এই ভালোবাসা ঋতু মেয়েটা ভারী চঞ্চল. অপরদিকে আরিফ ছেলেটা হ্চ্ছে গম্ভীর প্রকৃতির একটা ছেলে । র্ভাসিটিতেই ওদের প্রথম দেখা । আরিফ ঋতুর থেকে ২ বছরের সিনিয়র । ঋতু একদিন র্ভাসিটিতে আসার সময় তাড়াহুরো করতে গিয়ে ভুলে বাসায় টাকাটা রেখে চলে আসে ।রিকশা থেকে নেমে যখন ভাড়া দিতে যাবে
তখন দেখে যে ব্যাগে টাকা নেই । এমনিতেই লেট তার উপর জরুরী এসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে । এখন বাসায় গিয়ে টাকা আনার মত সময় নেই । ঋতুর মাথাটা ঘুরতে থাকে । কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা । পাশেই দাড়ানো ছিল আরিফ. অপেক্ষা করছিল একটা ফ্রেন্ডের জন্য । অলরেডি আরিফের কাছে পুরো ব্যাপারটা ক্লিয়ার । চুপচাপ দেখছিল, তারপর পকেট থেকে মানিব্যাগ টা বের করল । রিকশাওয়ালাকে বলল ভাড়া কত? "মামা তিরিশ টেহা" টাকাটা দিয়ে আগের জায়গায় গিয়ে দাড়াল । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনার ফোন নাম্বারটা দিন. আমি টাকাটা লোড দিয়ে দেব. বলল ঋতু । লোড দিতে হবেনা. আমি এই র্ভাসিটিতেই পড়ি, দেখা হলে দিয়ে দিয়েন । আরিফের ফ্রেন্ড চলে আসল অপরদিকে ঋতুও ক্লাসে চলে গেল । ২দিন পর দেখা, ঋতু বলল কেমন আছেন? ভাল. আপনি? জী ভাল আছি. ব্যাগ থেকে টাকাটা বের করে বলল আপনার টাকাটা । ধন্যবাদ বলল আরিফ । তারপর থেকে প্রতিদিনই দেখা হত । একজন আরেকজনকে জানল বুঝল এর ফাকে ফোন নাম্বারটাও আদান প্রদান হয়ে গেল । শুরু হয়ে গেল ফোনের আড্ডা, ঋতু সারাক্ষণ বকবক করত আর আরিফ মুগ্ধ শ্রোতার মত শোনত । মাঝেমাঝে ঔ টুকটাক বলত। এর মাঝেই হয়ে গেল মনের আদান প্রদান । খুব ভালই চলছিল ওদের সর্ম্পকটা । ঋতুর বকবক না শুনলে আরিফ রাতে ঘুমাতে পারেনা, আবার ঋতুও আরিফকে বকবকানি না শোনালে ঘুমাতে পারতনা । এরই মাঝে কেটে গেছে তিনটা বছর । আরিফ পড়াশোনা শেষ করে একটা কোম্পানিতে জব করছে । চার পাঁচ মাস পরে বিয়ে করার পরিকল্পনা । হঠাত্ আরিফ লক্ষ করল ঋতু কেমনজানি চুপচাপ হয়ে যাচ্ছে ।বেশি কথা বলতে চায়না । সারাক্ষণ মন খারাপ করে থাকে । একদিন আরিফের পিড়াপিড়িতে ঋতু বলল একটা কথা বলি? বলো । আচ্ছা আমার যদি কখনো কিছু হয়ে যায় তুমি থাকতে পারবেনা? কি বলছ এসব ? একদম আজেবাজে কথা বলবানা । আরিফ? হুম বলো, কি হয়েছে আমাকে সব খুলে বলো । আমি আর বেশিদিন বাঁচবনা ,আমার দুইটা কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে ।এক মূর্হুতে আরিফের সমস্ত পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গেছে ।দুই গাল বেয়ে অঝরে অশ্রু ঝড়ছে । ঋতু, লক্ষীটি আমার তুমি ভেবোনা, তোমার কিচ্ছু হবেনা. আমি হতে দেবনা ।দুই জনেই কাঁদছে । ঋতু নিজেকে সামলে নিয়েছে, এই অদ্ভুদ ক্ষমতা মেয়েদের আছে , শুধু ঋতু নয় প্রত্যেকটা মেয়েরই আছে ।ঋতু বলে যাচ্ছে,তুমি কিন্তু আমার জন্য একটুও কাঁদবানা. তাহলে আমি কষ্ট পাব । তুমি একটা লাল টুকটুকে বউ বিয়ে করবা আর যেদিন আমাকে প্রথম আই লাভ ইউ বলেছিলা শুধু সেই দিন আমাকে স্বরণ করবা । আরিফ চুপচাপ শুধু কাঁদছে । সময় পনের দিন কিডনি প্রতিস্হাপন করা যাবে. সাত দিন কেটে গেছে । কোথাও কিডনি পাওয়া যাচ্ছেনা । আরিফ সাত দিন ধরেই অফিসে যায়না । সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে কিডনি সেই দিবে । কেটে গেল আরো দুই দিন । ঋতুর পরিবার হন্যে হয়ে কিডনি খুজছে পাচ্ছেনা ।অবশেষে কিডনি পাওয়া গেল ।আগামীকাল অপারেশন । অপারেশনে প্রচুর সময় লাগছে . সবাই অস্তির. অবশেষে সাকসেসফুল । এক ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরল, আরিফ সহ ঋতুর ফ্যামিলির সবাই উপস্তিত । ঋতু চোখ খুলছেনা । তার প্রথম কথা আমাকে কিডনি দিল কে? আমি প্রথম তাকে দেখব । সবাই একজন আরেকজনের দিকে তাকাচ্ছে কারণ কেউ জানেনা কিডনি কে দিয়েছে । রহস্য ভাঙাল ডাক্তার. ইশারাই আরিফ ছাড়া সবাইকে বের হয়ে যেতে বলল । সবাই বাইরে চলে গেল, চোখ খুলল ঋতু, তাকিয়ে দেখে আরিফ । আনন্দে চোখে জল ছলছল করছে । আরিফ ঋতুর কাছে এগিয়ে যায়. দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ।আরিফ ঋতুর কানে ফিসফিস করে বলে , বলেছিলামনা তোমার কিচ্ছু হবেনা, আমি হতে দেবনা । দিইনি কিন্তু..............নিজের অজান্তেই হেসে উঠে ঋতু.......
 
Top