আচ্ছা রোজ যে টিচার তোমাকে ক্লসে দেরি করে আসার কারনে গালাগালি করে তোমার ভালো লাগে বুঝি ?আচ্ছা রাতে কর টা কি ? এলাকার নাইটগার্ড এর চাকরি নিছো নাকি ?
প্লিজ কিছু বল চুপ করে আছো কেন ? মানুষের বয় ফ্রেন্ড থাকে বডিগার্ড আর আমার টা নাইটগার্ড ।
আমি জানি এভাবে চিল্লাতে চিল্লাতে একসময় ঠিকই থেমে যাবে ঐশী , তারপর হাত ধরে টানতে টানতে ক্যান্টিন এ নিয়ে এসে বলবে , সকালে তো নাস্তাও কর নাই , কি খাবা বল ?
ঐশী, এমন অদ্ভুত সুন্দর একটা মেয়ে যে কিভাবে আমার প্রেমিকা হয়েছিল দুই বছর আগে তা নিজেও ঠিক বলতে পারবো না ।ভার্সিটির প্রথম দিনেই মেয়েটার সাথে কি তুমুল ঝগড়া বাধল বসা নিয়ে । তারপর কিভাবে যেন বন্ধুত্ব তার পর প্রেম । দেখতে দেখতে দিন গুলো কিভাবে কেটে গেল বুঝতেও পারলাম না ।
সেই ঐশীর আজ বিয়ে

জামাই বিদেশ থাকে , অনেক ডলার ইউরো এর ব্যাপার যা আমার মত মাথা মোটা লোকের পখে বোঝা সম্ভব না । আমি তো শুধু বুঝতাম ভালোবাসতে মন লাগে , পড়ালেখা শেষ করে একটা সাধারন চাকরি লাগে , পাশে আমার ঐশী কে লাগে , আর থাকার জন্য দু কামরারএকটা ঘর লাগে ব্যপার টা খোলাসা করে ঐশী কে কখনো বলা হয় নি। কিন্তু ব্যাপার টা যে তা না , আজ থেকে এক মাস আগে এটা ঐশী আমাকে বলেছে । ভার্সিটির ক্যান্টিন এ বসে ওর অনামিকায় একটা চকচকে পাথর দেখে জিগ্যেস করছিলাম এটা কি পাথর ? তুমি ঠোঁট উলতে বলেছিলা এটা ডায়মন্ড আমার হবু হাজবেন্ড আমাকে দিয়েছে আর সে নাকি বাইরে থাকে এলাহি ব্যাপার সেপার ।
কয়েক মুহূর্তের জন্য জমে বরফ হয়ে গিয়ে ছিলাম ওর কথা তা শুনে ।
অনেক কষ্টে কান্না আটকে বলেছিলাম হুম্ম ভালো তো । তোমার তো লটারি লাগছে ।

তো বিয়ে টা কবে হচ্ছে ? জুলাই এর ২২ তারিখ ।
দেখ সবুজ তোমার কথা আমি আব্বু কে বলে ছিলাম আব্বু আম্মু মেনে নেয় নাই তাই আমার কিছু করার নাই , প্লিজ সোনা কষ্ট পেয়ো না তুমি তো জানো আমি আব্বু আম্মুর কথা ফেলতে পারি না । আমি জানি তুমি আমাকে অত বেশি লাভ ও করতা না আর তাই এটা নিয়ে কষ্ট পেয় না , আমি জানি তোমার জন্য অনেক ভালো একটা মেয়ে অপেক্ষা করছে ।
বরাবরের মতো সেদিন ও তুমি একাই কথা বলে গেলে , আমি আজ ও বরাবরের মতো চুপ করে রইলাম । তুমিই প্রশ্ন করলে তুমিই উত্তর দিলে , আমি নিরব দর্শক ।
শুধু বল্লাম ওকে ঠিক আছে , বিয়ে করছিস দাওয়াত তো দিবি না কি তাও দিবি না ? কিছু না হই এখন সহপাঠি তো ?

তুমি আমাকে তুই বলছ কেন ?তুমি বোলার অধিকার এই মাত্র হারালাম তো তাই । বিয়ে কর তার পর থেকে আপনি বলবো ।
যদি আপনিতেও না হয় তো আপু ডাকবো ,ব্যাগ থেকে একখান বিয়ের কার্ড বের করে আমার সামনে রেখে চলে গেলে কোন কথা বল্লা না আর । আমি ফাঁকা টেবিলে বিয়ের কার্ড হাতে নিয়ে বসে থাকলাম ।
আজ ২২ জুলাই , ঐশীর বিয়ে ভাবছি যাবো কি না বিয়ের দাওয়াত খাইতে ? আচ্ছা বিয়ের দাওয়াত খেতে গেলে আমাকে দেখে ঐশীর কেমন লাগবে ? আচ্ছা বউ সেজে ঐশী কে কি আজ পরির থেকেও ভালো লাগছে ? ঐশী কি আজ আমার জন্য একফোঁটা পানি ও ফেলবে চোখ থেকে ? আচ্ছা ঐশী কি ভাবছে আমি ওর বিয়ে তে যাবো না ? না কি ও আমার জন্য অপেক্ষা করছে । এমন হাজার প্রশ্ন সকাল থেকে মাথার ভিতর ভির করছে ।

কার্ড টা হাতে নিয়ে রাস্তায় বের হলাম , হাঁটছি আজকাল কার্ড ছাড়া অনেক বিয়েতে ঢুকতে দেয় না । ভাবছি জম্পেস একটা খাওয়া দিয়ে, আসার সময় ঐশীর সামনে দাড়িয়ে বলে আসব আপু আপনাকে আজ আসলেই অনেক দারুন লাগছে , আপনার নতুন জীবন সুখের হোক ।
 
Top