মাস্টারচোখের পানি আটকাতে পারলাম না । সত্যিই লজ্জিত আমাদের এই সমাজের কাছে ...বয়স ৭০... মাথায়
টুপি।লম্বা সাদা পাঞ্জাবিতে ঢাকা শরীর। বয়সের ভারে কিছুটা ন্যূব্জও। জীবন ও যৌবনের
সোনাঝরা সময়টা গেছে জ্ঞান বিতরণের কাজে। শিক্ষকতার মহান দায়িত্ব শেষে জীবন-বিকালের পড়ন্ত সময়ে তার হাতে উঠেছে শাস্তির দড়ি। যে হাত দিয়ে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষার আলো বিলিয়েছেন, সে হাতে শুধু দড়িই উঠেনি, তাকে পিছমোড়া করে বেঁধে শত শত লোকের
সামনে সারা গ্রাম ঘোরানো হয়েছে। ছেলের নেয়া টাকা পরিশোধ না করতে পারায় অবসরপ্রাপ্ত  স্কুলশিক্ষক তৈয়ব মাস্টারকে এ শাস্তি পেতে হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ অক্টোবর চাঁদপুরের হাজীগঞ্জস্থ গন্ধ্যর্বপুর ইউনিয়নের মৈশামুড়া বালুর মাঠ এলাকায়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৈশামুড়া গ্রামের রহমত উল্লার ছেলে আব্দুল্লাহ দুবাই যাওয়ার জন্য তৈয়ব মাস্টারের ছেলে মোস্তফাকে ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা দেয়। আব্দুল্লাহ দুবাই গিয়ে বিমানবন্দরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এবং ২৬ দিন জেল খেটে দেশে ফিরে আসে। তার কাছ থেকে মোস্তফার নেয়া টাকা ফেরত না দিতে পারায় গত ৫ অক্টোবর আব্দুল্লাহ ও তার বাবা মিলে তৈয়ব মাস্টারকে পিঠমোড়া করে বেঁধে শতাধিক লোকের সামনে সারা গ্রাম হাঁটায়, চালায় শারীরিক নির্যাতনও। তৈয়ব মাস্টারের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ঘটনার সাথে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর শেখ, ই উপিসদস্য আশেক আলী ও স্থানীয় মাতব্বর জড়িত। অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর শেখ বলেন, ‘এ মর্মান্তিক ঘটনার সময় আমি পার্শ্ববর্তী পালিশারায় একটি সালিশ- বৈঠকে ছিলাম। মানুষ এখন অর্থপিশাচহয়ে গেছে। এই বুড়ো লোকটাকে এভাবে শাস্তি দিলে কি সেই টাকাটা পাওয়া যাবে! কি লজ্জাজনক, তাও আবার বিশ্ব শিক্ষক দিবসে! লাঞ্ছিত এই প্রাক্তন শিক্ষকের জন্য সুবিচার চাই। একমত?
 
Top