বিয়ে মানেই নানা রকম আচার অনুষ্ঠান, রীতিনীতি আর মজা। পরিবার, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজনদের
নিয়ে সারাজীবনে মরে রাখার মত আনন্দের এক উপলক্ষ্য হচ্ছে দুটি মানুষের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটা।
যেই দেশই হোক না কেন,যে কোনও গোষ্ঠি কিংবা ধর্ম, প্রত্যেকে সমাজেই বিয়ে নিয়ে আছে নানা রকম ভিন্ন ভিন্ন প্রথা। একজনের কাছে যা মনে হতে পারে আজব, অন্যের কাছে হয়তো সেটাই সব চাইতে জরুরি ব্যাপার। আসুন,পৃথিবীর নানা দেশ ঘুরে তেমনই মজার কিছু বিয়ের আচার অনুষ্ঠানের কথা জেনে নেই।
১.চীনঃ
চীনের তুইজা গোষ্ঠীর মেয়েরা বিয়ের ঠিক একমাস আগে থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে এক ঘণ্টা ধরে কাঁদে। ঠিক শুনেছেন, প্রতিদিন এক ঘণ্টা। বিয়ের যখন ২০ দিন বাকি তখন তার মা তার সাথে এই প্রাকবিবাহ কান্নায় যোগ দেয়। এরপর ২০ দিনের মাথায় এই আসরে যোগ দেয় কন্যার নানি। শেষের দিনগুলোতে পরিবারের বাকি সব মেয়েরাও এতে যোগ দেয়। উদেশ্য একটাই, বিয়ের আনন্দ প্রকাশ করা। আসলে তারা যা করে তা হল নিচু স্বরে এক ধরনের গান যা আসলে কান্নার মতই শোনায়। এটাই তাদের ঐতিহ্য।
২.মঙ্গোলিয়াঃ
চীনের মঙ্গোলিয়ান গোষ্ঠীর কারো বিয়ের তারিখ ঠিক করতে হলে হবু বর-বধুকে একটি ছুরি নিয়ে একসাথে একটি মুরগির ছানা মারতে হয়। এরপর দেখা হয় সেই মুরগির ছানাটির কলিজার রঙ কেমন। যদি তা টাটকা এবং শুদ্ধ মনে না হয়, তবে বিয়ে আর হবে না। অপেক্ষা করতে হবে এভাবে যতদিন না দুজন মিলে একটি মুরগির ছানা মারতে পারে যার কলিজার দেখতে লাগবে টাটকা। তবেই না বিয়ের তারিখ আর বিয়ে।
৩.ভারতঃ
ভারতের মাঙ্গলিক মনে করা হয় এমন সব মেয়েদের প্রথমে কোন একটি গাছের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। এবং বিয়ের পর গাছটি কেটে ফেলা হয়। মনে করা হয়ে থাকে যেসব মেয়েরা মাঙ্গলিক হয়, বিয়ের পর পরই তাদের স্বামীর মৃত্যুর হয়। এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে প্রথমে তাদের গাছের সাথে বিয়ে দিয়ে তা ধ্বংস করে ফেলা হয়। এর মানে হল তাদের উপর থাকা অভিশাপ কেটে গেল গাছের সাথে এই প্রথম বিবাহের ফলে, এবং তার স্বামীও মারা গেছে। এবার তার দ্বিতীয়, মানে আসল বিয়েতে আর কোন বাধাই থাকল না। শুনতে অবাস্তব লাগছে? ভারতের জনপ্রিয় নায়িকা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনও কিন্তু মাঙ্গলিক ছিলেন, আর তার প্রথম বিবাহ গাছের সাথেই হয়েছিল!
৪.উত্তর বরনিওঃ
উত্তর বরনিওর তাইডং উপজাতির রীতি অনুয়াজী বিয়ের পর নব দম্পতিকে তিন দিন এবং তিন রাত পর্যন্ত ঘরে আটকে রাখা হয়। ভাবছেন ভালই তো, নিজেদের ভালবাসা কোনো ঝামেলা ছাড়াই দিব্যি উপভোগ করার একটা ভালোই তো সুযোগ! সমস্যা একটাই, এই তিন দিন এবং তিন রাত তাদের আটকে রাখা মানে কোথাও যেতে দেয়া হয় না। এমনকি প্রাকৃতিক কাজকর্মে সাড়া দেবারও কোন সুযোগ দেয়া হয় না।। সত্যি বলছি কিন্তু।
৫.ফিজিঃ
আপনি যদি ফিজির কোন বাসিন্দা হন, তবে বিয়ে করতে একটু ঝামেলা আছে বৈকি। কেননা, ফিজিতে শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তিই কন্যার পিতাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে যার হাতে থাকবে তিমির একটি দাঁত। মানে আপনাকে হয় যেতে হবে ব্ল্যাক মার্কেটে,নতুবা সমুদ্রে। তবে বলে রাখছি, পৃথিবীর বৃহত্তম স্তন্যপায়ী এই তিমি মাছ মানেই কিন্তু বেশিরভাগ সময় সমুদ্রের নিচেই তার বসবাস। তিমির দাঁত সংগ্রহ করার কাজটা একটু জটিলই বটে।
৬.দক্ষিণ সুদানঃ
দক্ষিণ সুদানে নেওউর গোষ্ঠীর লোকেরা বিবাহিত দম্পতিদের কমপক্ষে দুইটি সন্তান না হলে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে করে না। দুইটি শিশু নিয়ে হাসি খুশি পরিবার মানে, এতদিনে সেই দম্পতির বিবাহ সম্পন্ন হল।
৭.কেনিয়াঃ
কেনিয়ার মাসাই উপজাতির বাবাকে যদি দেখেন মেয়ের মুখে থু ছিটাতে, বুঝেবেন এটাই তাদের মেয়ের বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বিদায় দেবার পুরানো রীতি। বিয়ে শেষে সাধারনত মেয়ের বাবা আশীর্বাদের জন্য তার মুখে এবং বুকে থু ছিটিয়ে দেয়। পাছে কারো নজর না লাগে!
৮.সুইডেনঃ
সুইডেনে যখনই নববধূ বা বর বাথরুমে যাবার জন্য তাদের টেবিল থেকে উঠে যায়, বসে থাকা তার সঙ্গিকে বিপরিত লিঙ্গের মেহমানরা এসে চুম্বন করার সুযোগ পায়। মানে নতুন বর যদি অন্যদের মাঝ থেকে উঠে বাথরুমে যায়, তবে তার নববধূকে অন্য লোকেরা এসে চুম্বন করে যাবে। আর নববধু যদি তার বরকে রেখে যায়,তবে অন্য নারীরা এসে তাকে আদর করে রেখে যাবে। বোঝাই যাচ্ছে যে বর বাথরুমে যাবে, এমনটাই সবাই আশা করে।
৯. স্পারটাঃ
প্রাচীন স্পারটা নগরীতে হবু বউয়েরা মাথার চুল কামিয়ে ছেলেদের মতন পোশাক-আশাক পরে তৈরি থাকতো। এর পরের কাজটুকু ছিল মূলত হবু বরের অগ্নি পরীক্ষা। বিয়ের ইচ্ছে থাকলে সবার চক্ষু ফাকি দিয়ে এই ছেলে সেজে থাকা তার হবু স্ত্রীকে চুরি করে নিয়ে পালাতে হতো তাকে। তবেই কেবল সে নিজেকে বিয়ের উপজুক্ত বলে প্রমান করতে পারতো।
১০.আয়ারল্যান্ডঃ
আয়ারল্যান্ডের নববধূ এবং বর বধূ যখন নাচবে, তখন নববধূর খেয়াল রাখতে হয় যেন তার পা অবশ্যই মাটিতে থাকে। নইলে কিন্তু দুষ্ট পরীরা এসে ওকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। কেন এমন বিশ্বাস? কারন পরীরা সুন্দর জিনিস ভালবাসে, আর নববধূ হল সব চাইতে সুন্দর আর আকর্ষণীয় । কাজেই একবার যদি সুযোগ পায়,পরীরা কিন্তু ওকে নিয়েই যাবে। তবে হ্যাঁ, পা যদি মাটির স্পর্শেই থাকে তবে আর দুষ্টগুলো ওকে নিতে পারবে না।
নিয়ে সারাজীবনে মরে রাখার মত আনন্দের এক উপলক্ষ্য হচ্ছে দুটি মানুষের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটা।
যেই দেশই হোক না কেন,যে কোনও গোষ্ঠি কিংবা ধর্ম, প্রত্যেকে সমাজেই বিয়ে নিয়ে আছে নানা রকম ভিন্ন ভিন্ন প্রথা। একজনের কাছে যা মনে হতে পারে আজব, অন্যের কাছে হয়তো সেটাই সব চাইতে জরুরি ব্যাপার। আসুন,পৃথিবীর নানা দেশ ঘুরে তেমনই মজার কিছু বিয়ের আচার অনুষ্ঠানের কথা জেনে নেই।
১.চীনঃ
চীনের তুইজা গোষ্ঠীর মেয়েরা বিয়ের ঠিক একমাস আগে থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে এক ঘণ্টা ধরে কাঁদে। ঠিক শুনেছেন, প্রতিদিন এক ঘণ্টা। বিয়ের যখন ২০ দিন বাকি তখন তার মা তার সাথে এই প্রাকবিবাহ কান্নায় যোগ দেয়। এরপর ২০ দিনের মাথায় এই আসরে যোগ দেয় কন্যার নানি। শেষের দিনগুলোতে পরিবারের বাকি সব মেয়েরাও এতে যোগ দেয়। উদেশ্য একটাই, বিয়ের আনন্দ প্রকাশ করা। আসলে তারা যা করে তা হল নিচু স্বরে এক ধরনের গান যা আসলে কান্নার মতই শোনায়। এটাই তাদের ঐতিহ্য।
২.মঙ্গোলিয়াঃ
চীনের মঙ্গোলিয়ান গোষ্ঠীর কারো বিয়ের তারিখ ঠিক করতে হলে হবু বর-বধুকে একটি ছুরি নিয়ে একসাথে একটি মুরগির ছানা মারতে হয়। এরপর দেখা হয় সেই মুরগির ছানাটির কলিজার রঙ কেমন। যদি তা টাটকা এবং শুদ্ধ মনে না হয়, তবে বিয়ে আর হবে না। অপেক্ষা করতে হবে এভাবে যতদিন না দুজন মিলে একটি মুরগির ছানা মারতে পারে যার কলিজার দেখতে লাগবে টাটকা। তবেই না বিয়ের তারিখ আর বিয়ে।
৩.ভারতঃ
ভারতের মাঙ্গলিক মনে করা হয় এমন সব মেয়েদের প্রথমে কোন একটি গাছের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। এবং বিয়ের পর গাছটি কেটে ফেলা হয়। মনে করা হয়ে থাকে যেসব মেয়েরা মাঙ্গলিক হয়, বিয়ের পর পরই তাদের স্বামীর মৃত্যুর হয়। এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে প্রথমে তাদের গাছের সাথে বিয়ে দিয়ে তা ধ্বংস করে ফেলা হয়। এর মানে হল তাদের উপর থাকা অভিশাপ কেটে গেল গাছের সাথে এই প্রথম বিবাহের ফলে, এবং তার স্বামীও মারা গেছে। এবার তার দ্বিতীয়, মানে আসল বিয়েতে আর কোন বাধাই থাকল না। শুনতে অবাস্তব লাগছে? ভারতের জনপ্রিয় নায়িকা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনও কিন্তু মাঙ্গলিক ছিলেন, আর তার প্রথম বিবাহ গাছের সাথেই হয়েছিল!
৪.উত্তর বরনিওঃ
উত্তর বরনিওর তাইডং উপজাতির রীতি অনুয়াজী বিয়ের পর নব দম্পতিকে তিন দিন এবং তিন রাত পর্যন্ত ঘরে আটকে রাখা হয়। ভাবছেন ভালই তো, নিজেদের ভালবাসা কোনো ঝামেলা ছাড়াই দিব্যি উপভোগ করার একটা ভালোই তো সুযোগ! সমস্যা একটাই, এই তিন দিন এবং তিন রাত তাদের আটকে রাখা মানে কোথাও যেতে দেয়া হয় না। এমনকি প্রাকৃতিক কাজকর্মে সাড়া দেবারও কোন সুযোগ দেয়া হয় না।। সত্যি বলছি কিন্তু।
৫.ফিজিঃ
আপনি যদি ফিজির কোন বাসিন্দা হন, তবে বিয়ে করতে একটু ঝামেলা আছে বৈকি। কেননা, ফিজিতে শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তিই কন্যার পিতাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে যার হাতে থাকবে তিমির একটি দাঁত। মানে আপনাকে হয় যেতে হবে ব্ল্যাক মার্কেটে,নতুবা সমুদ্রে। তবে বলে রাখছি, পৃথিবীর বৃহত্তম স্তন্যপায়ী এই তিমি মাছ মানেই কিন্তু বেশিরভাগ সময় সমুদ্রের নিচেই তার বসবাস। তিমির দাঁত সংগ্রহ করার কাজটা একটু জটিলই বটে।
৬.দক্ষিণ সুদানঃ
দক্ষিণ সুদানে নেওউর গোষ্ঠীর লোকেরা বিবাহিত দম্পতিদের কমপক্ষে দুইটি সন্তান না হলে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে করে না। দুইটি শিশু নিয়ে হাসি খুশি পরিবার মানে, এতদিনে সেই দম্পতির বিবাহ সম্পন্ন হল।
৭.কেনিয়াঃ
কেনিয়ার মাসাই উপজাতির বাবাকে যদি দেখেন মেয়ের মুখে থু ছিটাতে, বুঝেবেন এটাই তাদের মেয়ের বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বিদায় দেবার পুরানো রীতি। বিয়ে শেষে সাধারনত মেয়ের বাবা আশীর্বাদের জন্য তার মুখে এবং বুকে থু ছিটিয়ে দেয়। পাছে কারো নজর না লাগে!
৮.সুইডেনঃ
সুইডেনে যখনই নববধূ বা বর বাথরুমে যাবার জন্য তাদের টেবিল থেকে উঠে যায়, বসে থাকা তার সঙ্গিকে বিপরিত লিঙ্গের মেহমানরা এসে চুম্বন করার সুযোগ পায়। মানে নতুন বর যদি অন্যদের মাঝ থেকে উঠে বাথরুমে যায়, তবে তার নববধূকে অন্য লোকেরা এসে চুম্বন করে যাবে। আর নববধু যদি তার বরকে রেখে যায়,তবে অন্য নারীরা এসে তাকে আদর করে রেখে যাবে। বোঝাই যাচ্ছে যে বর বাথরুমে যাবে, এমনটাই সবাই আশা করে।
৯. স্পারটাঃ
প্রাচীন স্পারটা নগরীতে হবু বউয়েরা মাথার চুল কামিয়ে ছেলেদের মতন পোশাক-আশাক পরে তৈরি থাকতো। এর পরের কাজটুকু ছিল মূলত হবু বরের অগ্নি পরীক্ষা। বিয়ের ইচ্ছে থাকলে সবার চক্ষু ফাকি দিয়ে এই ছেলে সেজে থাকা তার হবু স্ত্রীকে চুরি করে নিয়ে পালাতে হতো তাকে। তবেই কেবল সে নিজেকে বিয়ের উপজুক্ত বলে প্রমান করতে পারতো।
১০.আয়ারল্যান্ডঃ
আয়ারল্যান্ডের নববধূ এবং বর বধূ যখন নাচবে, তখন নববধূর খেয়াল রাখতে হয় যেন তার পা অবশ্যই মাটিতে থাকে। নইলে কিন্তু দুষ্ট পরীরা এসে ওকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। কেন এমন বিশ্বাস? কারন পরীরা সুন্দর জিনিস ভালবাসে, আর নববধূ হল সব চাইতে সুন্দর আর আকর্ষণীয় । কাজেই একবার যদি সুযোগ পায়,পরীরা কিন্তু ওকে নিয়েই যাবে। তবে হ্যাঁ, পা যদি মাটির স্পর্শেই থাকে তবে আর দুষ্টগুলো ওকে নিতে পারবে না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন