গ্রিসের উলঙ্গ ভাস্বর্য বা বাথরুমের সেটে থাকা পোস্টার আমাদের সবারই নজর কাড়ে। এই গ্রহের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সবচেয়ে বেশি গবেষণা হয়েছে যেই অঙ্গটি নিয়ে তা হলো যৌনাঙ্গ। এই অঙ্গটির আকার আকৃতি নিয়ে যত জল্পনা-কল্পনা করিনা কেন, এই অঙ্গটি সম্পর্কে পুরুষ সঙ্গীদের এখনও অনেক গোপন রহস্য প্রকাশ করার আছে যা আমরা জানিনা। যেমন এর ভেতর থাকা হাড় বা এর আদর্শ আকার। পুরুষের যৌনাঙ্গের এই রকম আদিম সাতটি রহস্য নিয়ে আজকের লেখা।রহস্য সত্য-৭: লিঙ্গের গড় আকার: ২০১৩ সালের সেক্সচুয়াল মেডিসিন জার্নালের ১৬৬১জনের উপর করা এক জরিপে দেখা গেছে উত্থিত যৌনাঙ্গ গড়ে ৫ দশমিক ৫৬ ইঞ্চি বা ১৪ সেমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিন্তু ব্যতিক্রম হলো কারো করো ১.৬ ইঞ্চি (৪ সেমি) থেকে ১০.২ ইঞ্চি (২৬ সেমি) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যৌনাঙ্গের ঋজুতাও সবার সমান নয়। ওরাল সেক্সের পর বা সঙ্গমের পর যারা মেপে দেখেছে যে তাদের ঋজুতা যারা একা যৌন আনন্দ উপভোগ করে তাদের চেয়ে বেশি ঋজু। কারণ লিঙ্গের ঋজুতা নির্ভর করে রক্তচাপের উপর। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপান লিঙ্গকে গড়ে ০.৪ইঞ্চি (১সেমি) পর্যন্ত ছোট করে দিতে পারে।
রহস্য সত্য-৬ : যৌনাঙ্গের আকার: যৌন সঙ্গমে কোন কোন নারীর জন্য লিঙ্গের আকৃতি বিশেষ ভূমিকা রাখে। ২০১২ সালে সেক্সচুয়াল মেডিসিন জার্নালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী যৌন সঙ্গমে অধিক উত্তেজনা অনুভব করে তাদের জন্য বড় পুরুষাঙ্গ যোনির উত্তেজনায় অধিক আনন্দ দিতে করিৎকর্মা। যদিও এটা পরিস্কার নয় যে, প্রকৃতপক্ষে কেন দীর্ঘ লিঙ্গ নারীদের আনন্দ দেয়-ইউনিভার্সিটি অব দ্য ওয়েস্ট অব স্কটল্যান্ডের মনোবিঞ্জানী ও এই গবেষণাপত্রের সহকারী স্টুয়ার্ট ব্রোডি গবেষণার সময় তথ্য জানান। ২০১৩ সালে ন্যাশনাল অ্যাকাডেমী অব সায়েন্সের এক গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, নারীদের পছন্দের আদর্শ পুরুষাঙ্গ হচ্ছে তার দৈহিক উচ্চতা ও লম্বা পুরুষের জন্য দেহের সাথে সামঞ্জস্য দীর্ঘ লিঙ্গ আকর্ষণীয়।

রহস্য সত্য-৫: ব্যতিক্রম লিঙ্গ: কদাচিৎ কেউ দুইটা লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নেয়। ৫ লক্ষ বা ৬ লক্ষে এমন এমন একটা হতে পারে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হচ্ছে এর দ্বারা দ্বিগুণ যৌন আনন্দ লাভ সম্ভব নয়। দুইটি লিঙ্গ একই সাথে কর্মক্ষম থাকতে পারেনা বরং এর ফলে কিছু শারীরিক বৈসাদৃশ্য দেখা দেয় যা ঠিক করতে অস্ত্রপাচারের প্রয়োজন হতে পারে। যেসব পুরুষ দুইটি লিঙ্গ নিয়ে জন্মায় তারা এক ধরনের বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হন। তা হলো তাদের কোন একটি লিঙ্গ উত্থিত হলে তা প্রশমিত হতে চার ঘন্টা পর্যন্ত সময় নিতে পারে। এই অবস্থাকে প্রিয়াপ্রিজম (priapism) বলে। সাধারনত: এটা ঘটে শরীরের রক্ত লিঙ্গ থেকে আবার সারা শরীরে ফিরে যাওয়ার জন্য। যদিও এটা রক্তস্বল্পতায় ভোগা রোগীদের ক্ষেত্রে বেশী পরিলক্ষিত হয়। এটা একটা জরুরী শারীরিক সমস্যা যা লিঙ্গে মাংসপেশীর চাপের কারণে হয়। এর জন্য দ্রুত চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।

রহস্য সত্য-৪: লিঙ্গের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন: পুরুষাঙ্গের বিবর্তনের এক ভয়ঙ্কর অতীত আছে। একসময় পুরুষাঙ্গে মেরুদন্ড বা হাড় ছিল। কিন্তু মানুষ জাতির পুর্বপুরুষেরা তাদের এই কন্টকাকীর্ন অঙ্গটি হারায়। ২০১০ সালের নেচার জার্নালের এক গবেষণা মতে, প্রায় ৭০০ হাজার বছর পূর্বে প্রস্তরযুগ ও আধুনিক মানুষের বিবর্তনের কোন এক সময় তারা এই হাড়যুক্ত লিঙ্গটি হারায়। বিজ্ঞানীরা এখনও পরিস্কার নয় আসলে লিঙ্গের এই হাড়ের কাজটা কি ছিল। কেউ কেউ বলছেন তখন তারা যথেচ্ছা যৌনাচার করতো যেমনটা দেখা যায় ইতর প্রাণীদের মধ্যে। যেমন বিড়ালের হাড়ে লিঙ্গ আছে (টমক্যাটের লিঙ্গে ভয়ঙ্কর মেরুদন্ড বিদ্যমান। বেশির ভাগ প্রাণীরই মেরুদন্ডের হাড়ের সাথে লিঙ্গের সংযোগ থাকে এটাকে হাড় লিঙ্গ বলে। এটা তাদের দৈহিক গঠনগত কারণে তার সঙ্গীর সাথে মিলনে সহায়তা করে। কিন্তু মানুষ তার অঙ্গটি হারায় এবং যৌন সঙ্গমে লিঙ্গদন্ড প্রস্তুত হওয়ার জন্য শরীরের রক্তচাপের উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু অন্য প্রাণীদের জন্য এই হাড়টি শরীরের ভিতর থাকে ও এবং মিলনের সময় পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে লিঙ্গকে শক্ত রাখে। এটা একটা রহস্য যে মানুষ কেন তার সেই হাড়টি হারাল। কিন্তু জীববিঞ্জানী রিচার্ড ডাউকিনস বলেন, এটা মানুষ জাতির শারীরিক ও মানসিক গঠনগত কারনে হয়েছে।

রহস্য সত্য-৩: রাতে লিঙ্গের স্বকীয়তা : স্বীকার করুন আর না করুন অবিবাহিত পুরুষদের লিঙ্গ দিনের চেয়ে রাতে বেশি সক্রিয় হয়ে উঠে। বেশির ভাগ পুরুষেরই রাতে তিন থেকে পাঁচ বার লিঙ্গ সজাগ হয় যখন সে কোন রোমান্টিক স্বপ্ন দেখে। রাতে লিঙ্গের এই কার্যকারিতা লিঙ্গকে স্থিতিস্থাপকতা ও কুচে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। কারণ এটা একটা শারীরিক কার্যকারিতা এজন্য অনেক ডাক্তার রোগীকে রাতের লিঙ্গের উত্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে যে কোন সমস্যা আছে কিনা।

রহস্য সত্য-২: লিঙ্গাগ্রের চামড়া রহস্য: যখন কোন ছেলে শিশু জন্ম নেয় তখন তার লিঙ্গের আগার চামড়া টুকু তার লিঙ্গকে বহিরাঘাত থেকে রক্ষা করে। তার লিঙ্গের অগ্র চামড়াটুকু মায়ের গর্ভে থাকাকালীন তার লিঙ্গের টিস্যু থেকেই আবৃত হয়। লিঙ্গের অগ্রচামড়ার ভিতরের অংশটুকু আমাদের চোখ ও মুখের লালার মত একপ্রকার তরল দিয়ে ভরা থাকে যাতে শুকিয়ে না যায়।
রহস্য সত্য-১: যার জন্য যা প্রযোজ্য: আসলে মানুষ জন্মগতভাবে যেসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে জন্মায় তা তার শরীরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ছোট লিঙ্গ বা বড় লিঙ্গ কোন বিষয় নয়। এটা পুরোটাই মানসিক বিষয়। তাই জন্মগতভাবে যা নিয়ে জন্মেছি তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা। তবে কখনই যৌন রোগে লজ্জ্বা পাওয়া ঠিক নয়। কেননা এটা অনেক সময় আমাদের শিশুদের জীবনের ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে। তাই যৌনরোগ থেকে সাবধান থাকা।
 
Top