chat
ডেস্কঃ অনলাইনে নতুন কারো সঙ্গে চ্যাট করা কিংবা প্রেমের ভান করার মতো ঘটনা হয়তো স্রেফ মজার তবে ক্ষতিকর। তা ছাড়া অজান্তেই আপনি পড়ে যেতে পারেন নানা ফাঁদে।তাই সময় এসেছে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক হওয়ার। কেন ক্ষতিকর তা জেনে নিন কয়েকটি ঘটনা থেকে:

শান্তিলতা (ছদ্মনাম) অর্ণবের সঙ্গে চ্যাটিং শুরু করেন একেবারেই আচমকাই। এর দুই বছর পরে একদিন দেখা করেন তার সঙ্গে। দিনের পর দিন বার্তা মারফৎ কথা হয়েছে তাদের। অথচ জানতেই পারেন নি ছেলেটি আসলে কে। শান্তিলতাকে নিজের যে ছবিটি অর্ণব পাঠিয়েছিলো তাতে একটি অসাধারণ সুদর্শন ছেলে হিসেবে দেখা যায় অর্ণবকে। অথচ শান্তিলতা ছিলেন অত্যন্ত আকর্ষণীয়। কে জানতো তার জন্য অপেক্ষা করছে মারাত্মক প্রতারণা।

শান্তিলতার নিজের মুখেই শোনা যাক, “আমি আসলে একটি অবমাননাকর সম্পর্কে জড়িয়েছিলাম। আমি তখন তার জন্য সব ধরনের ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। এ সময় আমি অন্য সব বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। সমস্ত জগৎ থেকেই বিচ্ছিন্ন ছিলাম আমি। সারাক্ষণই ইন্টারনেটে থাকতাম আর তার সঙ্গে চ্যাট করতাম। প্রায় বছরখানেক পর আমি তার ব্যাপারটা লক্ষ্য করি। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

আমি দেখলাম সে যা দাবি করতো আসলে সে তা নয়। তার পাঠানো ছবি আর আসলের মধ্যে বিস্তর ফারাক। এক সময় জানলাম অবৈধ ব্যবসায়ের দায়ে জেলে ছিলো সে। আমি ফিরে আসি ওই সম্পর্ক থেকে, প্রতিজ্ঞা করি জীবনে আর কখনও অনলাইন চ্যাটিংয়ে সম্পর্কে জড়াবো না। শান্তিলতা জানায় তার বাবা-মা এখন তার জন্য পাত্র খুঁজছে, তার একজন সত্যিকার জীবনসঙ্গী। অর্ণব এখন আমার কাছে এক বিষাদময় অতীত।

শান্তিলতার ঘটনাই একমাত্র নয়। এমন ঘটনার শিকার অসংখ্য ছেলে-মেয়ে, যারা দুঃসহ নানা ঘটনার স্মৃতি নিয়ে পুড়ছে ক্রমাগত।

শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির বিষয়ই নয়। এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে সমাজে।

আশিষ বর্ম (ছদ্মনাম)।
, ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে কিভাবে দলের সদস্যদের মধ্যে বিভেদ হয়। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে নানা বিতর্কের জন্ম দেয়। সে জানায়, “আমি আমার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ম্যাসেজ বোর্ড শুরু করি। প্রথম কয়েক সপ্তাহ প্রচুর মেসেজ আসতো। কিন্তু তারপর, তারা প্রচুর অপ্রাসঙ্গিক ও বিব্রতকর বিষয় নিয়ে আলাপ শুরু করে।

এ নিয়ে বিবাদ হয়। স্কুল জীবনের পুরনো রেষারেষি দানা বাঁধতে শুরু করে। কিছুদিন পরই এসব নিয়ে একটি নেতিবাচক আবহ তৈরি হয়। এক পর্যায়ে বন্ধ করে দিতে হয় এটি। অন্য একটি ওয়েব বোর্ডের প্রধান বলেন, “একজন নেট ব্যবহারকারী যখন চ্যাটিংয়ে বসে তখন পৃথিবীর কোন কিছুই তাকে নিবৃত্ত করতে পারে না।” তিনি বলেন, “মানুষ আসলে ইন্টারনেট সুবিধাকে অপব্যবহার করছে।”

মনে রাখা দরকার আপনি কিভাবে চ্যাটের সঙ্গে যুক্ত- এটি কোন বিষয় নয়। বিষয়টি হলো আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা পিসির সামনে বসে আছেন। অথচ বাস্তব আর কল্পনার পৃথিবীর মধ্যে ব্যবধান বিস্তর।

পৃথিবীর অপর প্রান্তের মানুষকেও কাছাকাছি এনে দেয় ইন্টারনেট। এই উত্তেজনায় আচ্ছন্ন থাকে নেট ব্যবহারকারী। ফলে এ সময় উপরে চড়তে থাকে আবেগের মাত্রাটা। আপনি, আপনার কম্পিউটার এবং যার সঙ্গে চ্যাটিং করছেন- এর বাইরে পৃথিবীর আর কিছুই জানেন না আপনি।

আপনার অজান্তেই কেউ হয়তো বসে আছে আপনার ক্রেডিট কার্ড তথ্য শিকার করতে। অথবা অন্য কোন মারাত্মক অপরাধমূলক কাজের ফাঁদ পেতেছে আপনার সামনে। আপনাকে বিভিন্ন ছবি পাঠাতে প্ররোচিত করছে প্রতিনিয়ত। তাই সতর্ক হোন এখনই।

 
Top