ছবিটার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে তুর্য। এত মায়াময় চাহনী কেমন করে হয়? চেহারায় কোন হাসির চিহ্ন নেই তবুও যেন দেখলেই মনে হয় মুচকী করে হেসে আছে।কি গভীর দৃষ্টি। প্রথম দেখায় যেন অন্য
রকম একটা মায়া অনুভুত হয়।মনে মনে ভাবতে থাকে তূর্য-‘মেয়ে কি এমন আছে তোমার মাঝে ? শুধু কাছেই টানছো...’
সকালে নাস্তার টেবিলে যখন নাকে মুখে কোন রকম খাবার দিয়ে বাইরে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো ঠিক ওই সময়ই কোন কথা নেই বার্তা নেই তূর্যর মা ছেলের সামনে ছবিটা রেখেই বলা শুরু করলেন
-মেয়েটির নাম অতপীয়া। ইন্টার্নী করছে।ঢাকায় সেটেলটড।ওরা দুই বোন, অতপীয়া ছোট। আমার খুব পছন্দ হয়েছে ।এখন তুই বললেই আগাবো।
কিছু্ক্ষন থেমে আবার বলা শুরু করেন।
-দেখ বাবা তুই দেশে আছিস আর মাত্র ১ টা মাস। দেশে বেড়াতে এসেও শুধু কাজ কাজ করিস। আর এবার চলে গেলে আবার কবে না কবে আসবি কে জানে। আমার কি ইচ্ছা হয় না বউ নাতি নাতনি তে ঘরটা ভরে উঠুক।কত কাল আর একা থাকবো বল। একা একা আর ইচ্ছে হয় না থাকতে বাবা। এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে চোখ মুছতে মুছতে রান্না ঘরের দিকে চলে যান।
আচমকা এমন পরিস্থিতিতে কি করবে কি বলবে বুঝে উঠতে পারেনা তুর্য। মায়ের উপর খানিকটা বিরক্তও হয়। মা টা যে কি!! এত কান্না করতে পারেনা !! সুন্দর করে বললেই তো হয়। ছবিটার দিকে এক নজর চোখ বুলিয়ে নাস্তার শেষ অংশটুকু মুখে পুরে বের হয়ে যায় ।
রাতে অফিস থেকে ফিরে নিজের রুমে যখন তূর্য বিশ্রাম নিচ্ছিল এমন সময় তার মা মাথার কাছে বসে জিগেস করে
-কিছু বললিনা যে?
-কি বলবো মা? অবাক হয়ে জানতে চায় তুর্য।
-কি বলবো মানে? ছবিটা দিলাম কেন তোকে? দেখ বাবা এবার একটু কাজের চিন্তা মাথা থেকে বের করে নিজেকে নিয়ে চিন্তা কর। তোর এই ছাড়াছাড়া জীবন আমার আর ভালো লাগেনা। রাগন্বিত কন্ঠে কথাগুলো বলতে থাকেন।
-মা আমাকে কয়েকটা দিন সময় দাও প্লিজ।
-ঠিক আছে সময় নিবি নে। তবে এইবার তোকে বিয়ে না করিয়ে যেতে দিচ্ছিনা মনে রাখিস।
কিছুক্ষন চুপ থেকে... এই যে রাখ অতপীয়ার ফোন নাম্বার। ইচ্ছা হলে তার সাথে কথাও বলতে পারিস। নাম্বারের কাগজটা তুর্যর হাতে গু্জে দিয়ে তিনি রুম থেকে বের হয়ে যান।
অবাক হয়ে যায় তূর্য। নাম্বরও নেয়া হয়ে গেছে! বাহ ! আসলে মা যতই কথায় কথায় কান্না কাটি করুক বুদ্ধির দিক থেকে সেরা আমার মা মানতেই হবে।
রাত প্রায় ১২টা। ফোন হাতে নিয়ে তূ্র্য ভাবতে থাকে মেয়েটাকে কল দিবে নাকি না। একবার ডায়াল করছে তো পরোক্ষনে আবার কেটে দিচ্ছে। একবার রিং দিতে ইচ্ছে করছে তো আবার ইচ্ছেও করছেনা। কল দিলেও বা কি বলবে বুঝে উঠতে পারেনা সে । আর এত রাতে ফোন দিলে সে যদি রাগ হয় কিংবা খারাপ ভাবে।
মাথা থেকে সব ঝেরে ঝুড়ে ফোন দিয়েই ফেলে। একবার দুবার তিনবার......রিং হয়েই যাচ্ছে... কেও রিসিভ করছে না দেখে ঝটপট ফোন কেটে দেয় সে।
কিছু্ক্ষন পর সেই নাম্বার থেকে কল ব্যাক আসছে দেখে ঘাবড়ে যায় সে। নিশ্চয় ঝারি খেতে হবে।ভয়ে ভয়ে ফোন রিসিভ করা মাত্রই...
-আমি খুব দুঃখিত আপনার ফোন রিসিভ করতে না পারায়। নিশ্চয় রাগ করেন নি ? খুব মোলায়েম স্বরে বিনীতভাবে বলে অতপীয়া।
তূর্য খুব বেশি অবাক হয়ে যায় মেয়েটার এমন কথায়। সে কি তাকে চিনেছে নাকি না চিনেই এমন রিঅ্যাক্ট করছে বুঝতে পারছেনা। কিন্তু তার কথা বলার ধরন মুহুর্তেই তূর্যকে এতটাই আচ্ছন্ন করে ফেলে যে কোন মতেই সে আর কথাই বলতে পারছিলোনা । ভীষন রকমের মুগ্ধতা তাকে ঘিরে ফেলে। এত সুন্দর করে কেও কথা বলতে পারে ? কি করে কারও কন্ঠস্বর এতটা সুন্দর হয় !! ভাবতে থাকে সে।
-হ্যলো... হ্যালো... শুনতে পাচ্ছেন? অতপীয়ার কথায় বাস্তবে ফিরে আসে তূর্য।
-জী। শুনতে পাচ্ছি বলুন ।
-রাগ করার কথা তো বললেন না? ফোন রিসিভ করতে পারিনি বলে রাগ করেছেন ? আমি আসলে ফোনের পাশেই ছিলাম না তাই আর কি। জানেন এই ফোন রিসিভ করা নিয়ে কত যে বকা খেয়েছি। সবার এক কথা ফোন না ধরলে ফোন ইউজ করছি কেন !! ফেলে দিলেই পারি।কিছুক্ষন থেমে আবারও বলা শুরু করে সে। কেও বুঝে না যে ইচ্ছা করে তো আর কেও ফোন না রিসিভ করে থাকে না তাই না? ওহ আমি খুব বেশি বক বক করছি । আপনাকে কথা বলারই সুযোগ দিচ্ছিনা। স্যরি... স্যরি...
-না না ঠিক আছে। সমস্যা নেই আপনি বলুন।
অনর্গল কথা বলে যায় অতপীয়া আর মন্ত্র মুগ্ধের মত শুনতে থাকে তূর্য। কি করে প্রথম কথায় এতটা স্বাভাবিক ভাবে নিজেকে মেলে ধরলো? কি করেই বা বাঁধাহীন ভাবে কথা বলে যাচ্ছে? নাহ বলতেই হচ্ছে মেয়েটার সাথে যেই কথা বলবে তার মাঝে অবশ্যই ভালো লাগা ছুয়ে যাবে। তূর্যর সবসময়ই চেয়েছিলো তার জীবনে যে আসবে সে যেন অনেক বেশি কথা বলে আর অনেক চঞ্চল হয়। অন্তত নিজের মত এতটা চুপচাপ না হয়। অতপীয়া হয়েছেও এক দম মনের মত। এক রাতেই যেন ভালোবাসাটা অনেক বেশি গভীর হয়ে যায় তূর্যর।
এই তূর্য এইইইইইই... কত ঘুমাবি আর... মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে তূর্যর। আয় না... নিচে আয় নাস্তা খেতে।
নাস্তার টেবিলে নাস্তা খেতে খেতে তূর্যর মা আমতা আমতা করে আবারও বলা শুরু করেন,
-তুই তো আমাকে এখনও কিছুই জানালি না বাবা । মেয়ের মা তো বার বারই ফোন করছে । আমি একবার এইটা আবার ঐটা বলে বুঝ দিচ্ছি। ফাইনালি কিছু তো বলতে হবে তাই না?
-মা কেন এতটা পাগল হয়েছো বলতো? কিছুটা দিন তো সময় দাও। এরপর আমি হ্যা বা না কিছু জানাবো তোমাকে।
-আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে বাবা। সময় নিবি নে ।এই ক'দিনের মধ্যে আমিও তোকে আর জালাবোনা যা। তবে বাবা এইবার তোকে বিয়ে না করিয়ে যেতে দেবো না মনে রাখিস।
মুচকী হেসে চলে যান তূর্যর মা।
--------------------------
শুরু হয়ে যায় তাদের কথার মালা বোনা। কথায় কথায় সময় চলে যেতে থাকে। অফিসে গেলে ফোন দিয়ে খোজ নেয়া বাসায় ফেরার সাথে সাথে ফোন করা, নাস্তা খেয়েছে কিনা, সব কিছুই যেন দু তিন দিনেই মেয়েটা আয়ত্ত্বে নিয়ে ফেলে। আর মেয়েটার এই অনর্গল বক বক শোনার জন্য যেন তূ্র্য প্রতিটাক্ষন অস্থির হয়ে থাকে। সে তার মাকে জানিয়ে দেয় তার মনের কথা।
দুজনের মাঝে অনেক ব্যবধান থাকলেও প্রতিটা মুহুর্তই তূর্যর মনে হত অতপীয়া যেন তার খুব কাছাকাছিই আছে। কখনও মোবাইলে কখনও ফেইসবুকে অবিরত কথা চলতেই থাকে তাদের মধ্যে। যেন কোন ক্লান্তি নেই, নেই কোন বাঁধা।
তূর্য নিজেও বুঝতে পারেনা অল্প কটা দিনেই কখন কিভাবে এই মেয়েটি তার প্রতিটা ক্ষনের একটা অংশ হয়ে গেছে। যেন তার প্রতি মুহুর্তেই ভেসে উঠে অতপীয়ার হাসি মাখা সেই মিষ্টি মুখের প্রতিচ্ছবি। মাঝে মাঝে ভীষন অবাক লাগে আর ভাবে যে কিনা জীবনের একটা বড় অংশ দেশের বাইরে কাটিয়েছে এবং সেখানে স্বাধীন জীবন পেয়েও কখনই সেই স্বাধীনতার সাগরে গা ভাসিয়ে দেয় নি। আর কত শত রকমের মেয়ে তার জীবনের সাথে তাদের বাঁধতে চেয়েছিলো অথচ সব সময়ই সে এই সব কিছুই এড়িয়ে গেছে। আর এখন এই মেয়েটা যেন কয়েকটা দিনেই খুব বেশি আপন করে নিয়েছে। এতটাই আপন করে ফেলেছে যে একটা মুহুর্তও সে অতপীয়াকে তার ভাবনা থেকে দূরে সরাতে পারেনা।
''সারা দিন তোমায় ভেবে...হলোনা আমার কোন কাজ
হলোনা তোমাকে পাওয়া...দিন যে বৃথাই গেল আজ,
সারাদিন গাছের ছায়ায়...উদাসী দুপুর কেটেছে
যা শুনে ভেবেছি এসেছো...সে শুধু পাতারই আওয়াজ
সারাদিন তোমায় ভেবে...
হাওয়ারা হঠাত এসে জানালো...তুমি তো আমার কাছে আসবেনা...
এক হৃদয় হয়ে ভাসবেনা...তবে কি একাই থাকবো?
তবে কি আমার কেও নেই...
সারাদিন তোমায় ভেবে... !!! "
-আরিবাবাহ আপনি তো ভালোই গান করতে পারেন।
-এইতো একটু আধটু... মুচকী হেসে জবাব দেয় তূর্য।
-ভীষন সুন্দর হয়েছে। গানটা যে আমার খুব বেশি প্রিয় জানেন...?
হঠাত করেই গম্ভীর হয়ে যায় অতপীয়া।বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে কোন রকম ভনিতা ছাড়া হঠাত করেই কাল দেখা করার কথা বলে ফেলে । আচমকা এমন কথায় চমকে গেলেও বুঝতে দেয় না তূর্য। তবে ফোন রেখে দেওয়ার পর ভাবনাগুলো যেন ঘিরে ফেলে তাকে। কি এমন হল, কেন দেখা করার কথা বলল, আর কেনই বা হাসি হাসি কথা বার্তা থেকে হুট করেই অনেক বেশি ঠান্ডা হয়ে গেলো সে...কিছুই বুঝে উঠতে পারেনা।
পরদিন...
অফিসে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে এক রকম ছুটে যায় সে । এক গুচ্ছ হোয়াইট গ্ল্যাডিওলাস ফুল কিনে নিয়ে হাজির হয় মনের মানুষকে দিবে বলে..কারন সে জেনেছিলো এই ফুলটা নাকি তাকে একেবারে পাগল করে দেয়। আজ সেই মানুষটার সাথে দেখা হবে যার সাথে কিনা গত ৭ দিন অবিরাম কথার বন্যায় ভেসে গিয়েছিলো সে। এক রকম অনুভূতি কাজ করতে থাকে। সে নিজেও বুঝতে পারেনা কেন এমন অদ্ভুত ধরনের অনুভুতি হচ্ছে। আজ তূর্যর কাছে মনে হয় সেই যেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখীদের একজন।
কিন্তু ১০ মিনিট আগেও তূর্য কখনই ভাবেনি যে এমন একটি দিন তার জন্য অপেক্ষ করছে। অতপীয়ার মুখোমুখি হতেই সে জানিয়ে দেয় তার জীবনের কিছু বাস্তবতা। জানিয়ে দেয় তার কিছু চাওয়া পাওয়ার কথা। জানিয়ে দেয় তার ব্যর্থতার কথা। কিছু পারা না পারার কথা। কিছু পেয়েও হারিয়ে ফেলার কথা।
সব শুনে তূর্য যেন পুরোটাই পাথর হয়ে যায়। ফুলের গুচ্ছটা বেঞ্চের উপর রেখে সে একা একাই হাটতে থাকে কিছু কষ্টকে বু্কের ভেতর আগলে রেখে। ক্ষনে ক্ষনে শুধু চোখ ঝপসা হয়ে আসে তার। ভাবতে থাকে কেন এমন কিছু হল তার জীবনে! কেন এমন কঠিন সময়ের মুখোমুখী হতে হল তাকে। যে মানুষটাকে অল্প ক দিনেই পাগলের মত ভালোবেসেছিলো সেই মানুষটাই............
নাহ আর ভাবতে পারেনা সে।বাসায় ফিরেই সে তার সিদ্ধন্তের কথা মা কে জানিয়ে দেয়। কোন প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে সে তার রুমে চলে যায়...
রাত ২ টা। এয়ারপোর্টে বসে আছে তূর্য। আর কিছুক্ষন পরই সে রওয়ানা দিবে প্রিয় দেশ কে ছেড়ে, কিছু প্রিয় মানুষকে একলা করে দিয়ে। অতপীয়ার কথা মনে আসতে অজান্তেই বুকটা যেন ডুকরে কেঁদে উঠে। মেনে নিতে পারছে না কিছু্তেই তার মুখের সেই কঠিন কঠিন কথা গুলো। কোনভাবেই যেন ভুলতে পারছেনা কঠিন কিছু সত্যকে...অনেক কিছু ভেবে সে তার নোট প্যাড খুলে বসে।ফেইসবুক ওপেন করে অতপীয়ার কাছে লিখতে শুরু করে শেষবারের মত দেয়া এস এম এস...
'আমি ভালোবেসেছিলাম আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল সেই তারাটিকে। যেই তারাটি মিট মিট করে আলো দিয়ে সবার মাঝে নিজের উপস্থিতি জানান দিত। ভালোবেসেছিলাম সেই সময়টিকে যে সময়গুলোকে কখনই আর ফিরে আসবেনা। নিজের মাঝেই লু্কিয়ে রেখেছিলাম একান্তই নিজের কিছু মুহুর্তকে। ভেবেছিলাম সেই ক্ষনগুলোকে আজীবন আগলে রাখবো খুব যতন করে। কিন্তু...
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারিনি যখন শুনেছি তোমার প্রিয় মানুষই তোমার সাথে প্রতারনা করেছে। অবাক হয়ে তাকিয়েছিলাম যখন দেখেছি প্রিয় মানুষটাকে হারানোয় তোমার চোখের কোনে পানি জমে চিক চিক করছিলো। নাহ কষ্ট পাইনি।বিশ্বাস কর একদমই কষ্ট পাইনি। কারন তখন মনে হয়েছিলো "তুমি তো আমার। একান্তই আমার...।" আর বেশ মগ্ধ হয়েছিলাম তোমার রঙহীণ কান্না দেখে।
তবে জানো যখন তুমি অবলীলায় বলে যাচ্ছিলে সেই ছেলেটির সাথে তোমার ফিজিকেল রিলশনের কথা তখনও কেন জানি তোমার প্রতি আমার ভালোবাসাটা ঠিক আগের মতই ছিলো। বিন্দু পরিমান দূরে সরাতে পারছিলাম না তোমাকে। কিন্তু আসলে কি জানো? সৃষ্টিকর্তা কিছু কিছু মানুষকে শুধুমাত্র ভালোবাসতেই পাঠিয়েছেন ভালোবাসা পেতে নয়... তোমার মনের মানুষ সব ভুল স্বীকার করায় তুমি আবারও তার কাছে ফিরে যেতে চেয়েছো। কি করে তোমায় আটকে রাখি বল???
সত্যি বলছি তোমাকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম এক বুক ভালোবাসা দিয়ে । চেয়েছিলাম এই মুহুর্তটাকে দুঃস্বপ্ন ভেবে উড়িয়ে দিতে। ভেবেছিলাম তোমার ফোনের শব্দে ঘুম থেকে জেগে এলোমেলো সময়গুলো দূরে ঠেলে দেবো । তখন খুব বেশি মনে হচ্ছিলো কেন অতিমানব হলাম না। যাতে কোন কষ্টই আমাকে ছুতে না পারে । কেন সমস্ত কষ্ট কে উড়িয়ে দিতে পারছিনা দিগন্তের ওপারে !
ফিরিয়ে নিলাম তোমার কাছ থেকে আমার এই আমিকে। কষ্ট পেলেও নিজেকে সান্তনা দেবো এই ভেবে যে অতপীয়া নামের কেও একজনের আগমনে আমার জীবনটা কিছু সময়ের জন্য হলেও অনেক বেশি পুলোকিত হয়েছিলো...রোবটের মত মানুষটা ভালোবাসতে শিখেছে।পাগলের মত ভালোবেসেছিলো কোন এক হারিয়ে যাওয়া মানুষকে...
ভালো থেকো তুমি... খুব বেশি ভালো থেকো..."
মেসেজটা সেন্ড করেই অতপীয়া নামক আইডীটা চলে যায় ব্লক লিস্টে। আর তূর্য নামের আইডিটাও ডিএকটিভ হয়ে যায়। কত কাল নিজেকে সব কিছু থেকে সরিয়ে রাখবে তা তূর্য নিজেও জানেনা !
এয়ারপোর্টের আর সবাইকে জানান দিয়ে ভেসে আসে সেই কন্ঠস্বর 'এমিরেটস এয়ারলাইন্স এর যাত্রী বৃন্দ আর কিছুক্ষনের মধ্যেই.....'
চোখের নোনা জল আড়াল করে কিছু খন্ড খন্ড সুখ স্মৃতিকে বুকের ভেতর জমা করে ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে প্লেনের দিকে...
অতঃপর গল্পের মত করে লিখা হয় একেকটা লেখা !! কল্পনার আড়ালে লুকিয়ে থাকে কিছু বাস্তবতা... কিছু গল্পের হয় সুন্দর পরিসমাপ্তি আবার কিছু গল্পে গেঁথে থাকে কাউকে কাছে পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা কিংবা প্রিয়জন হারিয়ে যাওয়ার অসহ্যকর অনুভুতি। তবুও থেমে থাকে না কারও জীবন। থেমে নেই কারও পথচলা। অনন্তহীন পথে সময়কে সাথে নিয়েই হেটে চলেছে
ক্লান্তহীন পথিক... যাত্রাবিহীন এই পথ চলা চলতেই থাকবে...!!