকে বেশী সহনশীলতা, শিক্ষা আর একটা ভালো পরিবার দরকার। টাকা দিয়ে সঙ্গ কেনা যেতে পারে সত্যিকার সাথীকে মন দিয়ে কিনে নিতে হয়। ভালোবাসা মানে অনেক টাকা, ফর্সা চেহারা , তথা কথিত কিউটনেস নয়। কাউকে ভালোবাসি বলে সে শুধু আমার, অন্য কারো তার উপর কোন অধিকার নেই, মনের খাচায় বন্দি করে রাখবো এমনটাও না।ভালোবাসা ব্যবহারে। যাকে ভালোবাসেন তার কাছে যেটা ভালো, সেটাকে মন থেকে গ্রহণ করাই ভালোবাসা। কেউ কাউকে মনের দামী জায়গাটুকু দেয় না। নিজেকেই করে নিতে হয়।
 
Top