Excuse me ভাইয়া আপনি আমাকে পাগল ভাবছেন তাই না? কথায় কথায় excuse me বলা আমার একটা মুদ্রাগুন বলতে পারেন!(একটু হেসে)...... কিছুক্ষন হাসছি আবার কাঁদছি! পাগল ভাবারই কথা। আপনি কি আর ভাববেন, আমার নিজের কাছেই নিজেকে পাগল মনে হয়। এই আমি নিজেও নিজেকে চিনতে পারি না। ভাইয়া সত্যি করে বলেনতো, এরকম হচ্ছে কেন? জানেন ভাইয়া কাল রাতে স্বপ্ন দেখেছি আমার দাদীমা
আমার জন্য একটা সাদা রঙের ট্রেনে আমাকে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে। মানুষ নাকি মরার আগে এই স্বপ্ন দেখে! ভাইয়া আমি কি তাহলে আর বাচবনা? আমি মরে গেলে কোন দুঃখ নেই, কিন্তু রাতুলের কি হবে? ভাইয়া, ওকে আমি অনেক ভালবাসি, অনেক......অনেক ( ফুঁপিয়ে কান্না), কিন্তু ও অনেক নিষ্ঠুর, ভালবাসার মানুষকে কষ্ট দিয়ে সে অদ্ভুত আনন্দ পায়। জানেন,ও আমাকে বকা দিলে ওর মনটা ভাল হয়ে যেত। ও কখনো আমাকে ফোন করে না। যেদিন ওর মন খারাপ থাকে, শুধু সেদিনই ফোন দেয়। আমাকে ইচ্ছেমত বকলেই তার মন ভাল হয়ে যেতো। ভাইয়া বিশ্বাস করেন, শুধু ওর মন ভাল করার জন্য ওর বকা গুলো নিঃশব্দে শুনে যেতাম। আমার নিঃশব্দ কান্নার অশ্রুগুলো কখনই সে টের পেত না। তারপর রাতে যখন ঘুমাতে যেতাম, তখন মনটা ভাল হয়ে যেতো। কারন আমার প্রানপাখির মন তখন ভাল হয়ে গিয়েছে। ভাইয়া,ওকে প্রথম দেখেছিলাম আমার বড় ভাইয়ার সাথে ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে। বড়ভাইয়াসহ বেশ কয়েকজন ব্লাড দিচ্ছিল। ব্লাড দেয়া শেষ হলে দেখি ওদের জন্য কোন পানির ব্যবস্থা নেই। হঠাত একটা ছেলে ব্লাড দেয়া শেষ হতেই দৌড়ে বাইরে চলে গেল। একটুপরই ছেলেটা ২লিটারের একটি কোক নিয়ে আসল। সবাইকে কোক দেয়া শেষ করে আমাকে এক গ্লাস কোক বাড়িয়ে দিয়ে অভদ্রের মত বলল ‘ওই পিচ্চি কোক নাও। ললিপপ আনতে ভুলে গেছি’, বলেই আমার বড়ভাই এর সামনে পিত্তি জালানো হাসি হাসল। আমি তার সাহস দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কিন্তু এক গ্লাস কোক যে আমার অবচেতন মনে ভালবাসার বিষক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে তা তখন টের পাইনি।
ছেলেটি আসলেই বখাটে ছিল। আমাদের উত্তরপাড়ার একদল ছেলে নিয়মিত ইভটিজিং করতো, আর সেই দলের মাথা ছিল সে। শুনেছি, একবার ইভটিজিং এর জন্য কমিশনারের চড় পর্যন্ত খেতে হয়েছিল। তার ইভটিজিং এর হাত থেকে আমার বান্ধুবিরাও রক্ষা পেত না। একদিন সাহস করে নিজেই ওকে এসব না করার জন্য অনুরোধ করলাম। কিন্তু ভাইয়া, বিশ্বাস করুন এরপর থেকে আমাকে দেখলেই চোখ নামিয়ে চুপ হয়ে যেত। কিছুদিন ভালই চলছিল। তারপর আবার শুরু হল, সাথে যোগ হল মারামারি, চাদাবাজি। চূড়ান্ত আঘাত পেলাম যখন শুনলাম, সে নাকি গাঁজার আসরে যোগ দিয়েছে। তার ষোলকলা পূর্ণ হল যখন তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। তখন টের পেলাম ভালবাসা কি জিনিস! আমি যেন অন্য আমি হয়ে গেলাম। ওর বন্ধুদের কাছে শুনলাম, তার বাবা ইচ্ছে করেই ছেলের জামিন নিচ্ছেন না। তার বন্ধুরা বলল, জামিন নিতে ১৫০০০ টাকা লাগবে। আমি ইশরাতের কাছ থেকে ২০০০টাকা ধার নিলাম। বাসায় বললাম আমার মোবাইল কিনব টাকা লাগবে। বাবা কিছুতেই রাজি হল না। এরপর রাগে দুঃখে ব্লেড দিয়ে (হাতের কাটা দাগ দেখিয়ে) হাতের অনেকটা কেটে ফেললাম। শেষ পর্যন্ত ছোট খালামনি আম্মুকে না জানিয়ে ৫৫০০টাকা হাসপাতালে এসে দিয়ে গেলেন। আমি সবমিলিয়ে ৮৬৫০ টাকা ওর বন্ধুদের হাতে দিলাম। ৯দিনের মাথায় ও জামিন পেয়ে বেরুলো। ওই দিনের মত আনন্দের দিন আমার ১৪বছরের জীবনে আর আসেনি। ৩দিন পর শুনলাম ওর বাবাই নাকি জামিন নিয়েছে। আর আমার টাকা দিয়ে তারা নাকি পার্টি দিয়েছে। শুনে মন কিছুটা খারাপ হয়ে গেল। তারপরও ও ছাড়া পাওয়াতে নিজকে সান্ত্বনা দিলাম। এত কিছুর পরও এই মানুষটার প্রতি আমার অবচেতন মনে ঘৃণা তৈরি করতে পারলাম না। ভাইয়া আপনিই বলেন, এতো খারাপ জেনেও মানুষটাকে এতো ভালবাসি কেন? এটাই কি তাহলে ভালবাসার X ফ্যাক্টর? শেষপর্যন্ত তাকে সরাসরি প্রপোজাল দিয়েই দিলাম। একটা নীলখামের ভিতরে ভিউকার্ডে মোবাইল নম্বর দিয়ে¸লিখলাম ‘ভালবাসা নাকি অনেক কিছু বদলে দিতে পারে,তুমি কি দেবে আমায় একটা সুযোগ,তোমাকে বদলে দেবার’ , দুদিনপর দেখা হলে সে প্রমিজ করল আর নেশা করবে না। একমাসেই ও আমুল বদলে গেল। আমার সাদাকালো পৃথিবীটা তখন সত্যিই রঙিন হতে শুরু করল। কিন্তু তার পাজি বন্ধুরা তাকে ভাল থাকতে দিল না। বিশ্বাস করুন ভাইয়া ওর হাত ধরে কত কাদলাম কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। একদিন জোর করাতে আমাকে চড় মেরে বসল। আমি দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি ও এমনটা করবে। আমি চুপচাপ চলে আসলাম। রাতে অনেক কাদলাম কিন্তু ও আমাকে একটা ফোনও করল না। সকালে উঠে ভাবলাম সব ঠিক হয়ে যাবে। এরমধ্যে বাসায় ওর কথা জানাজানি হয়ে গেল। আম্মু আমাকে ইচ্ছামত মারলেন কিন্তু আমি কিছুই বললাম না। নিরবে সহ্য করলাম। তিনদিন পর ওর কলেজে গিয়ে দেখি অন্য একটা মেয়ের হাত ধরে গল্প করছে। ভাইয়া, আমার পৃথিবী যেন অন্ধকার হয়ে আসছিল। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম। কিন্তু ওর সামনে যেতেই ও আমার সাথে এমন ব্যাবহার করল আমি যেন ভিক্ষুক,ওর কাছে কাছে ভিক্ষা চাইতে গেছি। আমি কাদতে কাদতে আমার এক বান্ধুবির বাসায় গেলাম।
ওদের বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরাতে রাতে বাসায় ফিরতে দেরি হয়ে গেল। বাসায় ধরেই নিল আমি খারাপ কিছু করে এসেছি। বাসায় ফিরেই আম্মার চড় খেলাম, ভাইয়ার খোঁচা দেয়া গালি শুনলাম। সব মুখ বুজে সহ্য করলাম। কিন্তু বাবাও যে হাত তুলবেন,তা স্বপ্নেও ভাবিনি। যে বাবা সবসময় আম্মুর মার থেকে বাচাতেন সেই বাবা সবার সামনে আমাকে চড় মারলেন। বিশ্বাস করুন ভাইয়া, আর কোন পথ খোলা ছিল না আমার। এই পৃথিবীতে কেউ নেই আমার্(ডুকরে কেঁদে ) সবাইকে মুক্তি দিয়ে চলে যেতে চাই না ফেরার দেশে...সেখানে অপেক্ষা করবো আমার সত্যিকার রাতুলের জন্য যে রাতুল আমার মতো করে আমাকে ভালবাসবে......
(ইন্টার্ন ডাক্তার হিসাবে কর্মরত থাকাকালীন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিলা নামের চটপটে এই মেয়েটির সাথে আমার পরিচয় হয়।দশমশ্রেণীতে পড়ুয়া নিলা প্রায় ২৫টি নাপা খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর মেয়েটা কিছুটা সুস্থ হয়। তখন ওর কাছে এই কাহিনী শুনি। অদ্ভুত মায়াভরা কাজলচোখা সহজসরল এই মেয়েটাকে দেখলেই যে কারো মনটা ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু তিন দিনের মাথায় সবাইকে কাঁদিয়ে liver failure হয়ে নিলা মারা যায়।মারা যাবার আগের রাতে আমাকে ওর ডাইরিটি দিয়ে বলল,"ভাইয়া আমি মনে হয় আর বাচবনা,ডাইরিটি কষ্ট করে রাতুলকে দিবেন।কাল সকালে রাতুলের মোবাইল নম্বর দিব”।
নিলা রাতুলের নম্বর দিয়ে যেতে পারেনি। ওর ফ্যামিলির কাছে রাতুলের ঠিকানা চাওয়ার সাহস আমার হয়নি। নিলা মারা গেছে প্রায় ২ বছর হল। এখনও মাঝে মাঝে মনে হয় নিলা এসে মিষ্টি হেসে কানে কানে বলছে, excuse me ভাইয়া, আমার স্যালাইনটা কখন খুলবেন। নিলা,তুমি আমায় ক্ষমা কোরো। তোমাকে দেয়া কথা আমি রাখতে পারিনি। তোমার মনের কথাগুলো তোমার ভালবাসার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারিনি। আল্লাহতায়ালা যেন তোমাকে বেহেস্ত নসিব করেন। আমিন।
আমার জন্য একটা সাদা রঙের ট্রেনে আমাকে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে। মানুষ নাকি মরার আগে এই স্বপ্ন দেখে! ভাইয়া আমি কি তাহলে আর বাচবনা? আমি মরে গেলে কোন দুঃখ নেই, কিন্তু রাতুলের কি হবে? ভাইয়া, ওকে আমি অনেক ভালবাসি, অনেক......অনেক ( ফুঁপিয়ে কান্না), কিন্তু ও অনেক নিষ্ঠুর, ভালবাসার মানুষকে কষ্ট দিয়ে সে অদ্ভুত আনন্দ পায়। জানেন,ও আমাকে বকা দিলে ওর মনটা ভাল হয়ে যেত। ও কখনো আমাকে ফোন করে না। যেদিন ওর মন খারাপ থাকে, শুধু সেদিনই ফোন দেয়। আমাকে ইচ্ছেমত বকলেই তার মন ভাল হয়ে যেতো। ভাইয়া বিশ্বাস করেন, শুধু ওর মন ভাল করার জন্য ওর বকা গুলো নিঃশব্দে শুনে যেতাম। আমার নিঃশব্দ কান্নার অশ্রুগুলো কখনই সে টের পেত না। তারপর রাতে যখন ঘুমাতে যেতাম, তখন মনটা ভাল হয়ে যেতো। কারন আমার প্রানপাখির মন তখন ভাল হয়ে গিয়েছে। ভাইয়া,ওকে প্রথম দেখেছিলাম আমার বড় ভাইয়ার সাথে ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে। বড়ভাইয়াসহ বেশ কয়েকজন ব্লাড দিচ্ছিল। ব্লাড দেয়া শেষ হলে দেখি ওদের জন্য কোন পানির ব্যবস্থা নেই। হঠাত একটা ছেলে ব্লাড দেয়া শেষ হতেই দৌড়ে বাইরে চলে গেল। একটুপরই ছেলেটা ২লিটারের একটি কোক নিয়ে আসল। সবাইকে কোক দেয়া শেষ করে আমাকে এক গ্লাস কোক বাড়িয়ে দিয়ে অভদ্রের মত বলল ‘ওই পিচ্চি কোক নাও। ললিপপ আনতে ভুলে গেছি’, বলেই আমার বড়ভাই এর সামনে পিত্তি জালানো হাসি হাসল। আমি তার সাহস দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কিন্তু এক গ্লাস কোক যে আমার অবচেতন মনে ভালবাসার বিষক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে তা তখন টের পাইনি।
ছেলেটি আসলেই বখাটে ছিল। আমাদের উত্তরপাড়ার একদল ছেলে নিয়মিত ইভটিজিং করতো, আর সেই দলের মাথা ছিল সে। শুনেছি, একবার ইভটিজিং এর জন্য কমিশনারের চড় পর্যন্ত খেতে হয়েছিল। তার ইভটিজিং এর হাত থেকে আমার বান্ধুবিরাও রক্ষা পেত না। একদিন সাহস করে নিজেই ওকে এসব না করার জন্য অনুরোধ করলাম। কিন্তু ভাইয়া, বিশ্বাস করুন এরপর থেকে আমাকে দেখলেই চোখ নামিয়ে চুপ হয়ে যেত। কিছুদিন ভালই চলছিল। তারপর আবার শুরু হল, সাথে যোগ হল মারামারি, চাদাবাজি। চূড়ান্ত আঘাত পেলাম যখন শুনলাম, সে নাকি গাঁজার আসরে যোগ দিয়েছে। তার ষোলকলা পূর্ণ হল যখন তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। তখন টের পেলাম ভালবাসা কি জিনিস! আমি যেন অন্য আমি হয়ে গেলাম। ওর বন্ধুদের কাছে শুনলাম, তার বাবা ইচ্ছে করেই ছেলের জামিন নিচ্ছেন না। তার বন্ধুরা বলল, জামিন নিতে ১৫০০০ টাকা লাগবে। আমি ইশরাতের কাছ থেকে ২০০০টাকা ধার নিলাম। বাসায় বললাম আমার মোবাইল কিনব টাকা লাগবে। বাবা কিছুতেই রাজি হল না। এরপর রাগে দুঃখে ব্লেড দিয়ে (হাতের কাটা দাগ দেখিয়ে) হাতের অনেকটা কেটে ফেললাম। শেষ পর্যন্ত ছোট খালামনি আম্মুকে না জানিয়ে ৫৫০০টাকা হাসপাতালে এসে দিয়ে গেলেন। আমি সবমিলিয়ে ৮৬৫০ টাকা ওর বন্ধুদের হাতে দিলাম। ৯দিনের মাথায় ও জামিন পেয়ে বেরুলো। ওই দিনের মত আনন্দের দিন আমার ১৪বছরের জীবনে আর আসেনি। ৩দিন পর শুনলাম ওর বাবাই নাকি জামিন নিয়েছে। আর আমার টাকা দিয়ে তারা নাকি পার্টি দিয়েছে। শুনে মন কিছুটা খারাপ হয়ে গেল। তারপরও ও ছাড়া পাওয়াতে নিজকে সান্ত্বনা দিলাম। এত কিছুর পরও এই মানুষটার প্রতি আমার অবচেতন মনে ঘৃণা তৈরি করতে পারলাম না। ভাইয়া আপনিই বলেন, এতো খারাপ জেনেও মানুষটাকে এতো ভালবাসি কেন? এটাই কি তাহলে ভালবাসার X ফ্যাক্টর? শেষপর্যন্ত তাকে সরাসরি প্রপোজাল দিয়েই দিলাম। একটা নীলখামের ভিতরে ভিউকার্ডে মোবাইল নম্বর দিয়ে¸লিখলাম ‘ভালবাসা নাকি অনেক কিছু বদলে দিতে পারে,তুমি কি দেবে আমায় একটা সুযোগ,তোমাকে বদলে দেবার’ , দুদিনপর দেখা হলে সে প্রমিজ করল আর নেশা করবে না। একমাসেই ও আমুল বদলে গেল। আমার সাদাকালো পৃথিবীটা তখন সত্যিই রঙিন হতে শুরু করল। কিন্তু তার পাজি বন্ধুরা তাকে ভাল থাকতে দিল না। বিশ্বাস করুন ভাইয়া ওর হাত ধরে কত কাদলাম কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। একদিন জোর করাতে আমাকে চড় মেরে বসল। আমি দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি ও এমনটা করবে। আমি চুপচাপ চলে আসলাম। রাতে অনেক কাদলাম কিন্তু ও আমাকে একটা ফোনও করল না। সকালে উঠে ভাবলাম সব ঠিক হয়ে যাবে। এরমধ্যে বাসায় ওর কথা জানাজানি হয়ে গেল। আম্মু আমাকে ইচ্ছামত মারলেন কিন্তু আমি কিছুই বললাম না। নিরবে সহ্য করলাম। তিনদিন পর ওর কলেজে গিয়ে দেখি অন্য একটা মেয়ের হাত ধরে গল্প করছে। ভাইয়া, আমার পৃথিবী যেন অন্ধকার হয়ে আসছিল। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম। কিন্তু ওর সামনে যেতেই ও আমার সাথে এমন ব্যাবহার করল আমি যেন ভিক্ষুক,ওর কাছে কাছে ভিক্ষা চাইতে গেছি। আমি কাদতে কাদতে আমার এক বান্ধুবির বাসায় গেলাম।
ওদের বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরাতে রাতে বাসায় ফিরতে দেরি হয়ে গেল। বাসায় ধরেই নিল আমি খারাপ কিছু করে এসেছি। বাসায় ফিরেই আম্মার চড় খেলাম, ভাইয়ার খোঁচা দেয়া গালি শুনলাম। সব মুখ বুজে সহ্য করলাম। কিন্তু বাবাও যে হাত তুলবেন,তা স্বপ্নেও ভাবিনি। যে বাবা সবসময় আম্মুর মার থেকে বাচাতেন সেই বাবা সবার সামনে আমাকে চড় মারলেন। বিশ্বাস করুন ভাইয়া, আর কোন পথ খোলা ছিল না আমার। এই পৃথিবীতে কেউ নেই আমার্(ডুকরে কেঁদে ) সবাইকে মুক্তি দিয়ে চলে যেতে চাই না ফেরার দেশে...সেখানে অপেক্ষা করবো আমার সত্যিকার রাতুলের জন্য যে রাতুল আমার মতো করে আমাকে ভালবাসবে......
(ইন্টার্ন ডাক্তার হিসাবে কর্মরত থাকাকালীন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিলা নামের চটপটে এই মেয়েটির সাথে আমার পরিচয় হয়।দশমশ্রেণীতে পড়ুয়া নিলা প্রায় ২৫টি নাপা খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর মেয়েটা কিছুটা সুস্থ হয়। তখন ওর কাছে এই কাহিনী শুনি। অদ্ভুত মায়াভরা কাজলচোখা সহজসরল এই মেয়েটাকে দেখলেই যে কারো মনটা ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু তিন দিনের মাথায় সবাইকে কাঁদিয়ে liver failure হয়ে নিলা মারা যায়।মারা যাবার আগের রাতে আমাকে ওর ডাইরিটি দিয়ে বলল,"ভাইয়া আমি মনে হয় আর বাচবনা,ডাইরিটি কষ্ট করে রাতুলকে দিবেন।কাল সকালে রাতুলের মোবাইল নম্বর দিব”।
নিলা রাতুলের নম্বর দিয়ে যেতে পারেনি। ওর ফ্যামিলির কাছে রাতুলের ঠিকানা চাওয়ার সাহস আমার হয়নি। নিলা মারা গেছে প্রায় ২ বছর হল। এখনও মাঝে মাঝে মনে হয় নিলা এসে মিষ্টি হেসে কানে কানে বলছে, excuse me ভাইয়া, আমার স্যালাইনটা কখন খুলবেন। নিলা,তুমি আমায় ক্ষমা কোরো। তোমাকে দেয়া কথা আমি রাখতে পারিনি। তোমার মনের কথাগুলো তোমার ভালবাসার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারিনি। আল্লাহতায়ালা যেন তোমাকে বেহেস্ত নসিব করেন। আমিন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন