২০০৭ সাল:

ইশ, এত সুন্দর বৃষ্টিটা আজকেই হওয়া লাগলো......সার্থক লক্ষ্য করেছে, যখনই তার বড় কোন পরীক্ষা থাকে তখনই সুন্দর মুহূর্তগুলো একেবারে কাছে এসে উপস্থিত হয় । আজকেও সেইরকমই ঘটেছে । ভোরবেলা থেকেই ঝুম বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে ।

আজ সার্থকের স্কুলে নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে । প্রথম দিনেই বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষা । পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টায় । সার্থক গত রাতেই অর্ধেক সিলেবাস কমপ্লিট করে রেখেছিলো আর বাকিটা রেখে দিয়েছিলো সকালে পড়ার জন্য । কিন্তু, ভোরবেলা থেকে এই সুন্দর বৃষ্টিটা দেখে কিছুতেই পড়তে ইচ্ছে করছে না । জানালা দিয়ে ঝিরিঝিরি বাতাসের সাথে বৃষ্টির ফোটাগুলো এসে যেন কাঁচের টুকরোর মতো বিঁধে যাচ্ছিলো শরীরের উপর । অন্যরকম একটা অনুভূতি । এত সুন্দর মুহূর্তটা পেছনে ঠেলে নিজেকে পড়ার বইয়ের ফাঁকে গুজে দেয়াটা নিতান্তই কষ্টসাধ্য কাজ । তবুও আবেগটাকে দমিয়ে রেখে বইয়ের পাতায় চোখ রাখতে চেষ্টা করে সার্থক । মনের যখন এই রকম ঊরু ঊরু অবস্থা, ঠিক সেই সময়ে বাসার মোবাইল ফোনটা বেজে ওঠে । এত ভোরে ফোনের ক্রিং ক্রিং শব্দে কিছুটা চমকে যায় সার্থক । বাসার সবাই ঘুমুচ্ছে । অগত্যা সার্থককেই ফোনটা রিসিভ করতে হল ।

ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথেই ওপাশ থেকে একটা মেয়ের মিষ্টি কণ্ঠ ভেসে এলো ।
-সার্থক বলছেন ?
-জী । আপনি কে ?
-আমি যেই হই, সেটা কোন ব্যাপার না । আপনি কেমন আছেন ?
-আমি অপরিচিত কারোর সাথে কথা বলি না ।
-আচ্ছা,আমার পরিচয় দিচ্ছি । আমি কুয়াশা । এখন বলেন,কেমন আছেন ?
-আরে, নাম বললেই কি পরিচয় হয়ে যায় নাকি ? নিজের সম্পর্কে সবকিছু বলতে হয় ।
-আচ্ছা, ঠিক আছে । সবই বলবো । আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দেন । কেমন আছেন ?
-হ্যাঁ, ভালোই ।
-মনে তো হয় ভালো নেই । আজকে না আপনার নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে । প্রস্তুতি কেমন ?
-আজকে যে আমার পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে, সেটা আপনি জানলেন কীভাবে ?
-আমি সবই জানি । ভালো করে পরীক্ষা দিয়েন । আমি এখন রাখি । পরে কথা হবে । বাই ......
ওপাশ থেকে ঝপ করে লাইনটা কেটে গেলো ।
আচমকা এই রকম ঘটনার আকস্মিকতায় সার্থক একেবারেই বিস্মিত ।
কিন্তু, এখন এই মেয়েকে নিয়ে চিন্তা করলে দেখা যাবে আর পড়াই হচ্ছে না । আগে পরীক্ষাটা ভালো করে দেয়া হোক, তারপর ভেবে দেখা দরকার ।
এই ব্যাপারটা চিন্তা করে আবার পড়ার টেবিলে ফিরে আসে সার্থক ।

দুপুর ১টা:
পরীক্ষা শেষ করে স্কুলের বারান্দায় দাড়িয়ে আছে সার্থক । পরীক্ষাটা বেশ ভালোই হয়েছে । তাই, মনের মধ্যে একটা ফুরফুরে হাওয়া বয়ে যাচ্ছে । হঠাৎ বন্ধু অনিকের ডাকে পেছন ফিরে তাকায় সার্থক ।
-কিরে পরীক্ষা কেমন দিলি ?
-ভালোই । তোর কি অবস্থা ?
-হইলো, কোন রকম । দোস্ত, আমি একটা চরম ভুল কইরা ফেলসি ।
-কি ? অবজেক্টিভ দাগাইতে ভুল করেছিস ?
-আরে না বেটা । তুই আগে বল, আমাকে ক্ষমা করে দিবি ?
-আগে বল, কি হইসে ?
-দোস্ত, একটা মেয়ে তোরে অনেক আগে থেইকা পছন্দ করে । আমার কাছে অনেকদিন ধইরা তোর ফোন নাম্বার চাইতেসিল । গতকাল না পাইরা তোর নাম্বার দিয়া দিসি ।
-তুই এইটা কি করলি ? আমার কি ফোন আছে নাকি ? ওইটা তো আমার বাসার নাম্বার । শালা, তুই আমারে না বইলা এইটা কি করলি ? আয় হায়, আমি বাসায় না থাকা অবস্থায় যদি ওই মেয়ে ফোন দেয় আর আমার আম্মু যদি তখন ফোন রিসিভ করে,তাহলে আমার কি হবে তুই বুঝতে পারতেসিস ?
-আরে শোন । এত চিন্তার কারণ নাই । ও অনেক ভালো মেয়ে । অসময়ে ফোন দিবে না । তুই বাসায় থাকলেই ও ফোন দিবে । তা না হলে দিবে না ।
-আরে বেটা, ও কি জানে নাকি যে আমি কখন বাসায় থাকি অথবা না থাকি ? আর ওইটা তো আমার ফোন না । বাসার ফোন ।
-চিন্তা করিস না । আমি সব মেনেজ করে দিবো ।
-মেয়েটা কে ?
-হেহে , সেইটা তো এখনই কমু না দোস্ত । মানা আছে । কয়েকদিন পরে তোমার সাথে ওর সরাসরি দেখা হবে । তখন দেইখো । আমি গেলাম ।
-ওই, বইলা যা । আমি কাউরে কিছুই কমু না ।
অনিক সার্থকের দিকে ভ্রূক্ষেপ না করেই দ্রুত হেঁটে চলে যায় ।
বিভিন্ন চিন্তায় চিন্তিত হয়ে সার্থক আরও কিছুক্ষণ বারান্দার পিলারে ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে থাকে । কিন্তু, এত চিন্তার মাঝেও অচেনা মেয়েটার কথা ভেবে মনের মাঝে কেমন জানি একটা কোমলতা অনুভব করে । মনের অজান্তেই একটু লাজুক হাসি মুখ গলে বের হয়ে আসে ।

সেদিনের পর থেকে সার্থক নিজেকে হারিয়ে ফেলে অন্য কারো মাঝে । সবসময়ই ঊরু ঊরু মন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় । বাসার মোবাইল ফোনটা হয়ে ওঠে তার একান্ত সঙ্গী । ফোনটা বেজে উঠলেই দৌড়ে ছুটে যায় রিসিভ করার জন্য । আরও একটা মজার ব্যাপার হল, সার্থকের যখন স্কুলে যাওয়ার সময় হতো তখনই সে সূরা পড়ে মোবাইলে একটা ফুঁ দিয়ে যেতো । এই ফুঁ দেয়ার কারণ হল, কুয়াশা যাতে তার এই বাইরে থাকার সময়ে মোবাইলে ফোন না দেয় এবং ফোন দিলেও যাতে তার আম্মু ফোনটা রিসিভ করতে না পারে ।

ঘটনাগুলো কোন অঘটন ছাড়াই ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলো । কুয়াশা যখন ফোন দিতো, সার্থকও ঠিক সেই সময়েই অন্য কেউ রিসিভ করার আগে ফোনটা রিসিভ করে ফেলত । কুয়াশা মেসেজ দিলে সার্থক সেটা পড়ে রিপ্লাই দিয়ে সাথে সাথে ডিলিট করে দিতো ।

সার্থকের আম্মুর চোখে এই মোবাইলপ্রীতির ব্যাপারটা ধরা পড়ে যায় । একদিন সার্থককে ডেকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেশ করলেন:
-দিনে দিনে মোবাইলের প্রতি তোমার এত আকর্ষণ বাড়ছে কেন ? আগে তো ছুঁয়েও দেখতে না । আর এখন বাসায় থাকলে মোবাইলটা সবসময়ই হাতের ফাঁকে গুঁজে রাখো । ঘটনা কি ?
-আম্মু, ঘটনা কিছুই না । আগে এই মোবাইলের গেইম গুলো খেলতে পারতাম না । ওই দিন অনিক শিখিয়ে দিয়েছে তো, তাই একটু গেইম খেলতে চেষ্টা করি ।
সার্থকের আম্মুও ব্যাপারটা নিয়ে আর এগোয়নি ।

দেখতে দেখতে সার্থকের নির্বাচনী পরীক্ষা শেষ হল । যেদিন পরীক্ষা শেষ হল, সেদিন রাতে অনিক সার্থককে ফোন দেয়:
-দোস্ত, ৩ দিন পরেই তো নির্বাচনী পরীক্ষার রেজাল্ট । ওইদিন কুয়াশা তোর সাথে দেখা করবে । আমাকে একটু আগে ফোন দিয়ে তোকে জানাইতে বললো ।
সার্থক কিছুটা লজ্জা পেয়ে:
-ও আচ্ছা । কিন্তু,আমি ওকে চিনবো কিভাবে ? আর কোথায় দেখা করবে, সেটাও তো বললি না ।
-আরে বেটা, ওই সব আমি জানি নাকি...... দেখা করার আগের দিন ও তোকে ফোনে সব জানিয়ে দিবে ।
ফোনটা রেখে একটা চাপা উত্তেজনা অনুভব করে সার্থক । ৩টা দিনকে তার কাছে ৩টা বছর বলে মনে হতে থাকে ।

নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলের আগের দিন, রাত প্রায় ৮টা:
সার্থকের বাসার ফোনে একটা মেসেজ আসে । ফোনটা খপ করে মুঠোবন্দী করে নেয় সার্থক । কুয়াশা মেসেজ পাঠিয়েছে ।
মেসেজে লেখা- ‘কাল তো তোমার রেজাল্ট দিবে বিকাল ৩টায় । আমি ২.১৫ মিনিটের দিকে তোমাদের স্কুলের পেছনে অপেক্ষা করবো । আমার পড়নে থাকবে: লাল জামা, ওড়নার কালার হবে কালো, মাথার চুলগুলো খোলা থাকবে আর সাথে থাকবে একটা ব্যাগ । তুমি একটা লাল ফতুয়া পড়ে এসো।‘

নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলের দিন:
সার্থক বাসা থেকে বের হয় দুপুর ১.৩০এর দিকে । স্কুলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ২টা বেজে যায় । লাল ফতুয়া পড়ে স্কুলের সামনের গেইট দিয়ে ভিতরে ঢুকতে একটু লজ্জা অনুভব করে সার্থক । সিদ্ধান্ত নেয় পেছনের গেইট দিয়ে ঢুকে স্কুলের পেছনটায় চলে যাবে ।
কিন্তু, পেছনের গেইটে আসতেই লজ্জার মাত্রাটা দ্বিগুণ হয়ে যায় । কারণ, তার সবগুলো ফ্রেন্ড পেছনের গেইটে দাড়িয়ে কি নিয়ে জানি কথা বলছে । বন্ধুদের সামনে এভাবে যেতে কেমন জানি লাগছে । হঠাৎ সার্থককে দেখে দৌড়ে এগিয়ে আসে অনিক ।
-মামা, তুই এতক্ষণে আসলি ? মাইয়া তো তোর লাইগা অনেকক্ষণ ধইরা স্কুলের পেছনে অপেক্ষা করতেসে । আমরা কয়েকজন মিলে পাহারা দিতেসি যাতে কেউ ডিস্টার্ব করতে না পারে । তুই তাড়াতাড়ি যা ।
-যামু ?
-আরে বেটা, হ । তাড়াতাড়ি যা ।
-আচ্ছা, যাচ্ছি ।
সার্থক সামনের দিকে পা বাড়ায় ।
এই মামা, দাড়া ।
অনিকের কথায় আবারও পেছন ফিরে তাকায় সার্থক ।
-কি ?
-মাইয়াও লাল ড্রেস, তোমারও লাল ফতুয়া । ভালোই । যাও ।
সার্থক একটু লজ্জা পেয়ে যায় ।
ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে গেইটটা খুলে স্কুলের পেছন দিকটায় চলে যায় । একটা গাছের আড়ালে কেউ একজন বসে আছে । পড়নে লাল ড্রেস আর মাথাটা কালো ওড়না দিয়ে জড়ানো । মাথাটা বেশ ভালোভাবে ওড়না দিয়ে জড়িয়ে রাখার কারণে দূর থেকে কিছুই বোঝা যাচ্ছিলো না । মাথাটা ঘুরিয়ে পেছনে তাকিয়ে অনিকসহ আরও কয়েকটা ফ্রেন্ডকে দেখতে পায় সার্থক । ওরা দূর থেকে সার্থককে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য হাত দিয়ে ইশারা করছে । দুরু দুরু বুকে আরেকটু এগিয়ে যায় সার্থক । মানুষটার পিছনে গিয়ে দাঁড়ায় ।
-এই যে শুনছেন ?
সার্থক কথাটা বলার সাথে সাথেই ওড়নার আড়াল থেকে ঝাঁপ দিয়ে বেরিয়ে আসে রাসেল । ঘটনার আকস্মিকতায় সার্থক এবারও বিস্মিত হয়ে যায় ।
-রাসেল, তুই এখানে ?
-হ মামা । তুমি তো ছেঁকা খাইয়া গেলা ।
বলেই হোহো করে হেঁসে ওঠে ।
সার্থক দূরে তাকিয়ে দেখতে পায়, অনিকরাও চিৎকার করতে করতে এগিয়ে আসছে আর বলছে, ‘মামা, তুমি ছেঁকা খাইয়া গেলা’ ।
সার্থক যে বন্ধুদের তৈরি করা ফাঁদে পড়ে নাজেহাল হয়েছে, সেটা তার আর বুঝতে বাকি রইলো না ।
কিন্তু, তখনই ঝুম বৃষ্টি শুরু হওয়ার কারণে দৌড়ে গিয়ে সবাই ক্লাসরুমে উপস্থিত হয় । ক্লাসে পৌঁছে রাসেলের কাছ থেকে পুরো সাজানো ঘটনার সারমর্ম জানতে পারে সার্থক । ঘটনাগুলো সব তৈরি করেছিল অনিক । সে তার খালাতো বোনকে দিয়ে ফোনে কথা বলিয়েছে আর সব প্ল্যানিং নিজেই করেছে ।
সার্থক শুনতে পেলো, কে যেন বলছে, ‘বাইরে তো অনেক কুয়াশা পরতেসে।‘
আরেকজন উত্তর দিলো, ‘কুয়াশা না বেটা, এইটা লাল বৃষ্টি’ ।
সার্থক বুঝতে পারলো, আগামী কয়েকটা দিন তাকে ব্যাপক পচানি সহ্য করতে হবে । আজকে থেকেই তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে ।

বিকাল ৩টা:
নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হল । সার্থক পুরো স্কুলে ২য় হয়েছে । কিন্তু, তার মাঝে খুশির কোন রেশমাত্র নেই । কুয়াশার কথা চিন্তা করেই সব আনন্দ ছাপিয়ে যাচ্ছে । এমনটা হবে তা সার্থক কল্পনাও করেনি । সত্যি বলতে, কুয়াশাকে সে সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছিল । কিন্তু, কি আর করা...... ভাগ্যের লেখা তো আর খণ্ডানো যায় না ।
রেজাল্ট হওয়ার পর আর একমুহূর্ত স্কুলে না থেকে বাসায় চলে যায় সার্থক । বাসায় গিয়েও কেমন যেন একটা অস্থিরতা অনুভব করতে থাকে । আম্মুকে রেজাল্টের ব্যাপারটা জানিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে চেষ্টা করে । কিন্তু, কিছুতেই কিছু হচ্ছে না । সবকিছুই কেমন জানি স্বপ্ন মনে হতে থাকে । কুয়াশা তাকে আর কখনও ফোন করবে না, এই ব্যাপারটা চিন্তা করলেই মাথাটা ওলট–পালট হয়ে আসে ।

এভাবে চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমের দেশে চলে গিয়েছিলো, সার্থক তা নিজেও জানে না । ঘুম ভাঙে দরজায় কারো আঘাত করার শব্দ পেয়ে । অনেকটা বিরক্ত হয়েই আড়মোড়া ভেঙে দরজার দিকে এগিয়ে যায় সার্থক । দরজা খুলে আম্মুকে দেখতে পায় ।
-কি হয়েছে ? এভাবে দরজা নক করেছো কেন ?
সার্থকের আম্মু মুচকি হেঁসে ফোনটা এগিয়ে দেয় ।
-একটা মেয়ে ফোন দিয়েছে । তোর সাথে কথা বলতে চায় ।
সার্থক ফোনটা হাতে নিয়েই অবাক হয়ে যায় । স্ক্রিনে কুয়াশার নাম্বারটা ভেসে আছে । একমুহূর্ত দেরী না করে ফোনটা কানে ঠেকায়:
-আমি তোমার সাথে আগামীকাল দেখা করতে চাই । কিছু কথা বলবো । রাতে মেসেজ দিয়ে দেখা করার জায়গা এবং সময় দুইটাই জানিয়ে দিবো...... বাই ।

সেই যে একটু কথা বলার জন্য দেখা করতে চাওয়া, তারপর সেই চাওয়াটা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে । আর বলতে চাওয়া একটু কথাই এখন ফুলে-ফেপে বিশাল একটা কথার সাগরে পরিণত হয়েছে ।

কি বলছি কিছুই বুঝতে পারলেন না, তাই না ?

এখন বুঝিয়ে বলি......আসলে কুয়াশা সার্থকের সাথে প্রেমের অভিনয় করতে করতে কখন যে তার প্রেমে পড়ে গিয়েছে, সেটা নিজেই বুঝতে পারেনি । এই কথাটা বলার জন্যই সেদিন সে সার্থককে দেখা করতে বলেছিল । আর সার্থক তো অনেক আগে থেকেই কুয়াশার প্রেমে পড়ে আছে ।

বন্ধুদের বানানো ফাঁদ আর ভুলে জড়ানো কিছু ঘটনার আবডালে তৈরি হয়ে যাওয়া এই প্রেমের জুটিটি এখনও টিকে আছে । আজ এই জুটির ৬ বছর পূর্ণ হল । শুভ কামনা রইলো তাদের এই ভালোবাসার প্রতি.........

[ পুনশ্চ: এটি কোন বানানো ঘটনা নয় । সত্যি ঘটনার আবর্তে জড়ানো একটি সুন্দর প্রেমের গল্প । যাদের ঘটনা তাদের একজন আমাকে তাদের এই ৬ষ্ঠ প্রেম পূর্তিতে গল্পটা লিখে প্রকাশ করতে বলেছিল । খুব সংকীর্ণ সময় হাতে নিয়ে তাদের এই কাহিনীটিকে সাজাতে চেষ্টা করেছি । ভুলগুলো ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । আর একটা অনুরোধ-যেহেতু গল্পটা দুইজনের সত্যি কাহিনীর আবর্তে লেখা, সেহেতু কেউ কোন খারাপ মন্তব্য না করলেই খুশি হবো । আর যদি কোন খারাপ মন্তব্য করতেই হয়, তাহলে আমাকে সরাসরি মেসেজ করে বলতে পারেন । আমি কিছু মনে করবো না । ধন্যবাদ ]
 
Top