-কিরে....!তুই এই কাজটা কেন করলি?
=কানে হেডফোন লাগাই হাটতেছিস,ডাক দিলে কি শুনতি নাকি?
-শুনতাম কি শুনতাম না এটা পরে,আগে ডাক দিয়ে দেখবি তো।
=যা করছি ভাল করছি।পারলে এইগুলা গিলে ফেল।
-তা তুই এখানে কেন?
=কেন?এই এলাকাতে শুধু তুই থাকবি নাকি?
-এত চটাং চটাং করে কথা বলিস না তো।আমি বলতিছি এটা কাদের বাসা?
=যার হবে হোক,তাতে তোর কি?
-আচ্ছা বাদ দে।আমাকে ডাকলি কেন বল?
=আমি তুরে ডাকলাম কখন?
-মানে?তুই না আমার গায়ে থু থু মারলি?
=থু থু মারছি,ডাকি নাই।আপনার কিছু বলার থাকলে বলতে পারেন,বলার না থাকলে সামনে হাটা ধরেন।
এমন কথা শোনার পর রাগ সামলানো কঠিন।দোতলার ব্যালকনি থেকে থু থু মারবে আবার ভাবও নিবে।আমি কিছু না বলে হাটা ধরলাম।মনে করেছিলাম পিছন থেকে বোধহয় ডাক দিবে।কিন্তু না,কোন ডাক শোনা গেল না।
টিউশনির জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলাম।হেডফোন লাগিয়ে হাটতে যাওয়াটাই ভুল হয়েছে।নাহলে আজকে অরুর থু থু গায়ে লাগত না।
আচ্ছা এখনও তো কারও পরিচয়টাও দেয়া হল না।আমি অভি।আর এত্ক্ষণ যার সাথে কথা হচ্ছিল তার নাম অরু।কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের মাঝামাঝি সময়টাতে ওর সাথে পরিচয় হয়।অরুর সাথে পরিচয় হওয়ার আগে আমি নিজেকে অনেক বড় ফাজিল মনে করতাম।শুরুর দিকে ওকে শান্ত স্বভাবের মনে হয়েছিল।পরে দেখি মেয়ে ফাজলামিতে আমার চেয়ে এক ডিগ্রী উপরে আছে।
মেয়েটা আমার সাথে এমন সব কান্ড করে যেগুলো খুব রাগ লাগে।ওর কোন কাজকর্ম আমি কখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারি না।কখনো মনে হয় মেয়েটা আমাকে ভালবাসে,কখনো মনে হয় আমাকে দুচোখে দেখতে পারেনা।কিন্তু সমস্যাটা ওকে নিয়ে না,সমস্যাটা আমার।অনিচ্ছাসত্ত্বেও ওকে আমার বারবার মনে পড়ে,মায়াবী মুখের কোমল হাসিটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে।এটা এমন না যে,আমি নিজের ফিলিংস নিজে বুঝিনা।কিন্তু স্বভাবসুলভ আমি সবকিছুই এক চামচ বেশি বুঝিতো,তাই এটাকে ইনফেচুয়েশন মনে করে ভাবনাগুলোকে একপাশে সরিয়ে রাখি।
এমন মোহ,ভালবাসা বিষয়ক আজেবাজে চিন্তা করতে করতে হাটছি।হঠাত্ আবার অরুর ডাক শুনে পিছন ফিরে তাকালাম।ফাজিলনীটা রিক্সায় বসে গা জ্বালানো মুচকি হাসি দিচ্ছে।
-আবার কি হইছে?তখন তো ব্যালকনি থেকে থু থু মারছিলি,এবার রিক্সা থেকে মারবি নাকি?
=একবারে স্বাদ মিটে গেছে।এখন নতুন কোন আইডিয়া খুজতিছি।
-এই এলাকাতে একটা পাগল আছে,এর্ও তোর মত থু থু মারার অভ্যাস।অনেক সময় লুঙ্গি মাথার উপর তুলে ফেলে।
=আচ্ছা অনেক হইছে।এবার রিক্সায় উঠ।
-আমার টিউশনি আছে।
=লাথি মারি তোর টিউশনির।এখন রিক্সায় উঠ বলতিছি।না উঠলে তোর ইজ্জত এখানেই লুট করব।
আমি আর কোন কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ রিক্সায় উঠে বসলাম।আর তখনই শুরু হয়ে গেল তার এলোপাতাড়ি বকবকানি।মেয়েরা যে খুব কথা বলতে পারে,তা নিউটনের সূত্রের মতই ধ্রুব সত্য,কথাটা আমার খুব ভাল করেই জানা আছে।কিন্তু অরুর বকবকানির মাত্রাটা বাড়াবাড়ি রকমের যা কারও মাথা ধরানোর জন্য যথেষ্ট।তবুও ওর পাশে বসে থাকতে ভালই লাগছে আর এই মুহূর্তে কেন জানি ওর হাতটা ধরতে খুব ইচ্ছা করছে।
=কিরে,তুই এমন চুপ কেন?
-কথা বলার সুযোগ পেলাম কই?
=কথা বলতে আবার সুযোগ লাগবে নাকি?আমি কি তোর মুখ আটকায় রাখছি?
-তোর বকবকানিতে ডিসটার্ব করতে চাচ্ছিলাম না।
=আহারে আমার সাধুরে!ডিসটার্ব করতে চাচ্ছিলাম না!
-আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি?
=আমিও ঠিক জানিনা,আসলে ঘুরতে ইচ্ছে হচ্ছিল,তাই বের হলাম।
-তো আমাকে কি দরকার ছিল?
=একলা ঘুরাঘুরিতে মজা নাই।আর তুই থাকলে তোর সাথে হালকা পাতলা প্রেমও করা যাবে।
-অরু,আমি গরিব মানুষ,প্রেম করার সামর্থ্য নাই।
=ওমরসানি মার্কা ফিল্মী ডায়লাগ মেরে লাভ নাই।বদ কোথাকার।শুধু বদ না,এক নাম্বার ভন্ড।
-আমি আবার কি করলাম?
=তোরে আর হিমু সাজার দরকার নাই,তুই হিমু না।
-কিছুই বুঝলাম না।তোর কেন এরকম মনে হ্ইতেছে?
=তোর এখন আমার হাত ধরতে ইচ্ছে করতেছে কিনা বল।
-করতেই পারে।
=জানতাম তুই এমন কিছুই বলবি।আর মনে করবি এটা সম্পূর্ণ জৈবিক ব্যাপার।কিন্তু আমি জানি তুই আমাকে ভালবাসিস।আর এটাও জেনে রাখ আমিও তোকে অনেক আগে থেকেই ভালবাসি।আর আমার ভালবাসা জৈবিক কিছু না।আমি চিন্তা করে রাখছিলাম আমি নিজে থেকে একথাগুলো বলব না,চাচ্ছিলাম তোর মুখ থেকে আগে ভালবাসার কথাগুলো শুনতে।কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম তোর থেকে এমন কিছু আশা করাটা বৃথা।তাই আজ অনেকটা ঝোকের বশে কথাগুলো বলে ফেললাম।
এতগুলো কথা একসাথে শোনার পর আমি আসলে কি বলব বুঝে উঠতে পারছিলাম না।আমার দীর্ঘদিনের ভাবনার দেওয়ালগুলো মেয়েটা এক নিমেষে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিল।এখন কারও মুখে কোন কথা নেই আর সারাক্ষণ বকবক করা মেয়েটার নীরবতা সহ্য করার মত না।অরু অন্যদিকে ফিরে আছে আর বুঝতে পারলাম ও কাঁদছে।আমি তখন সব রকমের দ্বিধা ভুলে ওর হাতটা ধরলাম।অশ্রুভেজা চোখ আর মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে ও আমার দিকে তাকালো।আমি চেষ্টা করলেও মনে হয় কখনো সেই হাসিটা ভুলতে পারব না।তখন মনে হল জীবনটা সত্যিই সুন্দর আর এই মায়াবীনীকে নিয়ে পথ চলতে খুব একটা কষ্ট হবে না।।
=কানে হেডফোন লাগাই হাটতেছিস,ডাক দিলে কি শুনতি নাকি?
-শুনতাম কি শুনতাম না এটা পরে,আগে ডাক দিয়ে দেখবি তো।
=যা করছি ভাল করছি।পারলে এইগুলা গিলে ফেল।
-তা তুই এখানে কেন?
=কেন?এই এলাকাতে শুধু তুই থাকবি নাকি?
-এত চটাং চটাং করে কথা বলিস না তো।আমি বলতিছি এটা কাদের বাসা?
=যার হবে হোক,তাতে তোর কি?
-আচ্ছা বাদ দে।আমাকে ডাকলি কেন বল?
=আমি তুরে ডাকলাম কখন?
-মানে?তুই না আমার গায়ে থু থু মারলি?
=থু থু মারছি,ডাকি নাই।আপনার কিছু বলার থাকলে বলতে পারেন,বলার না থাকলে সামনে হাটা ধরেন।
এমন কথা শোনার পর রাগ সামলানো কঠিন।দোতলার ব্যালকনি থেকে থু থু মারবে আবার ভাবও নিবে।আমি কিছু না বলে হাটা ধরলাম।মনে করেছিলাম পিছন থেকে বোধহয় ডাক দিবে।কিন্তু না,কোন ডাক শোনা গেল না।
টিউশনির জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলাম।হেডফোন লাগিয়ে হাটতে যাওয়াটাই ভুল হয়েছে।নাহলে আজকে অরুর থু থু গায়ে লাগত না।
আচ্ছা এখনও তো কারও পরিচয়টাও দেয়া হল না।আমি অভি।আর এত্ক্ষণ যার সাথে কথা হচ্ছিল তার নাম অরু।কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের মাঝামাঝি সময়টাতে ওর সাথে পরিচয় হয়।অরুর সাথে পরিচয় হওয়ার আগে আমি নিজেকে অনেক বড় ফাজিল মনে করতাম।শুরুর দিকে ওকে শান্ত স্বভাবের মনে হয়েছিল।পরে দেখি মেয়ে ফাজলামিতে আমার চেয়ে এক ডিগ্রী উপরে আছে।
মেয়েটা আমার সাথে এমন সব কান্ড করে যেগুলো খুব রাগ লাগে।ওর কোন কাজকর্ম আমি কখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারি না।কখনো মনে হয় মেয়েটা আমাকে ভালবাসে,কখনো মনে হয় আমাকে দুচোখে দেখতে পারেনা।কিন্তু সমস্যাটা ওকে নিয়ে না,সমস্যাটা আমার।অনিচ্ছাসত্ত্বেও ওকে আমার বারবার মনে পড়ে,মায়াবী মুখের কোমল হাসিটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে।এটা এমন না যে,আমি নিজের ফিলিংস নিজে বুঝিনা।কিন্তু স্বভাবসুলভ আমি সবকিছুই এক চামচ বেশি বুঝিতো,তাই এটাকে ইনফেচুয়েশন মনে করে ভাবনাগুলোকে একপাশে সরিয়ে রাখি।
এমন মোহ,ভালবাসা বিষয়ক আজেবাজে চিন্তা করতে করতে হাটছি।হঠাত্ আবার অরুর ডাক শুনে পিছন ফিরে তাকালাম।ফাজিলনীটা রিক্সায় বসে গা জ্বালানো মুচকি হাসি দিচ্ছে।
-আবার কি হইছে?তখন তো ব্যালকনি থেকে থু থু মারছিলি,এবার রিক্সা থেকে মারবি নাকি?
=একবারে স্বাদ মিটে গেছে।এখন নতুন কোন আইডিয়া খুজতিছি।
-এই এলাকাতে একটা পাগল আছে,এর্ও তোর মত থু থু মারার অভ্যাস।অনেক সময় লুঙ্গি মাথার উপর তুলে ফেলে।
=আচ্ছা অনেক হইছে।এবার রিক্সায় উঠ।
-আমার টিউশনি আছে।
=লাথি মারি তোর টিউশনির।এখন রিক্সায় উঠ বলতিছি।না উঠলে তোর ইজ্জত এখানেই লুট করব।
আমি আর কোন কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ রিক্সায় উঠে বসলাম।আর তখনই শুরু হয়ে গেল তার এলোপাতাড়ি বকবকানি।মেয়েরা যে খুব কথা বলতে পারে,তা নিউটনের সূত্রের মতই ধ্রুব সত্য,কথাটা আমার খুব ভাল করেই জানা আছে।কিন্তু অরুর বকবকানির মাত্রাটা বাড়াবাড়ি রকমের যা কারও মাথা ধরানোর জন্য যথেষ্ট।তবুও ওর পাশে বসে থাকতে ভালই লাগছে আর এই মুহূর্তে কেন জানি ওর হাতটা ধরতে খুব ইচ্ছা করছে।
=কিরে,তুই এমন চুপ কেন?
-কথা বলার সুযোগ পেলাম কই?
=কথা বলতে আবার সুযোগ লাগবে নাকি?আমি কি তোর মুখ আটকায় রাখছি?
-তোর বকবকানিতে ডিসটার্ব করতে চাচ্ছিলাম না।
=আহারে আমার সাধুরে!ডিসটার্ব করতে চাচ্ছিলাম না!
-আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি?
=আমিও ঠিক জানিনা,আসলে ঘুরতে ইচ্ছে হচ্ছিল,তাই বের হলাম।
-তো আমাকে কি দরকার ছিল?
=একলা ঘুরাঘুরিতে মজা নাই।আর তুই থাকলে তোর সাথে হালকা পাতলা প্রেমও করা যাবে।
-অরু,আমি গরিব মানুষ,প্রেম করার সামর্থ্য নাই।
=ওমরসানি মার্কা ফিল্মী ডায়লাগ মেরে লাভ নাই।বদ কোথাকার।শুধু বদ না,এক নাম্বার ভন্ড।
-আমি আবার কি করলাম?
=তোরে আর হিমু সাজার দরকার নাই,তুই হিমু না।
-কিছুই বুঝলাম না।তোর কেন এরকম মনে হ্ইতেছে?
=তোর এখন আমার হাত ধরতে ইচ্ছে করতেছে কিনা বল।
-করতেই পারে।
=জানতাম তুই এমন কিছুই বলবি।আর মনে করবি এটা সম্পূর্ণ জৈবিক ব্যাপার।কিন্তু আমি জানি তুই আমাকে ভালবাসিস।আর এটাও জেনে রাখ আমিও তোকে অনেক আগে থেকেই ভালবাসি।আর আমার ভালবাসা জৈবিক কিছু না।আমি চিন্তা করে রাখছিলাম আমি নিজে থেকে একথাগুলো বলব না,চাচ্ছিলাম তোর মুখ থেকে আগে ভালবাসার কথাগুলো শুনতে।কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম তোর থেকে এমন কিছু আশা করাটা বৃথা।তাই আজ অনেকটা ঝোকের বশে কথাগুলো বলে ফেললাম।
এতগুলো কথা একসাথে শোনার পর আমি আসলে কি বলব বুঝে উঠতে পারছিলাম না।আমার দীর্ঘদিনের ভাবনার দেওয়ালগুলো মেয়েটা এক নিমেষে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিল।এখন কারও মুখে কোন কথা নেই আর সারাক্ষণ বকবক করা মেয়েটার নীরবতা সহ্য করার মত না।অরু অন্যদিকে ফিরে আছে আর বুঝতে পারলাম ও কাঁদছে।আমি তখন সব রকমের দ্বিধা ভুলে ওর হাতটা ধরলাম।অশ্রুভেজা চোখ আর মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে ও আমার দিকে তাকালো।আমি চেষ্টা করলেও মনে হয় কখনো সেই হাসিটা ভুলতে পারব না।তখন মনে হল জীবনটা সত্যিই সুন্দর আর এই মায়াবীনীকে নিয়ে পথ চলতে খুব একটা কষ্ট হবে না।।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন