প্রজন্ম’সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বলতে আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, টুইটার, লিংকডইন, ইউটিউব, গুগল প্লাস প্রভৃতি। শুধু মোবাইল ফোনেই দেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সামাজিক যোগাযোগ, মতামত আদান-প্রদান, প্রেম-ভালোবাসা, সৃষ্টিশীলতা, প্রতিবাদ— সবকিছুতেই চলছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ব্যবহার। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে এই তরুণ সমাজ অনেক বেশি সময় নষ্ট করছে বলে অনেকেরই ধারণা। বস্তুত নতুন প্রজন্মের সৃজনশীলতা, কর্মদক্ষতা প্রকাশ করতে সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্মও এই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। আর এটাকে ব্যবহার করে আয়ও করছেন প্রযুক্তি সচেতন তরুণ প্রজন্মের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।
পৃথিবীর প্রায় ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। আমাদের তরুণ প্রজন্ম ফেসবুক ব্যবহারের পাশাপাশি এর মাধ্যমে নানাভাবে আয় করছেন নিয়মিত। ফেসবুকে মার্কেটিংয়ের অনেক ধরনের সুযোগ রয়েছে যা এখনকার তরুণরা ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। ওডেস্ক বা ফ্রিল্যান্সার’র মতো নামিদামি মার্কেটপ্লেসে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফেসবুক লাইক বা ফ্যান জোগাড় করার কাজ দিয়ে থাকে। তবে কয়েকদিন আগে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলেছে, ফেক লাইকের দিন শেষ। তাই ফেসবুক আয়ের মূল্য যেমন বেড়েছে, তেমনি আগের সময়ের তুলনায় কষ্টও বেড়েছে।
ফেসবুক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে এর মাধ্যমে ফেসবুক থেকে আয় করছেন অনেক মানুষ। এর জন্য প্রয়োজন অনলাইনের যেকোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাফিলিয়েশন নেয়া। তাদের পণ্য ও সেবার বিজ্ঞাপনটি আপনার ফেসবুক পেজে জুড়ে দিলেই কাজ শেষ। সেখানে কেউ ক্লিক করলে বা ওই ওয়েবসাইট থেকে কিছু কিনলে আপনি পেয়ে যাবেন অর্থ। আর এভাবেই আয় করছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
ফেসবুকের জন্য নানা এপ্লিক্যাশনও তৈরি করছে আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্ম। একেকটি ফেসবুক অ্যাপস ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকায় তারা দেশে-বিদেশে বিক্রি করছেন।
শহরের যানজট আর ভিড় ঠেলে মার্কেটে যেতে অপছন্দ করেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। তাই অনলাইন শপিংয়ের প্রবণতা বেড়েছে অনেক বেশি। এই অনলাইন শপিংয়ে ক্রেডিট কার্ড যুক্ত হওয়ায় এর ব্যবহার বেড়েছে আরও বেশি। আর এতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে ফেসবুক। ফ্রি একটি পেইজ খুলে তাতে বিভিন্ন পণ্যের দরদাম দিয়ে ক্রেতা থেকে অর্ডার নিয়ে তা ডেলিভারি দিচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। ‘স্টাইল ওয়ার্ল্ড কালেকশন’ নামের একটি দেশি পেইজে দেখা গেছে, ৫ লাখ সাড়ে ৭ হাজার লাইক রয়েছে। এই ফেসবুক পেইজের কারণে তাদের বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ।
সারাদিন ইউটিউব দেখা ছাড়াও এর মাধ্যমে আয় করছেন অনেকেই। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং এর এই সাইট থেকে আয় করার রয়েছে কয়েকটি বিশেষ উপায়। মজার ও শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করে তা আপলোড করছেন তারা। ভিডিও টিউটোরিয়ালও আপলোড করছেন। নিজের তৈরি করা ইউটিউব চ্যানেলে তারা গুগল অ্যাডসেন্স যুক্ত করে প্রতি মাসে একটি ভালো অ্যামাউন্ট পেয়ে যাচ্ছেন।
ডিগ্রি অর্জন করে শুরু হয় চাকরি খোঁজার পালা। পত্র-পত্রিকা, জব সাইটের পাশাপাশি এখন চাকরি খোঁজার আর পেশাগত যোগ্যতা তুলে ধরার সবচেয়ে ভালো উপায় লিংকডইন। এই সাইটে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর পাশাপাশি যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরিও খোঁজা যায়।
তাই সোশ্যাল নেটওয়ার্কের অপব্যবহার যেমন রয়েছে তেমনি তার সাথে নতুন নতুন সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। এখন তরুণ প্রজন্মকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী গ্রহণ করবে, আর কী বর্জন করবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন